মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে ১০ মিনিটের প্রতীকী ওয়াকআউট করেছে সিপিবি, বাসদ ও বাংলাদেশ জাসদ।

আজ বুধবার বেলা ১১টার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৮তম দিনের অধিবেশন শুরু হয়।

শুরুতে সঞ্চালক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজকে কথা বলার অনুরোধ করেন। এ সময় অনুমতি নিয়ে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।

মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিবাদে কর্মসূচিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখতাম, স্বৈরাচার শাসকেরা এ ধরনের ঘটনা ঘটলে যে ধরনের ঘটনাগুলো ঘটত, তারই ছায়া দেখলাম।’

রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘স্বৈরাচারে যারা ছিল, তারা এখানে নানান সংকট, ষড়যন্ত্র করবে, সেটা সরকারের জানার কথা। একজন উপদেষ্টাকে দেখা গেল, তিনি বলছেন, গতকালের ঘটনা স্বৈরাচারেরা করেছে, এটাকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আগে স্বৈরাচার হাসিনা যখন বিপদে পড়তেন, এ ধরনের কথা বলতেন। তাঁর পাশে ১৪ দল বা অন্যরা বসে থাকত। তারা বলত, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এখন সে রকমই দেখা গেল।’

ঐকমত্যের আলোচনা জরুরি হলেও প্রতিবাদ করাটা দরকার বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার প্রতিবাদ করা ছাড়া এখানে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য ১০ মিনিটের জন্য থাকতে চাই না।’

পরে রুহিন হোসেন প্রিন্সকে সমর্থন জানান বাংলাদেশ জাসদের মুশতাক হোসেন ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। দল তিনটির নেতারা সংলাপ থেকে ১০ মিনিটের প্রতীকী ওয়াকআউট করেন।

দল তিনটির নেতাদের ওয়াকআউটের পর কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, তিনটি দল প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে যা করেছে, সেটা তারা করতে পারে। রাজনৈতিক দলের অধিকারের চর্চাকে তিনি স্বাগত জানান। তাঁরা মনে করেন, তাদের বক্তব্যগুলো জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়েছে, সরকার বিবেচনা করবে। তাঁরা তাদের বক্তব্যকে নোট করেছেন।

বেলা ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে দল তিনটির নেতারা আবার সংলাপে যোগ দেন। পরে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বিষয়টি উল্লেখ করেন।

আজকের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।

বৈঠকে আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড.

বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. আইয়ুব মিয়া।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঐকমত য র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব

কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তবে কারা, সেটা স্পষ্ট করেননি তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে রংপুর নগরের সেন্ট্রাল রোডে জাপা কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শামীম হায়দার পাটোয়ারী এ মন্তব্য করেন।

শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দল ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে বা স্বাক্ষর করে একধরনের ফাঁদে পড়ে গেছে। কিছু রাজনৈতিক দল বলছে, ঐকমত্য কমিশন প্রতারণা করেছে। এখানে প্রতারক ও প্রতারণা শব্দটি উচ্চারিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা তো এ রকম সংস্কার চাইনি।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ঐকমত্য তৈরিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে জাপা মহাসচিব বলেন, কমিশন ৫৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি দলকে বাদ দিয়েছে। যে দলগুলো সেখানে গেছে, তাদের মধ্যে অনেকগুলো বিষয় নিয়ে মতবিরোধ আছে। এক ভাগকে ঐক্য প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় সম্পূর্ণ অংশগ্রহণ করেছে। অন্য আরেক ভাগ ঐক্য প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে পরে সম্পূর্ণ দ্বিমত পোষণ করেছে।

বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপির বলে দাবি করেছেন শামীম হায়দার পাটোয়ারী। তিনি বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। কারণ, নির্বাচিত সরকার সেখানে দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করেছে ও নির্বাচনকে প্রভাবিত করেছে। এই মুহূর্তে দেশে যে প্রশাসনিক কাঠামো আছে, তার ব্যাপারে তথ্য উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন, তাঁরা বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর কথামতো প্রশাসন সাজিয়েছে, তার সঙ্গে এনসিপি আছে। এই তিন দলের বাইরে অন্য কোনো দল যদি ভোটে আসে, এই প্রশাসনিক কাঠামো সেই দলকে সুষ্ঠু ভোট হতে দেবে না।

গণভোটের দাবি নজিরবিহীন উল্লেখ করে শামামী হায়দার পাটোয়ারী বলেন, সংবিধানে এই মুহূর্তে গণভোট কোনো প্রভিশনে নেই। বর্তমানে গণভোটের যে দাবি উঠেছে, সংসদে পাস হওয়ার আগে এই দাবি বাস্তবায়ন হলে ঐকমত্য কমিশনকে সংসদের মর্যাদা দেওয়া হবে। ঐকমত্য কমিশন সার্বভৌম নয়, নির্বাচিত নয় ও সংসদ নয়। সংসদকে এড়িয়ে গিয়ে কোনো আইন পাস করা হলে তা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে।

এ সময় জাপার কো–চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান, প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ইয়াসির, রংপুর জেলার আহ্বায়ক আজমল হোসেন, সদস্যসচিব হাজী আবদুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হাসানুজ্জামানসহ জাপা ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই সনদ বাস্তবায়নে কেন এমন দুর্বোধ্য পথ
  • এক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘ঐকমত্য সুপারিশ’ দেওয়ার আহ্বান
  • ছাত্রদলের কমিটি নেই ১৪ মাস, স্থবির কার্যক্রম
  • মামলায় ঝুলে গেছে এফবিসিসিআইয়ের নির্বাচন
  • সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত সিদ্ধান্ত, আরপিওতে পরিবর্তন আসছে
  • গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন সিলেট-৬ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী আদিবা হোসেন
  • তড়িঘড়ি না করে সংবিধান সংস্কারে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান
  • কিছু রাজনৈতিক দল ঐকমত্য কমিশনে গিয়ে ফাঁদে পড়েছে: জাপা মহাসচিব
  • সম্মেলনের প্রায় তিন মাস পর রাজশাহী মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটি
  • হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার