নেতা-কর্মীদের মতের মূল্য না দিলেও জি এম কাদের স্ত্রীর মতামত প্রাধান্য দেন: আনিসুল ইসলাম
Published: 1st, August 2025 GMT
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে অধিকাংশ দলের নেতারাই দেশের গণতন্ত্রের কথা বলেন। কিন্তু নিজ দলে স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছেন। জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের তার উদাহরণ। তিনি সারাক্ষণ মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন, কিন্তু নিজে দল পরিচালনা করেন স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায়। তিনি নিজেকে দাবি করেন দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক নেতা। কিন্তু দলের নেতা-কর্মীদের সামান্য মতামতের মূল্য তাঁর কাছে না থাকলেও তিনি নিজের স্ত্রীর মতামতকে প্রাধান্য দেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর গুলশানের হাওলাদার টাওয়ারে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ কথা বলেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। আজ শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, এটা ছিল জাতীয় পার্টির যৌথ সভা। সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিটি পাঠিয়েছেন এম এ রাজ্জাক খান। তাঁর পরিচয়ে জাতীয় পার্টির দপ্তর সম্পাদক লেখা হয়েছে।
জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের দলীয় সব ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রমের ওপর গত বুধবার অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ। আদালতের এ আদেশের পর সংশ্লিষ্ট নেতারা বলেন, জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের এখন পর্যন্ত যাঁদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছেন, তা আইনিভাবে বৈধ নয়। ফলে তিনি সম্প্রতি দলের জ্যেষ্ঠ কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কেন্দ্রীয় নেতা সোলাইমান আলম শেঠ, জহিরুল ইসলাম, নাজমা আকতার, মোস্তফা আল মাহমুদ, দপ্তর সম্পাদক রাজ্জাক খানসহ যে ১১ জন নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন, তাঁরা স্বপদে বহাল রইলেন।
রাজ্জাক খানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকালের সভায় জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, দেশে প্রতিদিন খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজির মহোৎসব চলছে। এর মধ্যে চলছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। দেশের সাধারণ মানুষ আজ দিশাহারা। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নেই। সাধারণ মানুষকে আশা-ভরসা দেওয়ার মতো রাজনৈতিক দল একমাত্র জাতীয় পার্টি। তাঁরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৃহত্তর ঐক্য করে জাতীয় পার্টিকে পরিচালিত করবেন। তাঁরা কোনো একক নেতৃত্বে বিশ্বাসী নন। আগামী দিনে এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টি পরিচালিত হবে যৌথ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে, যেখানে থাকবে তৃণমূলের মতামতের প্রাধান্য।
আরও পড়ুনজাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় জি এম কাদেরের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা১৭ ঘণ্টা আগেসংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, জি এম কাদের স্বৈরতান্ত্রিক কায়দায় দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের বহিষ্কার করেছিল। কিন্তু আদালতের রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আর স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার পরাজয় হয়েছে। এখন থেকে জাতীয় পার্টিতে কোনো কর্তৃত্ববাদ, স্বৈরতন্ত্রের স্থান নেই। জাতীয় পার্টির তৃণমূলের লাখ লাখ নেতা-কর্মী স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তাঁরা যেমন দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করতে চান, তার আগে নিজ দলে স্বৈরতন্ত্রের কবর রচনা করে গণতান্ত্রিক চর্চা প্রতিষ্ঠিত করতে চান।
আরও পড়ুনশামীম হায়দার পাটোয়ারীকে জাতীয় পার্টির মহাসচিব করলেন জি এম কাদের০৭ জুলাই ২০২৫সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সভায় আরও বক্তব্য দেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন, জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান, নাসরিন জাহান, লিয়াকত হোসেন, এ টি ইউ তাজ রহমান, শফিকুল ইসলাম, নাজমা আকতার, মোস্তফা আল মাহমুদ, জহিরুল ইসলাম, আরিফুর রহমান খান, মাসরুর মাওলা, জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা সরদার শাহজাহান, জাপার ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, যুগ্ম মহাসচিব মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এম ক দ র পর চ ল র জন ত মত মত রহম ন গঠন ক
এছাড়াও পড়ুন:
এমন তো হবার কথা ছিল না: তারেক রহমান
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে জনমনে সৃষ্ট সংশয়, সন্দেহ গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শেষ পর্যন্ত কোনো অগণতান্ত্রিক কিংবা অপশক্তির কাছে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের পথে হাটতে হয় কি-না, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন তারেক রহমান। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে মাঠে থাকা সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোকে এমন বিপদের কথাও স্মরণ রাখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তারেক রহমান। লন্ডন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিএনপি।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মানুষের উদ্বেগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘পরাজিত পলাতক স্বৈরাচারের শাসন আমলে জনগণের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কোনোই আগ্রহ ছিল না। বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় জনমনে কোনো কোনো ক্ষেত্রে জিজ্ঞাসা বাড়ছে, যথাসময়ে কি নির্বাচন হবে?... এমন তো হবার কথা ছিল না।’
বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘উদ্বেগ এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশেও বর্তমানে বিএনপির বিজয় ঠেকাতে সংঘবদ্ধ অপপ্রচার এবং অপকৌশল দৃশ্যমান হতে শুরু করেছে।’
দেশে প্রতিনিয়ত একের পর এক নিত্য নতুন শর্ত জুড়ে দিয়ে গণতন্ত্র উত্তরণের পথকে সংকটাপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান। তবে তাঁর বিশ্বাস, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তিতে বিশ্বাসী নাগরিকেরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো ষড়যন্ত্রই বিএনপিকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।
শুধু বিএনপির বিজয় ঠেকাতে গিয়ে পতিত পরাজত পলাতক স্বৈরাচার দেশে ‘ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে বিএনপি দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে মন্তব্য করে তারেক রহমান বলেন, তবে বিএনপির প্রতি দেশের গণতন্ত্র ও স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণের আস্থা, ভালোবাসা থাকায় সে সংকট কাটিয়েছে তাঁর দল।
তারেক রহমান বলেন, ‘দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি শুরু থেকেই ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার স্বার্থে সর্বোচ্চ ছাড় দিয়ে একদিকে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতার পথ বেছে নিয়েছে। অপরদিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও যতটুকু সম্ভব, যতটুকু যথাসাধ্য সম্ভব আমাদের অবস্থান থেকে আমরা সহযোগিতা করে আসছি।’
প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন ও নতুন সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচির অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আজ রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে