প্রেমের টানে ভারতে গিয়ে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি তরুণী
Published: 12th, July 2025 GMT
প্রেমের টানে ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে এক বাংলাদেশি তরুণী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাকে অনুপ্রবেশে সহায়তা করার অভিযোগে তার প্রেমিক ভারতীয় নাগরিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ত্রিপুরার সেপাহিজলা জেলায়। অভিযুক্তরা বর্তমানে ১৪ দিনের বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন।
জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিএসএফ তাদের আটক করে। পরে স্থানীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেপ্তার ওই বাংলাদেশি তরুণীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। তবে তিনি বাংলাদেশের বগুড়া জেলার বাসিন্দা বলে জানানো হয়েছে। আর তার প্রেমিকের নাম দত্ত যাদব। তিনি কর্ণাটকের বাসিন্দা।
পুলিশ জানায়, ওই বাংলাদেশি তরুণী একসময় মুম্বাইয়ের একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন। পরে বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি সংস্থায় যোগ দেন। এসময় কর্ণাটকের বাসিন্দা দত্ত যাদবের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। তবে কয়েক মাস আগে ওই তরুণী আবার বাংলাদেশে চলে যায়। প্রেমিকের অনুরোধ রাখতে আবার ভারতে আসেন। তবে তার সঙ্গে পাসপোর্ট ও ভিসা ছিল না। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় অনুপ্রবেশে সহায়তা করায় তার প্রেমিক দত্ত যাদবকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, তারা ত্রিপুরা থেকে বেঙ্গালুরুতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন। এসময় বিএসএফ তাদের আটক করে।
অভিযুক্তদের ভারতীয় পাসপোর্ট আইন এবং ১৪ ফরেনারস অ্যাক্ট ও ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধীন বিভিন্ন ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলেও জানায় পুলিশ।
ত্রিপুরা রাজ্যের পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, ওই বাংলাদেশি তরুণীকে ভারতে অনুপ্রবেশে কোনো দালাল সহযোগিতা করেছে কি না তা খুঁজে বের করা হচ্ছে। সেটি মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তর ণ
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস