স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের পর সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় চারটি রপ্তানিনির্ভর খাতের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি উচ্চ পর্যায়ের আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করেছে সরকার।

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য এবং ফার্মাসিউটিক্যালস খাতের রপ্তানি সক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায়, তা পর্যালোচনার জন্য ১৫ সদস্যের এ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। গত ২৯ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থবিভাগের মনিটরিং সেল থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ ঘটাবে। এরপর থেকে রপ্তানিনির্ভর নগদ সহায়তা বা ভর্তুকি প্রদান আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির পরিপন্থী হয়ে উঠবে। এ প্রেক্ষাপটে বিকল্প কৌশল নির্ধারণে এই চারটি খাতকে বাছাই করা হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মুখ্য সচিবকে সভাপতি করে গঠিত কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন—বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, শিল্প সচিব, কৃষি সচিব, বস্ত্র ও পাট সচিব, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, বিএসটিআই মহাপরিচালক, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিসিক চেয়ারম্যান এবং এফবিসিসিআই সভাপতি। কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক।

কমিটির কার্যবিধিতে বলা হয়েছে—
ক) জমাকৃত প্রতিবেদনে উল্লেখিত সুপারিশসমূহ থেকে সরকারের সক্ষমতা বিবেচনায় গ্রহণযোগ্য সুবিধা নির্ধারণ করা হবে।
খ) এসব সুবিধা প্রদানের জন্য সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে।
গ) গৃহীত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থাসমূহের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে কমিটি।
ঘ) প্রয়োজন হলে প্রতিবেদন বহির্ভূত নতুন সুপারিশও বাস্তবতা বিবেচনায় অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ থাকবে।
ঙ) কমিটি প্রয়োজনে এক বা একাধিক সদস্য কো-অপ্ট করার এখতিয়ার রাখবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এলডিসি-পরবর্তী বাস্তবতায় টেকসই রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে, নীতিগত স্থিতিশীলতা ও খাতভিত্তিক প্রস্তুতির কোনো বিকল্প নেই। এই উদ্যোগকে তারা সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন।
এদিকে, বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রস্তুতি বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ঢাকা/হাসনাত/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের (রিভিউ) ওপর পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল বুধবার দিন রেখেছেন আপিল বিভাগ। আজ মঙ্গলবার শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের বেঞ্চ পরবর্তী ওই দিন ধার্য করেন।

এর আগে গত ১৮ মে শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ শুনানির জন্য ১ জুলাই দিন ধার্য করেছিলেন। ধার্য তারিখে বিষয়টি শুনানির জন্য রিভিউ আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবীর সময়ের আরজির পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ ১৫ জুলাই পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন। আজ বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।

ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স সংশোধন করে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। পরে ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। রায়ে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক পদধারীদের পদক্রম ওপরের দিকে রাখা ও অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়। পাশাপাশি জেলা জজদের পদক্রম আট ধাপ উন্নীত করে সচিবদের সমান করা হয়।

আপিল বিভাগের রায়ের পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতির পদক্রম এক ধাপ উন্নীত করে জাতীয় সংসদের স্পিকারের সমান এবং রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক ও মহান স্বাধীনতাসংগ্রামে অংশগ্রহণ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন) পদক্রমে যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে উল্লেখ করা হয়।

ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) তৎকালীন চেয়ারম্যান ২০১৭ সালে পৃথক আবেদন করেন। রিভিউ আবেদনে রাষ্ট্রের ৯০ জন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল পক্ষভুক্ত হন। পুনর্বিবেচনা চেয়ে করা আবেদনের ওপর গত ২৭ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়।

আজ আদালতে রিভিউ আবেদনকারী মন্ত্রিপরিষদ সচিবের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন শুনানি করেন। রিট আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেলদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম শুনানিতে অংশ নেন।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী, ১৯৮৬ সালে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে। রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর একই বছরের ১১ সেপ্টেম্বর তা জারি করা হয়। পরে বিভিন্ন সময়ে তা সংশোধন করা হয়।

সর্বশেষ সংশোধন করা হয় ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। সংশোধিত এই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরির ক্ষেত্রে সাংবিধানিক পদ, সংবিধান কর্তৃক স্বীকৃত ও সংজ্ঞায়িত পদগুলো প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিচের ক্রমিকে রাখা হয়েছে—এমন উল্লেখ করে এর বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের তৎকালীন মহাসচিব মো. আতাউর রহমান ২০০৬ সালে রিট করেন।

রিটের চূড়ান্ত শুনানি শেষে ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আট দফা নির্দেশনাসহ ১৯৮৬ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (সংশোধিত) অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ ২০১১ সালে আপিল করে। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি আপিল বিভাগ রায় দেন। এ রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে ২০১৭ সালে করা আবেদনের ওপর শুনানি চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আসামির কাঠগড়ায় সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হকের ৪৫ মিনিট
  • পরবর্তী সরকারের পক্ষে এত সহজে সংস্কার আকাঙ্ক্ষাকে উপেক্ষা করা সম্ভব হবে না: আসিফ নজরুল
  • বিসিআইসির নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ
  • ৪৪তম বিসিএস: মনোনীত প্রার্থীদের তথ্য চেয়ে পুনরায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
  • ‘আগামীর বাংলাদেশে মিডিয়াকে দালাল হিসেবে দেখতে চাই না’ 
  • ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ নিয়ে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদনের পরবর্তী শুনানি বুধবার
  • মাইলস্টোনে দগ্ধ ৩৩ জন এখনো ভর্তি, আইসিইউতে ৩
  • শেখ হাসিনার অডিওগুলো শুনলে বোঝা যায়, তাঁর এখনো প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছা আছে: আইন উপদেষ্টা
  • দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্র্যাক ব্যাংকের মুনাফা বেড়েছে