একদম হুবহু আওয়ামী লীগের দেখানো পথে চলছি: অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে সহুল আহমদ
Published: 23rd, July 2025 GMT
বর্তমান সরকারের আচরণ সেই পতিত সরকারের মতোই রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন লেখক ও গবেষক সহুল আহমদ। তিনি বলেছেন, ‘বর্তমান সরকার দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বুদ্ধিজীবী সরকার। তারা সারা জীবন মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেছে। তাদের নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা ছিল যে আমরা পরিবর্তনকালীন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারব। আমরা সবাই বিগত সরকারের সমালোচনা করতে করতে এ পর্যায়ে এসেছি। কিন্তু সরকার পতনের পর আমাদের আচরণ সেই পতিত সরকারের মতোই রয়ে গেছে।’
আজ বুধবার সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথাগুলো বলেন সহুল আহমদ। ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান: এক বছরের অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যৎ’ শীর্ষক এই গোলটেবিলের আয়োজন করে প্রথম আলো।
গোলটেবিল বৈঠকে সহুল আহমদ বলেন, ‘একাত্তর থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে আমাদের সংকট–পরবর্তী সময়ে ক্ষত সারানোর ব্যাপারটি শেখা উচিত ছিল। কিন্তু আমরা তা শিখতে পারিনি; বরং জুলাই–পরবর্তী সময়ে আমরা মুখে অজস্রবার আওয়ামী বয়ানের বাইরে যাব বলেও একদম হুবহু আওয়ামী লীগের দেখানো পথে চলছি। আওয়ামী লীগ যা যা করে গেছে, আমরা ঠিক তাই তাই করছি। মুজিববর্ষ উদ্যাপনের মতো করে জুলাই উদ্যাপন করছি।’
সহুল আহমদ আরও বলেন, বিগত ৫০ বছরে বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে সাধারণ বিষয় হচ্ছে ‘সহিংসতা’। দেশে এমন কোনো দল নেই, যাদের হাতে নাগরিকের রক্ত লেগে নেই। আবার প্রতিটি দলেরই কোনো না কোনোভাবে নির্যাতিত হওয়ার ইতিহাস আছে। দীর্ঘ সময়ের স্বৈরশাসনে অগণিত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। কাঠামোর অন্তর্ভুক্ত অনেকে এতে আক্রান্ত হয়েছেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষত পূরণ করা জরুরি।
গত এক বছরের অর্জন উল্লেখ করে সহুল আহমদ বলেন, ‘এই প্রথম আমরা নিজেরা নিজেদের সংকট সমাধানের চেষ্টা করছি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বাধীনভাবে মতামত রাখতে পারছি। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় কোনো ভয় না থাকলেও কিঞ্চিৎ সামাজিক ভয় যুক্ত হয়েছে আমাদের মধ্যে। কোনো মতামতের কারণে গোষ্ঠীগত বা সামাজিক আক্রমণের শিকার হওয়ার আশঙ্কা এখনো আছে। তবে রাষ্ট্রীয় পরিসর থেকে আমাদের আলোচনার জায়গাটা বড় হয়েছে।’
ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে সহুল আহমদ বলেন, ‘দেশে যে যখন ক্ষমতায় থাকে, সেই তখন বিচার পায়। যে পক্ষ হেরে যায়, সে বিচারের দাবিই করতে পারে না। কোনো অভিযুক্ত যতক্ষণ পর্যন্ত না ফেসবুকে ভাইরাল হচ্ছেন, বিচারক তাঁর দ্রুত বিচার করছেন না। সেই দিক থেকে দেখলে মোটাদাগে আমরা আসলে ন্যায়বিচারের দিকে যেতে পারিনি। কিন্তু এভাবে সমাজ ও রাষ্ট্রে আরও ক্ষত সৃষ্টি হচ্ছে, যা অপূর্ণ রেখে সামনে এগোনোর কথা ভাবা যায় না। অভ্যুত্থানে আঘাত পাওয়া ব্যক্তিদের পাশাপাশি অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতগুলোও পূর্ণ করতে হবে। যেন এগুলো সুদূর ভবিষ্যতে ফিরে না আসতে পারে, সে ব্যবস্থা করা জরুরি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র আম দ র আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
৪ কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১টি স্থাপনার নাম বদল
এবার একযোগে ৪ কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২১টি স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। গত সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ–সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ অধিশাখার ৯ ফেব্রুয়ারির জারি করা চিঠির নির্দেশনার আলোকে ৪ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ২১ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনার নাম পরিবর্তন করা হলো।
নাম পরিবর্তন হওয়া কলেজগুলো হলো
বরিশালের শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, খুলনার সরকারি জয়বাংলা কলেজ, কিশোরগঞ্জের জিল্লুর রহমান সরকারি মহিলা কলেজ ও রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ সরকারি কলেজ।
নাম পরিবর্তন হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্থাপনা হলো
বরগুনা সরকারি মহিলা কলেজের শেখ হাসিনা ছাত্রীনিবাস, বরগুনা সরকারি কলেজের শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাস, ঢাকা কলেজের শেখ কামাল হল ও লে. শেখ জামাল একাডেমিক ভবন, শরীয়তপুর সরকারি কলেজের শেখ রাসেল ছাত্রাবাস, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস ও শেখ লুৎফর রহমান একাডেমিক ভবন, সরকারি তিতুমীর কলেজের ড. ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান ভবন, শেখ কামাল প্রশাসনিক ভবন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাস, শেখ কামাল ছাত্রাবাস, ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস, নরসিংদী সরকারি কলেজের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হোস্টেল, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের বঙ্গবন্ধু ছাত্রাবাস, সরকারি দেবেন্দ্র কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস ও শেখ হাসিনা ছাত্রীনিবাস, চাঁদপুর সরকারি কলেজের শেখ হাসিনা ছাত্রীনিবাস ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা ছাত্রীনিবাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের শেখ হাসিনা একাডেমিক ভবন ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস, বৃন্দাবন সরকারি কলেজে দেশরত্ন শেখ হাসিনা একাডেমিক ভবন কাম পরীক্ষা হল, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ও শেখ ওয়াজেদ বিজ্ঞান ভবন, মৌলভীবাজার সরকারি কলেজের শেখ হাসিনা একাডেমিক কাম-এক্সামিনেশন হল, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের শেখ কামাল ছাত্রাবাস, শেখ হাসিনা ছাত্রীনিবাস, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস ও শেখ রাসেল ছাত্রনিবাস, দিনাজপুর সরকারি কলেজের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রীনিবাস, সরকারি হাজী আবদুল বাতেন কলেজের শেখ রাসেল ভবন, কক্সবাজার সরকারি কলেজের শেখ হাসিনা একাডেমিক ভবন ও শেখ হাসিনা ছাত্রীনিবাস, সরকারি বাঙলা কলেজের নবনির্মিত ভবন। এ ছাড়া যেসব সরকারি কলেজে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব আছে তার নাম হবে আইসিটি ল্যাব।
আরও পড়ুনসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের ৩৪০০০ শূন্য পদ পূরণে উদ্যোগ২৯ জুলাই ২০২৫গত বছরের ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ হাসিনাসহ তাঁর পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী লীগ নেতাদের নামে থাকা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করা হচ্ছে।
এদিকে গত ২৮ মে-এর প্রজ্ঞাপনে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় অবস্থিত সরকারি শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ ডিগ্রি কলেজের নামও রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির নতুন নাম দেওয়া হয় ‘কাপাসিয়া সরকারি ডিগ্রি কলেজ’। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নাম বদলের প্রতিবাদ করেন তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে ও সাবেক স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজসহ অনেকে। সমালোচনার মুখে পরে ১ জুলাই কলেজটির নাম বহাল রেখে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
তালিকা দেখুন এখানে
আরও পড়ুনকমনওয়েলথ ফেলোশিপে আবেদনের সুযোগ, মাসে ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকার সঙ্গে নানা সুবিধা৭ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুনএকাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে আবেদন শুরু, ফি-মেধা কোটা-ভর্তির যোগ্যতা-গ্রুপ নির্বাচন যেভাবে৪ ঘণ্টা আগে