বিদেশে চাকরির নামে যুবকদের পাঠানো হতো রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে, চক্রের ‘হোতা’ গ্রেপ্তার
Published: 13th, June 2025 GMT
বিদেশে আকর্ষণীয় বেতনে চকলেট কারখানার কর্মী, পরিচ্ছন্নকর্মী বা বাবুর্চির কাজ দেওয়ার কথা বলে আগ্রহীদের ফাঁদে ফেলা হয়। পরে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করে আসছিল একটি চক্র। চক্রটির এদেশীয় ‘হোতা’ মুহাম্মদ আলমগীর হোছাইনকে গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে এমন তথ্য। তাদের খপ্পরে পড়ে অন্তত একজন যুদ্ধে নিহত এবং একজন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান জানান, আলমগীর হোছাইনকে বৃহস্পতিবার রাতে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডির মানব পাচার প্রতিরোধ শাখা। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর বনানী থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইনে মামলা রয়েছে। সেই মামলায় গতকাল শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সিআইডি জানায়, চক্রের সদস্যরা রাশিয়ায় মাসে দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ১০ জনকে প্রথমে ওমরাহ ভিসায় সৌদি আরব পাঠায়। সেখানে তাদের ওমরাহ হজ করানোর পর রাশিয়ায় নিয়ে গিয়ে এক সুলতানের কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়। সেই সুলতান আবার তাদের দাস হিসেবে রাশিয়ান সৈনিকদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। কেউ যুদ্ধ অংশ নিতে রাজি না হলে তাদের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার মাধ্যমে তাদের দুর্বল করে ফেলা হয়। একপর্যায়ে ভুক্তভোগীরা বাধ্য হয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে রাজি হন। যুদ্ধে নাটোরের সিংড়ার হুমায়ুন কবির নামে একজন নিহত এবং ঢাকার কেরানীগঞ্জের আমিনুল নামে একজন গুরুতর আহত হন। আর রাশিয়ায় পাঠানো ১০ জনের মধ্যে নরসিংদীর পলাশের আকরাম হোসেন প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে পালিয়ে যান। পরবর্তীতে তিনি নিজ ব্যবস্থাপনায় গত ২৬ জানুয়ারি দেশে ফিরে আসেন। এখানে তিনি অন্য ভুক্তভোগীদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তার কাছে তথ্য পেয়ে যুদ্ধাহত আমিনুলের স্ত্রী ঝুমু আক্তার বনানী থানায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি মামলা করেন।
তদন্তকালে সিআইডি জানতে পারে, ১০ জনের আরেকটি দল এখন সৌদি আরবে অবস্থান করছে। যুদ্ধে অংশ নিতে বাধ্য করানোর বিষয়ে জানাজানি হওয়ায় তারা রাশিয়া যেতে রাজি হননি। এ কারণে তাদের পাসপোর্ট কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তাই তারা সৌদি আরবে কোনো কাজ করতে পারছেন না, দেশেও ফিরতে পারছেন না। সিআইডি ভুক্তভোগীদের দেশে ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সেইসঙ্গে মানব পাচারের এই নেটওয়ার্ক পুরোপুরি ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি নিবিড় তদন্ত এবং গ্রেপ্তার প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে।
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাতে নেপালে পালিয়ে যাওয়ার সময় মানব পাচারকারী চক্রের অন্যতম সদস্য ফাবিহা জেরিন তামান্নাকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি। তিনি ড্রিম হোম ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস লিমিটেডের ব্যবসায়িক অংশীদার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র শ য় ইউক র ন য দ ধ ইউক র ন স আইড
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুর আড়াইটার দিকে জেলা শহর রেলগেইট সংলগ্ন এলাকায় দুর্ঘটনার শিকার হন তিনি। তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপ-পরিদর্শক কাউসার আলম জানান, দুপুর ২টার দিকে নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয়। রেলগেটের কাছাকাছি একজন ব্যক্তি এই ট্রেনে কাটা পড়ে নিহত হন।
তিনি আরো জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি। তার পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। মরদেহ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্তের জন্যে পাঠানো হচ্ছে। অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে ট্রেনের ধাক্কায় অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু
ঝিনাইদহে তুচ্ছ কারণে ছুরিকাঘাতে ছোট ভাই নিহত
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ