বর্তমান সরকারের আচরণ সেই পতিত সরকারের মতোই রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বুদ্ধিজীবী সরকার। তারা সারা জীবন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছে। তাদের নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে আমরা পরিবর্তনকালীন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারব। আমরা সবাই বিগত সরকারের সমালোচনা করতে করতে এ পর্যায়ে এসেছি। কিন্তু সরকার পতনের পর আমাদের আচরণ সেই পতিত সরকারের মতোই রয়ে গেছে।’

আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথাগুলো বলেন সহুল আহমদ। ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান: এক বছরের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এই গোলটেবিলের আয়োজন করে প্রথম আলো।

গোলটেবিল বৈঠকে সহুল আহমদ বলেন, ‘একাত্তর থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের সংকট–পরবর্তী সময়ে ক্ষত সারানোর ব্যাপারটি শেখা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা তা শিখতে পারিনি; বরং জুলাই–পরবর্তী সময়ে আমরা মুখে অজস্রবার আওয়ামী বয়ানের বাইরে যাব বলেও একদম হুবহু আওয়ামী লীগের দেখানো পথে চলছি। আওয়ামী লীগ যা যা করে গেছে, আমরা ঠিক তাই তাই করছি। মুজিববর্ষ উদ্‌যাপনের মতো করে জুলাই উদ্‌যাপন করছি।’

সহুল আহমদ আরও বলেন, বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে সাধারণ বিষয় হচ্ছে ‘সহিংসতা’। দেশে এমন কোনো দল নেই, যাদের হাতে নাগরিকের রক্ত লেগে নেই। আবার প্রতিটি দলেরই কোনো না কোনোভাবে নির্যাতিত হওয়ার ইতিহাস আছে। দীর্ঘ সময়ের স্বৈরশাসনে অগণিত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত অনেকে এতে আক্রান্ত হয়েছেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষত পূরণ করা জরুরি।

গত এক বছরের অর্জন উল্লেখ করে সহুল আহমদ বলেন, ‘এই প্রথম আমরা নিজেরা নিজেদের সংকট সমাধানের চেষ্টা করছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাধীনভাবে মতামত রাখতে পারছি। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় কোনো ভয় না থাকলেও কিঞ্চিৎ সামাজিক ভয় যুক্ত হয়েছে আমাদের মধ্যে। কোনো মতামতের কারণে গোষ্ঠীগত বা সামাজিক আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা এখনো আছে। তবে রাষ্ট্রীয় পরিসর থেকে আমাদের আলোচনার জায়গাটা বড় হয়েছে।’

ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সহুল আহমদ বলেন, ‘দেশে যে যখন ক্ষমতায় থাকে, সেই তখন বিচার পায়। যে পক্ষ হেরে যায়, সে বিচারের দাবিই করতে পারে না। কোনো অভিযুক্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছেন, বিচারক তাঁর দ্রুত বিচার করছেন না। সেই দিক থেকে দেখলে মোটাদাগে আমরা আসলে ন্যায়বিচারের দিকে যেতে পারিনি। কিন্তু এভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রে আরও ক্ষত সৃষ্টি হচ্ছে, যা অপূর্ণ রেখে সামনে এগোনোর কথা ভাবা যায় না। অভ্যুত্থানে আঘাত পাওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতগুলোও পূর্ণ করতে হবে। যেন এগুলো সুদূর ভবিষ্যতে ফিরে না আসতে পারে, সে ব্যবস্থা করা জরুরি।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র আম দ র আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে

৩ কোটি মানুষের দেশ নেপাল। দেশটি ভারত ও চীনের মাঝখানে অবস্থিত। সেখানকার সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ প্রথাগত নির্বাচনী গণতন্ত্রের চেনা ধারা ভেঙে দিয়েছে। আর দক্ষিণ এশিয়ায় একের পর এক সরকার পতনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ প্রজন্ম বিশ্বকে নতুন এক প্রশ্নের মুখে ফেলেছেন। দক্ষিণ এশিয়াই কি জেন–জি (জেনারেশন জেড) প্রজন্মের বিপ্লবের কেন্দ্রস্থল?

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খাজা শরফুদ্দীন চিশতির মাজারে হাত দিলে পরিণাম হবে ভয়াবহ: আহলে সুন্
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
  • ডাকসুর ব্যালট পেপারে ২ ভোট নিয়ে যা বলছে নির্বাচন কমিশন
  • দক্ষিণ এশিয়ায় জেন–জি বিপ্লবের পরবর্তী নিশানা কে
  • যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলকে নিষিদ্ধ চায়, তারা আদালতে অভিযোগ দিতে পারে: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • প্রাথমিকে গানের শিক্ষক বাদ দিয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে
  • মাঠের জবাব মাঠে দেওয়া হবে: সালাহউদ্দিন 
  • পনেরো বছরে থেমে গেল শিশুশিল্পীর জীবন
  • পাকিস্তানে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে ৫ সেনা নিহত
  • আলোচনা অব্যাহত থাকা অবস্থায় কর্মসূচি দেওয়া স্ববিরোধিতা মনে করছে বিএনপি