অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে নীলচক্র দেখতে বলছেন, কী আছে এই সিনেমায়?
Published: 13th, June 2025 GMT
সিনেমা হলে বসে বাবা সন্তানের হাত ধরছেন, এক তরুণী মুছছেন চোখের কোণ, পেছনের সারিতে একজন মা কানে কানে ছেলের সঙ্গে কিছু বলছেন; এমন দৃশ্য এখন দেখা যাচ্ছে ঈদের ‘নীলচক্র’ দেখতে গিয়ে।
দর্শক বলছেন ‘নীলচক্র’ শুধু বিনোদনের সিনেমা নয়, এটা সমাসাময়িক গল্পের এমন একটি সাসপেন্স থ্রিলার যা, এখনকার ইন্টারনেট প্রজন্মকে সচেতন করছে।
এই যেমন বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্স থেকে বের হওয়া এক অভিভাবক ‘নীলচক্র’ সিনেমা দেখে বলছিলেন, ‘আমার মেয়ে মোবাইলে ব্যস্ত থাকে সবসময়, সেটা নিয়ে আমাদের অভিযোগের শেষ নেই। আজ একসঙ্গে আমরা সিনেমাটি উপভোগ করলাম। ইন্টারনেটের একটা ভুল কিভাবে আমাদের জীবন শেষ করে দিতে পারে সেটা দেখলাম। সিনেমা শেষে ও নিজে থেকে আমার কাঁধে মাথা রাখল। কিছু বলার ছিল না,শুধু অনুভব করলাম, ‘নীলচক্র’ আমাদের আরও কাছাকাছি এনে দিল।’
যমুনা ব্লকবাস্টার সিনেমাস ‘নীলচক্র’ দেখে ফেরা একদল তরুণী বলছিলেন, ‘সিনেমাটি দেখে আমার মধ্যে সচেতনতা এসেছে। আমার একটা ব্যক্তিগত ভিডিও কিংবা ছবি আমার পুরো পরিবারকে শেষ করে দিতে পারে সেই ধারণা এলো। সিনেমায় আরিফিন শুভ দারুণ অভিনয় করেছেন, তাঁকে ও পরিচালককে ধন্যবাদ আমাদের দেশে আমার দেশের জন্য দরকারী এমন একটি গল্প নিয়ে সিনেমা করার জন্য।’
একজন মা এসেছিলেন সিনেমাটি দেখতে। তিনি বলছেন, ‘আমি সিনেমাটি দারুণ উপভোগ করেছি। আমাদের সমাজের জন্য খুব দরকারী গল্পের এই সিনেমা। আমার পরিবারে ছেলে ও মেয়ে আছে তরুণ। আমি তাঁদের নিয়ে এই সিনেমাটি আবার দেখব শুধুমাত্র সচেতনার জন্য।’
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসায় ভাসছেন চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। এই সিনেমা প্রসঙ্গে তাঁর ভাষ্য, ‘এই গল্প এখনকার। ইন্টারনেট যুগে একটা অসাবধান ক্লিক পুরো জীবন বদলে দিতে পারে। এটাই দেখানো হয়েছে। সাহসী বলেই করেছি, দরকারি বলেই করেছি। অনেকেই সিনেমাটি প্লট দেখে প্রশংসা করছেন জেনে ভাল লাগছে। অভিভাবক হোন বা তরুণ, যারা অনলাইনে থাকেন, সবারই দেখা উচিত। চোখ বন্ধ রাখলে বিপদ থেমে থাকে না।’
একটা ক্লিক, একটা ভিডিও, আর তাতেই পাল্টে যাচ্ছে জীবনের গতিপথ। শহরজুড়ে ফাঁস হচ্ছে একের পর এক ব্যক্তিগত ভিডিও। অন্ধকার, আতঙ্ক আর টানটান উত্তেজনায় মোড়ানো এক সময়ের গল্প নিয়ে পরিচালক মিঠু খানের ‘নীলচক্র: ব্লু সার্কেল’ এ এবার পর্দায় ফিরছেন আরিফিন শুভ। তাঁর বিপরীতে আছে মন্দিরা চক্রবর্তী।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আর ফ ন শ ভ ঈদ র স ন ম এই স ন ম ন লচক র আম দ র র জন য বলছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
মানবাধিকার কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করতে নতুন অধ্যাদেশ অনুমোদন
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরো শক্তিশালী ও কার্যকর করার লক্ষ্যে নতুন জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন করেছে উপদেষ্টা পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় অধ্যাদেশটির অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।
আরো পড়ুন:
নির্বাচন বানচালের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করা হবে: প্রধান উপদেষ্টা
১৫ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতি শেষ করার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের আগে একটা মানবাধিকার কমিশন ছিল, কিন্তু সেটি কার্যত দন্তহীন একটি প্রতিষ্ঠান ছিল। নিয়োগ পদ্ধতিতে ত্রুটি, এখতিয়ারে ঘাটতি এবং নেতৃত্বের দুর্বলতায় প্রতিষ্ঠানটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেনি। এবার সেটিকে সত্যিকারের এখতিয়ারসম্পন্ন, ক্ষমতাসম্পন্ন একটি প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।”
তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনের কাঠামো, এখতিয়ার ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মৌলিক পরিবর্তন আনা হয়েছে। কমিশন একজন চেয়ারম্যান ও চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে গঠিত হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করতে আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে। গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আবেদন আহ্বান করা হবে এবং প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে বাছাই কমিটি সুপারিশ করবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমরা নিয়োগ পদ্ধতিটা এমনভাবে করেছি যাতে অভিজ্ঞ, যোগ্য ও মানবাধিকার রক্ষায় সক্রিয় মানুষরা কমিশনে জায়গা পান।”
তিনি আরো বলেন, “আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের পাশাপাশি বাংলাদেশ কর্তৃক অনুসমর্থিত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি এবং প্রথাগত আন্তর্জাতিক আইনে স্বীকৃত মানবাধিকারগুলোকেও এই কমিশনের এখতিয়ারে আনা হয়েছে। এর ফলে কমিশন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী কাজ করতে পারবে।”
অধ্যাদেশে কমিশনের এখতিয়ার বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। এখন থেকে শৃঙ্খলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাতেও কমিশন তদন্ত করতে পারবে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “আগের কমিশনের এখতিয়ারে গুরুতর সীমাবদ্ধতা ছিল, বিশেষ করে শৃঙ্খলা বাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের ক্ষেত্রে। এবার সেই সীমাবদ্ধতা দূর করা হয়েছে।”
এছাড়া, গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও ভুক্তভোগীদের সুরক্ষা আইনসহ মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক যেকোনো আইনের বাস্তবায়নের দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে। আলাদা করে ‘গুম কমিশন’ গঠনের প্রয়োজন হবে না বলে তিনি জানান।
অধ্যাদেশে কমিশনের আদেশ প্রতিপালনকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আইন উপদেষ্টা বলেন, “এখন থেকে কমিশনের সুপারিশ বা নির্দেশ উপেক্ষা করা যাবে না। এর বাধ্যবাধকতা আইনি কাঠামোয় যুক্ত করা হয়েছে।”
ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার উপস্থিত ছিলেন। খবর বাসসের।
ঢাকা/এসবি