শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে প্রতীকী ওয়াকআউট তিন দলের
Published: 23rd, July 2025 GMT
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তে হতাহতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হামলার প্রতিবাদে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ থেকে ১০ মিনিটের প্রতীকী ওয়াকআউট করেছে সিপিবি, বাসদ ও বাংলাদেশ জাসদ।
আজ বুধবার বেলা ১১টার পর রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১৮তম দিনের অধিবেশন শুরু হয়।
শুরুতে সঞ্চালক প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দার কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজকে কথা বলার অনুরোধ করেন। এ সময় অনুমতি নিয়ে বক্তব্য দেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে, তার প্রতিবাদে কর্মসূচিতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ওপর হামলা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘অতীতে আমরা দেখতাম, স্বৈরাচার শাসকেরা এ ধরনের ঘটনা ঘটলে যে ধরনের ঘটনাগুলো ঘটত, তারই ছায়া দেখলাম।’
রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘স্বৈরাচারে যারা ছিল, তারা এখানে নানান সংকট, ষড়যন্ত্র করবে, সেটা সরকারের জানার কথা। একজন উপদেষ্টাকে দেখা গেল, তিনি বলছেন, গতকালের ঘটনা স্বৈরাচারেরা করেছে, এটাকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। আগে স্বৈরাচার হাসিনা যখন বিপদে পড়তেন, এ ধরনের কথা বলতেন। তাঁর পাশে ১৪ দল বা অন্যরা বসে থাকত। তারা বলত, সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা করতে হবে। এখন সে রকমই দেখা গেল।’
ঐকমত্যের আলোচনা জরুরি হলেও প্রতিবাদ করাটা দরকার বলে উল্লেখ করেন রুহিন হোসেন প্রিন্স। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনার প্রতিবাদ করা ছাড়া এখানে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এ জন্য ১০ মিনিটের জন্য থাকতে চাই না।’
পরে রুহিন হোসেন প্রিন্সকে সমর্থন জানান বাংলাদেশ জাসদের মুশতাক হোসেন ও বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ। দল তিনটির নেতারা সংলাপ থেকে ১০ মিনিটের প্রতীকী ওয়াকআউট করেন।
দল তিনটির নেতাদের ওয়াকআউটের পর কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, তিনটি দল প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে যা করেছে, সেটা তারা করতে পারে। রাজনৈতিক দলের অধিকারের চর্চাকে তিনি স্বাগত জানান। তাঁরা মনে করেন, তাদের বক্তব্যগুলো জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়েছে, সরকার বিবেচনা করবে। তাঁরা তাদের বক্তব্যকে নোট করেছেন।
বেলা ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে দল তিনটির নেতারা আবার সংলাপে যোগ দেন। পরে কমিশনের সহসভাপতি আলী রীয়াজ বিষয়টি উল্লেখ করেন।
আজকের আলোচনায় অংশ নিচ্ছে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), গণসংহতি আন্দোলনসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল।
বৈঠকে আরও উপস্থিত আছেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন ১৮ কোটি মানুষের দাবি: জামায়াত
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে কার্যকর করতে হবে, আর প্রয়োজনে গণভোট আয়োজন করা যেতে পারে। তবে তা অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনায় জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদও উপস্থিত ছিলেন।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার
৩ দাবিতে জাস্টিস ফর জুলাইয়ের সংবাদ সম্মেলন
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে। ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনের পর দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সময়মতো বাস্তবায়ন হয়নি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমে তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল হয়েছে বিচারপতি খায়রুল হকের প্রভাবিত রায়ের মাধ্যমে। জামায়াত মনে করে, বিচার বিভাগকে বিতর্কের মুখে না ফেলে নির্বাহী আদেশের মাধ্যমেই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে।
হামিদুর রহমান আযাদ জানান, ঐকমত্য কমিশনের একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি চারটি বিকল্প প্রস্তাব করেছে, যার মধ্যে সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটিই সবচেয়ে শক্তিশালী। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়ন সম্ভব বলে মত দেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তনের ক্ষমতা সংসদের নেই। এ জন্য গণভোট প্রয়োজন। জনগণের ইচ্ছাই দেশের সর্বোচ্চ আইন।
ডাকসু নির্বাচনে জনগণের অংশগ্রহণকে উদাহরণ হিসেবে টেনে তিনি বলেন, তরুণ সমাজ এখন নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থার পক্ষে এবং জুলাই বিপ্লবের চেতনার সঙ্গেই তারা একাত্ম।
ঢাকা/এএএম/ফিরোজ