তেহরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল
Published: 14th, June 2025 GMT
ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের বিমান হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম শুক্রবার এক বিবৃতিতে এই নিন্দা জানান।
তেহরানসহ বিভিন্ন স্থানে বিমান হামলার কঠোর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ফয়জুল হাকিম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যক্ষ মদদে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই বর্বরোচিত হামলা পরিচালনা করেছেন। পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র হিসেবে ইরানের উত্থান রোধে ইসরায়েল এই বিমান হামলা চালায়। পশ্চিম এশিয়ায় মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল এই হামলা পরিচালনা করেছে। তারা ইরানের বিরুদ্ধে কার্যত এক দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। এ যুদ্ধ সে অঞ্চলের জনগণের জীবনের নিরাপত্তা ও শান্তি বিপন্ন করবে।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য প্রভৃতি দেশের মদদে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইসরায়েল ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা পরিচালনা করে আসছে। বিশ্ব জনমতকে অগ্রাহ্য করে গাজায় এই গণহত্যা অব্যাহত আছে। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গাজায় গণহত্যা বন্ধে অবিলম্বে বিনা শর্তে ও স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতির খসড়া প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্র। ভোটদানে বিরত থাকার মাধ্যমে ইসরায়েলকে মদদ জুগিয়ে চলেছে ভারতসহ বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াশীল রাষ্ট্র।
বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিমান হামলার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানোর জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি জোর দাবি জানায় দলটি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
সুদানে কারা গণহত্যা চালাচ্ছে, আরব আমিরাতের ভূমিকা কী
২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে সুদান এক ভয়াবহ গৃহযুদ্ধের মধ্যে পড়ে। ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিতে দেশটির সামরিক বাহিনী এবং শক্তিশালী আধা সামরিক গোষ্ঠী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) মধ্যে শুরু হওয়া তীব্র লড়াই থেকে এই গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। এই যুদ্ধে পশ্চিম দারফুর অঞ্চলে দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয় এবং সেখানে গণহত্যা সংঘটিত হওয়ার অভিযোগও ওঠে।
সম্প্রতি আরএসএফ এল-ফাশের শহরটি দখল করার পর এর বাসিন্দাদের নিয়ে বড় ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত সারা দেশে দেড় লাখের বেশি মানুষ মারা গেছেন এবং প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। জাতিসংঘ এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট বলে অভিহিত করেছে।
পাল্টাপাল্টি অভ্যুত্থান ও সংঘাতের শুরু১৯৮৯ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা দীর্ঘদিনের প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরকে ২০১৯ সালে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকেই দফায় দফায় যে উত্তেজনা চলছিল, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি হচ্ছে বর্তমান গৃহযুদ্ধ।
বশিরের প্রায় তিন দশকের শাসনের অবসানের দাবিতে বিশাল জনবিক্ষোভ হয়েছিল। তারই প্রেক্ষিতে তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। কিন্তু দেশটির মানুষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যায়। যার পরিপ্রেক্ষিতে একটি যৌথ সামরিক-বেসামরিক সরকার গঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালের অক্টোবর মাসে আরও একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকারটিকে উৎখাত করা হয়। এই অভ্যুত্থানের কেন্দ্রে ছিলেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও দেশটির কার্যত প্রেসিডেন্ট জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং তাঁর ডেপুটি ও আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো।
এই দুই জেনারেল দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ ও বেসামরিক শাসনে ফিরে যাওয়া নিয়ে প্রস্তাবিত পদক্ষেপে একমত হতে পারেননি। তাঁদের মধ্যে মূল বিরোধের বিষয় ছিল প্রায় এক লাখ সদস্যের আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীর সঙ্গে একীভূত করার পরিকল্পনা এবং নতুন এই যৌথ বাহিনীর নেতৃত্ব নিয়ে। ধারণা করা হয়, দুজন জেনারেলই তাঁদের ক্ষমতা, সম্পদ ও প্রভাব ধরে রাখতে চেয়েছিলেন।
আরএসএফ সদস্যদের দেশের বিভিন্ন স্থানে মোতায়েন করা হলে সেনাবাহিনী বিষয়টিকে নিজেদের জন্য হুমকি হিসেবে দেখে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের ১৫ এপ্রিল দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হয়। সেই লড়াই দ্রুত তীব্র আকার ধারণ করে এবং আরএসএফ খার্তুমের বেশির ভাগ অংশ দখল করে নেয়। যদিও প্রায় দুই বছর পর সেনাবাহিনী খার্তুমের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়।
জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান (বামে) এবং আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালো (ডানে)