মূল্যস্ফীতির কারণে বিভিন্ন মহল থেকে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা থেকে বৃদ্ধি করার দাবি উঠেছিল। বিশেষত, নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের জীবনযাত্রার ব্যয়ে কিছুটা স্বস্তি দেওয়াই ছিল এর উদ্দেশ্য। কিন্তু এই প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় তাঁরা আশাহত হয়েছেন।

অন্যদিকে উচ্চ আয়ের করদাতাদের কিছু ক্ষেত্রে আয়কর যেমন বাড়তে পারে, আবার তেমনি কিছু ক্ষেত্রে আয়করের পরিমাণ কমতে পারে। এককথায় বলা যাবে না, কত টাকা থেকে কত টাকা পর্যন্ত আয় থাকলে কত টাকা আয়কর কমবে বা বাড়বে। অথবা কোন শ্রেণির করদাতার আয়কর কমবে বা বাড়বে।

তবে সাধারণভাবে বলা যায়, উচ্চ আয়ের করদাতার ক্ষেত্রে করের পরিমাণ বাড়বে। গত করবর্ষ পর্যন্ত ব্যক্তি করদাতার করধাপ অনুযায়ী সর্বোচ্চ করহার ছিল ২৫ শতাংশ। আগামী করবর্ষ অর্থাৎ ২০২৫-২৬ থেকে সর্বোচ্চ করহার ৩০ শতাংশে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে ৩০ শতাংশ হারে কর প্রদানের জন্য একজন করদাতার বার্ষিক মোট আয় ৩৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা বা মাসিক প্রায় ৩ লাখ ২১ হাজার টাকার ওপরে থাকতে হবে। এর নিচে যাঁরা থাকবেন, তাঁদের আয়করে কোনো পরিবর্তন হবে না।

বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি রিটার্ন দাখিল করে থাকেন মূলত বেসরকারি চাকরিজীবীরা। সরকারের উদ্দেশ্য থাকে কীভাবে এই শ্রেণির করদাতাদের ওপর আরও বেশি করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া যায়। কারণ, বেসরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ব্যাংকে ট্রান্সফার করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে এবং এ কারণে তাঁদের আয়ের তথ্যটা সঠিকভাবে পাওয়া যায়। তাই তাঁদের কাছ থেকে আয়কর আদায় করা অনেক সহজ হয়।

যাহোক, এ বছরও বেসরকারি চাকরিজীবীর ক্ষেত্রে দুটি বড় পরিবর্তন এসেছে। এর মধ্যে প্রথম পরিবর্তন হলো, মোট বেতন খাতে আয়ের সর্বোচ্চ অব্যাহতি সীমা ৪ লাখ ৫০ হাজার থেকে বৃদ্ধি করে ৫ লাখ টাকায় প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে ৫০ হাজার টাকার বাড়তি অব্যাহতি–সুবিধা পাবেন এবং করের পরিমাণ কমবে। তবে এই সুবিধা পাওয়ার জন্য বার্ষিক বেতন মোট ১৫ লাখ টাকা হতে হবে। কারণ, মোট বেতনের এক-তৃতীয়াংশ অব্যাহতি হিসেবে বাদ দেওয়া যায়। তাই যাঁদের বেতন ১৫ লাখ টাকার নিচে থাকবে, তাঁরা এই অব্যাহতি–সুবিধা সম্পূর্ণ ভোগ করতে পারবেন না।

দ্বিতীয়ত, উচ্চ বেতনের চাকরিজীবী করদাতা অব্যাহতি–সুবিধা পেয়ে কিছুটা আয়করের পরিমাণ হ্রাস করতে পারলেও তিনি যদি অফিস থেকে গাড়ির সুবিধা পান, তাহলে তাঁর আয়করের পরিমাণ আবার বেড়ে যাবে। আগে ১৫০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির সুবিধা পেলে আয়কর গণনার সময় মাসিক ১০ হাজার টাকা করে যোগ হতো। কিন্তু এখন থেকে মাসিক ১৫ হাজার টাকা করে যোগ হবে। সিসিভেদে এই হার বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাই যাঁরা অফিস থেকে গাড়ি পেয়েছেন, তাঁদের করের পরিমাণ বাড়বে।

ওপরের বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যায়, একজন সাধারণ করদাতা এই বাজেট থেকে কর–সুবিধা পাবেন, নাকি বঞ্চিত হবেন, তা বের করা অনেকটাই জটিল।

বাংলাদেশে ১ জুলাই ২০২৫ নতুন বাজেট বাস্তবায়ন হবে। ঠিক একই দিনে অস্ট্রেলিয়ায় নতুন বাজেট কার্যকর হবে। গত ২৫ মার্চ লেবার পার্টির ট্রেজারার জিম চ্যামার্স ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য বাজেট দিয়েছেন। ১ জুলাই থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই বাজেটে নিচের পাঁচটি খাতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

১.

জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় রাখা

২. স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করা

৩. বাসস্থান ক্রয় ও ভাড়া সহজীকরণ

৪. শিক্ষা খাতে বড় ধরনের আর্থিক সুবিধা

৫. অর্থনীতি আরও মজবুত করা

করোনাভাইরাসের কারণে বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ার পর অস্ট্রেলিয়া সরকার ইমিগ্র্যান্টদের ব্যাপক হারে ভিসা দিতে থাকে এবং এর ফলে হাউজিং সেক্টরে ক্রাইসিস দেখা যায়। ফলে বাসস্থান ও বাসাভাড়া উভয়ই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। একদিকে বাসাভাড়া, অন্যদিকে নিত্যপণ্যের দামসহ জীবন ধারণের জন্য বিভিন্ন দরকারি সেবা ও পণ্যের দাম অনেক বেড়ে যায়। মূল্যস্ফীতি ৭ দশমিক ৮ শতাংশে উঠে যায়।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে যখন অস্ট্রেলিয়ানরা তাঁদের আয়ের সঙ্গে ব্যয় মিলাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন, তখন লেবার পার্টি জীবনযাত্রার ব্যয় সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসতে কয়েকটি পদক্ষেপ নেয়।

করধাপ অনুযায়ী করহার হ্রাস করা হয়। অস্ট্রেলিয়ায় করমুক্ত আয়ের সীমা হলো ১৮ হাজার ২০০ ডলার। এরপর ১৮ হাজার ২০১ থেকে ৪৫ হাজার ডলার পর্যন্ত করহার ১৯ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ১৬ শতাংশ এবং পরবর্তী ধাপ ৪৫ হাজার ১ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার ডলার পর্যন্ত ৩২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনে।

প্রথম দুটি ধাপে পরিবর্তন আনলেও পরবর্তী দুটি ধাপে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। অর্থাৎ যাঁদের আয় বেশি, তাঁদের করহার অপরিবর্তিত রাখা হয়। উল্লেখ্য, অস্ট্রেলিয়ায় সর্বোচ্চ করহার ৪৫ শতাংশ। এর সঙ্গে ২ শতাংশ মেডিকেয়ার লেভি যোগ হয়। প্রকৃতপক্ষে করহার ৪৭ শতাংশ।

২০২৫-২৬ অর্থবছরেও ওপরে উল্লেখিত করধাপ অনুযায়ী করহার বিদ্যমান রাখা হয়। তবে পরবর্তী দুই বছরে, অর্থাৎ ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরে প্রথম করধাপে করহার যথাক্রমে ১৫ ও ১৪ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এখানে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই করধাপ অনুযায়ী করহার হ্রাস করার ফলে কোনো আয়ের করদাতার বছরে ও সপ্তাহে কত টাকা করহ্রাস পাবে, তা বাজেটে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। যেমন যাঁদের আয় বছরে ৭৯ হাজার ডলার (এটা অস্ট্রেলিয়ার গড় আয়), তাঁদের বছরে ১ হাজার ৬৫৪ ডলার আয়কর হ্রাস পাবে। ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরে যথাক্রমে ১ হাজার ৯২২ ও ২ হাজার ১৯০ ডলার আয়কর হ্রাস পাবে। বাজেটে উল্লেখ করা হয়েছে, কতসংখ্যক করদাতা তাঁদের বার্ষিক আয়ের ভিত্তিতে বছরে কত ডলার আয়কর হ্রাস করতে পারবেন। যেমন—

ক. ১৮ হাজার ২০১ থেকে ৪৫ হাজার ডলার আয় আছে, এমন করদাতার সংখ্যা ২৭ লাখ এবং তাঁদের ১ হাজার ৩৪০ ডলার আয়কর হ্রাস পাবে;

খ. ৪৫ হাজার ১ থেকে ১ লাখ ৩৫ হাজার ডলার আয় আছে, এমন করদাতার সংখ্যা ৮৮ লাখ এবং তাঁদের ১ হাজার ৩৪০ থেকে ৪ হাজার ২৬৫ ডলার আয়কর হ্রাস পাবে;

গ. ১ লাখ ৩৫ হাজার ১ থেকে ১ লাখ ৯০ হাজার ডলার আয় আছে, এমন করদাতার সংখ্যা ১৮ লাখ এবং তাঁদের ৪ হাজার ২৬৫ থেকে ৫ হাজার ৬৫ ডলার আয়কর হ্রাস পাবে; এবং

ঘ. ১ লাাখ ৯০ হাজার ডলারের ঊর্ধ্বে আয় আছে, এমন করদাতার সংখ্যা ১৫ লাখ এবং তাঁদের ৫ হাজার ৬৫ ডলার আয়কর হ্রাস পাবে।

উপরিউক্ত পদক্ষেপের সঙ্গে লেবার সরকার আরও কিছু পদক্ষেপ নেয় এবং এর ফলে মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার হ্রাস পায়। ২০২৫ সালের মার্চে মূল্যস্ফীতি নেমে এসেছে ২ দশমিক ৪০ শতাংশে। এত কিছুর পরও লেবার সরকার এবার বাজেটে বলেছে, আমরা বুঝতে পারছি, এখনো মানুষের জীবনযাত্রা আশানুরূপ সহনীয় পর্যায়ে আসেনি। তাই তারা যে করধাপ অনুযায়ী করহার হ্রাসের ঘোষণা দিয়েছিল, তার সঙ্গে কিছু ভর্তুকি বহাল রেখেছে।

এর মধ্যে অন্যতম হলো, বিদ্যুৎ বিলে তিন মাসে ৭৫ ডলার ভর্তুকি দেবে। প্রত্যেক বিদ্যুৎ গ্রাহক এ সুবিধা পাবেন। অস্ট্রেলিয়ায় সাধারণত তিন মাস অন্তর বিদ্যুৎ বিল ইস্যু করা হয়। যেমন তিন মাসে যদি মোট বিদ্যুৎ বিল আসে ৪০০ ডলার, তাহলে বিদ্যুৎ কোম্পানি তার গ্রাহককে ৪০০ ডলার বিল করে ৭৫ ডলার বাদ দেবে। ৩২৫ ডলার গ্রাহক পরিশোধ করবেন আর বাকি ৭৫ ডলার অস্ট্রেলিয়ান সরকার বিদ্যুৎ কোম্পানিকে পরিশোধ করে দেবে। এ সুবিধা ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে, চলবে আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

আর যাঁরা স্টুডেন্ট লোন নিয়েছেন, তাঁদের ঋণের প্রায় ২০ শতাংশ হ্রাস করার কথা বলা হয়েছে। যেমন কোনো শিক্ষার্থীর যদি ৩৫ হাজার ডলার স্টুডেন্ট লোন থাকে, তাহলে ৭ হাজার ডলার কমে ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৮ হাজার ডলার। ঋণের পরিমাণের ভিত্তিতে এ সুবিধা পাবেন প্রায় ৩০ লাখ অস্ট্রেলিয়ান।

এ ছাড়া স্বাস্থ্যসুবিধা, স্বল্পমূল্যে ওষুধ, বাসস্থানের সুবিধা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ খাতে ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা সহজতর করার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এ পদক্ষেপের কারণে সাধারণ মানুষ তার আর্থিক সুবিধা কত হলো, তা প্রত্যক্ষভাবে বুঝতে পারে। তারা বুঝতে পারে, আসলেই বাজেটে তাদের জন্য কোনো আর্থিক সুবিধা থাকছে কি না; নাকি তাদের পকেট থেকে ডলার চলে যাবে।

জসীম উদ্দিন রাসেল অস্ট্রেলিয়ায় কর্মরত চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট

[email protected]

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র র পর ম ণ জ বনয ত র হ র স কর ৪৫ হ জ র চ কর জ ব পদক ষ প র করদ ত উল ল খ র বর ত দ র আয় কত ট ক আয় র স কর র প র জন য করহ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট প্রকাশ, অবহেলিত গবেষণা ও স্বাস্থ্য খ

২০২৫-২৬ অর্থবছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জন্য ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার প্রস্তাবিত বাজেট প্রকাশ করা হয়েছে। তবে এ বাজেটে বড় কোনো ধরনের সংস্কার বা মৌলিক উন্নয়ন ভিত্তিক কোনো পরিকল্পনা দেখা যায়নি।

গবেষণা খাত, স্বাস্থ্য খাত, মূলধন অনুদানসহ বেশ কয়েকটি খাত একেবারেই অবহেলিত থাকতে দেখা গেছে।

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনস্থ অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট উপস্থাপন শীর্ষক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট সম্পর্কে বিস্তারিত জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম জাহাঙ্গীর আলম।

আরো পড়ুন:

বাজেটের ত্রুটি সংশোধনের আহ্বান

নির্দেশনামূলক বাজেট দিতে অন্তর্বর্তী সরকার ব‍্যর্থ: এবি পার্টি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ১ হাজার ৩৫ কোটি ৪৫ লাখ টাকার মধ্যে সরকার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাধ্যমে ৮৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ৯০ কোটি টাকা আয়ের পরিকল্পনা ঢাবি প্রশাসনের। এ হিসাবে বাজেটে ঘাটতি দেখানো হয়েছে ৬২ কোটি ৪১ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে প্রত্যাশিত অর্থ মোট প্রস্তাবিত বাজেটের শতকরা ৮৫.২৮ ভাগ, অভ্যন্তরীণ উৎস ৮.৬৯ ভাগ এবং ঘাটতি ৬.০৩ ভাগ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে ঢাবির সংশোধিত বাজেট ছিল ৯৯৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা; বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে পায় ৮১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে পায় ১১০ কোটি টাকা এবং ঘাটতি ছিল ৬৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাজেট ছিল ৯২ হাজার ৭৬৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

২০২৫-২৬ অর্থবছরে মোট বেতন বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৯৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা, যা মূল বাজেটের ২৮.৩৪ ভাগ। মোট ভাতাদি বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ পেয়েছে ২১৫ কোটি ৯১ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ২০.৮৪ ভাগ। 

মোট পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তা খাতে বরাদ্দ পেয়েছে ২৮৫ কোটি ৯৮ লাখ ২২ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ২৭.৬২ ভাগ। পেনশন স্কিম বাবদ সহায়তা ধরা হয়েছে ১৩৮ কোটি ৮৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ১৩.৪১ ভাগ।

গবেষণা অনুদান এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা বাবদ সহায়তা খাতে যথাক্রমে ২১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা এবং ১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা যথাক্রমে মোট বাজেটের ২.০৮ ভাগ ও ০.১০ ভাগ। অন্যান্য অনুদান হিসেবে দেখানো হয়েছে ৩৪ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ৩.৩১ ভাগ।

যন্ত্রপাতি, যানবাহন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি এবং অন্যান্য মূলধন অনুদান বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, ১৬ কোটি ৮ লাখ টাকা, ৪২ কোটি টাকা এবং ৩০ কোটি টাকা, যা যথাক্রমে মূল বাজেটের ৩.৪২ ভাগ, ০.১৬ ভাগ, ০.৪১ ভাগ এবং ০.২৯ ভাগ।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পণ্য ও সেবা বাবদ সহায়তা খাতে ৬৫ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার টাকা (৬.৯২ ভাগ), পেনশন ও অবসর সুবিধা খাতে ২৩ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা (২.৪৫ ভাগ), গবেষণা অনুদান খাতে ১ কোটি ৫২ লাখ (০.১৬ ভাগ), প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা সহায়তা খাতে ২৫ লাখ টাকা (০.০৩ ভাগ), যন্ত্রপাতি অনুদান খাতে ৭ কোটি ৬৬ লাখ ৯৫ হাজার টাকা (০.৮১ ভাগ) এবং অন্যান্য মূলধন অনুদান খাতে ১ কোটি টাকা (০.১১ ভাগ) বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থ বছরের তুলনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বরাদ্দ কম দেওয়া হয়েছে বেতন বাবদ সহায়তা খাতে ৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা (০.৬০ ভাগ), ভাতা বাবদ সহায়তা খাতে ২৫ কোটি ১ লাখ ৫৭ হাজার টাকা (০.২৭ ভাগ), অন্যান্য অনুদান খাতে ৪৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা (০.০৫ ভাগ) এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান খাতে ১০ লাখ টাকা (০.০১ ভাগ) টাকা।

বিগত বছরে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি অনুদান খাতে ৪৬০ কোটি টাকা (০.৪৬ ভাগ) বরাদ্দ থাকলেও তা এবার ৪২০ কোটি টাকা (০.৪১ ভাগ) বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিগত বছরে এ খাতে উদ্বৃত্ত ছিল বলে বরাদ্দ বেশি ছিল এবং এবার উদ্বৃত্ত নেই তাই বরাদ্দ কম হয়েছে- এমনটাই ভাষ্য প্রশাসনের। তবে সারা বিশ্ব যেখানে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর এবং বাজেট বাড়াতে দায়িত্বশীল, সেখানে ঢাবিতে এ খাতে বাজেট কমেছে।

গত বছর যানবাহন বাবদ কোনো অনুদান না রাখলেও এবার রাখা হয়েছে ১ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। মোট ভাতাদি বাবদ সহায়তা খাতে শিক্ষা ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, টিফিন ভাতা, ধোলাই ভাতা, অধিকাল ভাতা ও বাংলা নববর্ষ ভাতা কমালেও বাড়ানো হয়েছে বাড়ি ভাড়া ভাতা এবং উৎসব ভাতা।

বিগত বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে অর্জিত রাজস্ব ১১০ কোটি টাকা (১১.০৭ ভাগ) থাকলেও এবার তা কমিয়ে ৯০ কোটি টাকা (৮.৬৯ ভাগ) বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনস্বাস্থ্যবিরোধী বাজেট: সিগারেটের নিম্ন ও মধ্যম স্তর একত্র করার দাবি
  • ২ কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়
  • কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল হতে পারে
  • লিফটের ওপর বাড়তি কর প্রত্যাহারের দাবি বেলিয়ার
  • লিফটের ওপর বাড়তি কর প্রত্যাহারের দাবি
  • স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের ৯ মাসে লোকসান কমেছে ১৯.৭৯ শতাংশ
  • বাজেটকে সমৃদ্ধ করতে নারীর প্রতি আরও সংবেদনশীল হতে হবে: ফওজিয়া মোসলেম
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১ হাজার ৩৫ কোটি টাকার বাজেট অনুমোদন, বেতন-ভাতায় খরচ ৬৩%
  • ঢাবির ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাজেট প্রকাশ, অবহেলিত গবেষণা ও স্বাস্থ্য খ