র্যাবের পোশাকে রূপগঞ্জের স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মালমালসহ নগদ টাকা লুট
Published: 27th, July 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জর মুড়াপাড়া বাজারের জুয়েলারী ব্যবসায়ী সৈকত বিশ্বাসের নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার সহ ১৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
শনিবার রাতে ঢাকার তাঁতীবাজার থেকে লেগুনা করে বাড়ি ফিরে আসার পথে যাত্রাবাড়ি-ডেমরা সড়কের মৃধাবাড়ী এলাকায় দুর্বৃত্তদের কবলে পড়েন সৈকত বিশ্বাস।
ব্যবসায়ী সৈকত বিশ্বাস জানান, শনিবার ২৬ জুলাই রাতে ব্যবসায়ীক কাজের জন্য ঢাকার তাঁতী বাজার যান তিনি।
সেখানে পুরনো স্বর্ণ বিক্রি, ক্রয়কৃত ও হলমার্ক করা স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে যাত্রাবাড়ি-ডেমরা সড়কের মৃধাবাড়ী এলাকায় পৌঁছলে একটি মাইক্রোবাসে র্যাবের পোশাক পরিহিত ৭/৮জন লোক তাদের বহনকারী লেগুনা গাড়ির গতিরোধ করে।
পরে তাকে মারধর করে জোরপূর্বক লেগুনা থেকে নামিয়ে দুর্বৃত্তদের গাড়িতে উঠিয়ে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা স্বর্ণ বিক্রির নগদ ১লাখ ৭হাজার টাকা, ১ জোড়া রুপার পায়েল, স্বর্ণের দুইটি চেইন ও সাত ভরি স্বর্ণালংকারসহ ১৫ লক্ষাধিক টাকার মালামাল দুর্বৃত্তরা লুট করে নিয়ে যায়।
পরে মতিঝিল দিলকুশা এলাকায় তাকে ফেলে রেখে যায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে স্বজনরা যাত্রাবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করার পর পুলিশ তাকে উদ্ধার করে।
এ ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) খালেদ হাসান বলেন, দুর্বৃত্তদের গ্রেফতারে ও লুট হওয়া মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার জানান, র্যাবের পোশাক পরিহিত লুটপাটের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। দুর্বৃত্তদের চিহ্নিত করে তাদের গ্রেফতারে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র পগঞ জ ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ ব যবস য় স বর ণ
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি ট্রাম্পের
ভারত চলতি সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে ব্যর্থ হলে দেশটির ওপর ২৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ট্রাম্প বলেন, “তারা (ভারত) ২৫ শতাংশ শুল্ক দেবে।”
বুধবার (৩০ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন, চুক্তিতে পৌঁছালে ব্যর্থ হলে ভারত কি উচ্চ শুল্কের মুখোমুখি হবে? উত্তরে ট্রাম্প বলেন, “হ্যাঁ, আমার তাই মনে হয়।”
ভারতসহ আরো বেশ কয়েকটি দেশকে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ১ আগস্ট পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুবা বর্ধিত শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে।
আরো পড়ুন:
পুতিনকে এবার ১০ দিনের আল্টিমেটাম দিলেন ট্রাম্প
নিউ ইয়র্কে গুলিতে নিহত রতনের কুলাউড়ার বাড়িতে শোকের ছায়া
ভারতীয় ও আমেরিকান কর্মকর্তারা গত কয়েক মাস ধরে একটি বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনা করছেন, তবে এখনও কাঙ্ক্ষিত বাণিজ্যচুক্তি সম্পাদিত হয়নি। সোমবার মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার সিএনবিসি-কে বলেন, “ভারত তাদের বাজারের কিছু অংশ খুলে দিতে চাচ্ছে, আমরা আলোচনায় আগ্রহী। তবে কতটা অগ্রসর হতে তারা প্রস্তুত- সেটি আরো আলোচনা দরকার।’
ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের উচ্চ শুল্ক নীতির সমালোচনা করে আসছেন। তার অভিযোগ, ভারত যুক্তরাষ্ট্রের ভালো বন্ধু, কিন্তু বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের তুলনায় ভারত মার্কিন পণ্যে সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করে।
ট্রাম্প বলেন, “এখন আমি দায়িত্বে আছি, তাই ভারত তা করতে পারবে না।” তিনি ভারতকে ‘শুল্কের রাজা’ ও বাণিজ্য সম্পর্কের ‘বড় অপব্যবহারকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভারতীয় পণ্যে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছিলেন ট্রাম্প, যা পরে স্থগিত করা হয়। তবে নতুন করে তিনি আবারো কড়া অবস্থান নিচ্ছেন।
উভয় পক্ষই বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য দৌড়ঝাঁপ করছে, কর্মকর্তারা আলোচনাকে কখনো ‘ইতিবাচক’, আবার কখনোবা ‘পরিমিত’ বলে বলে মনে করছেন।
মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার স্বীকার করেছেন যে- যদিও তিনি আগে বলেছিলেন ভারতের সঙ্গে একটি চুক্তি ‘আসন্ন’, কিন্তু “এটি বোঝা উচিত যে, দিল্লির বাণিজ্য নীতি ‘অনেক দিন ধরেই সুরক্ষাবাদী’ এবং তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করার’ ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে।”
গ্রিয়ার জানান, ট্রাম্প এমন চুক্তি নিশ্চিত করার দিকে মনোনিবেশ করছেন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অন্যান্য দেশের বাজারকে উল্লেখযোগ্যভাবে উন্মুক্ত করবে।
উভয় দেশের জন্যই কৃষি ও দুগ্ধ খাত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ওয়াশিংটন ভারতের কৃষি খাতে আরো বেশি প্রবেশাধিকারের জন্য চাপ দিচ্ছে। কিন্তু ভারত দুগ্ধ ও কৃষিখাতে বড় পরিসরে বাজার উন্মুক্ত করতে অনাগ্রহী। আমদানির ওপর কঠোর বিধিনিষেধ দিয়ে মোদি সরকার সংবেদনশীল কৃষি খাত রক্ষায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, কারণ এই খাতে বিপুলসংখ্যক ভারতীয়ের জীবিকা জড়িত।
গত সপ্তাহে ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল সিএনবিসিকে বলেন, কৃষিক্ষেত্র ভারতের জন্য সংবেদনশীল এবং সরকার কৃষকদের স্বার্থ ‘ভালোভাবে সুরক্ষিত’ নিশ্চিত করবে।
গোয়েল আরো বলেন, ভারত শিগগির ওয়াশিংটনের সঙ্গে একটি চুক্তি করার বিষয়ে আশাবাদী।
যুক্তরাষ্ট্র ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার। ২০২৪ সালে দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১৯০ বিলিয়ন ডলার। ট্রাম্প এবং মোদি এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি করে ৫০০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন।
ভারত ইতিমধ্যেই বোর্বন হুইস্কি ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্ক কমিয়েছে, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখনও ভারতের সঙ্গে ৪৫ বিলিয়ন ডলার বাণিজ্য ঘাটতি চালিয়ে যাচ্ছে, যা ট্রাম্প কমাতে আগ্রহী।
ঢাকা/ফিরোজ