ব্যবসায়ীকে বুকসমান বালুতে পুঁতে নির্যাতন, টাকা আদায়, অভিযোগ বিএনপি নেতা ও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে
Published: 2nd, August 2025 GMT
যশোরের অভয়নগরে এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বুকসমান বালুতে পুঁতে রেখে কয়েক দফায় চার কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পদ স্থগিত হওয়া স্থানীয় এক বিএনপি নেতা ও এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ব্যবসায়ীর স্ত্রী সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর ওরফে টিপু (৪৮) নওয়াপাড়া এলাকার জাফ্রিদী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী। তিনি ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগ করেছেন। এলাকা ছেড়ে গেছেন তিনি।
ঘটনার বিচার চেয়ে গত ৩১ জুলাই অভয়নগরের রাজঘাট সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীরের স্ত্রী আসমা খাতুন। অভিযোগে তিনি বলেন, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে সৈকত হোসেন ওরফে হিরা নামে এক ব্যক্তি তাঁর স্বামীকে কৌশলে নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির (পদ স্থগিত) সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান জনির ব্যক্তিগত কার্যালয়ে নিয়ে যান। সেখানে আসাদুজ্জামান তাঁকে মারধর করেন এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দুই কোটি টাকা দাবি করেন। এরপর আসমা খাতুন সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে আসাদুজ্জামানের প্রতিষ্ঠানের হিসাবে দুই কোটি টাকা পাঠান। টাকা পেয়ে তাঁরা শাহনেওয়াজ কবীরকে ছেড়ে দেন।
আসমা খাতুন অভিযোগে বলেন, গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টার দিকে তাঁর স্বামী চলিশিয়া থেকে মোটরসাইকেলে নওয়াপাড়া বাজারে যাওয়ার পথে সৈকত তাঁর পথ রোধ করেন। এরপর বেলা ৩টা পর্যন্ত তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে জানতে পারেন, তাঁর স্বামীকে বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামানের কনা ইকোপার্কে নেওয়া হয়েছে। আসমা সেখানে গেলে জনি, সম্রাট হোসেন ও নওয়াপাড়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মফিজ উদ্দিন তাঁর ওপর আগ্নেয়াস্ত্র ঠেকিয়ে হামলা চালান।
এরপর শাহনেওয়াজ কবীরের বুকপর্যন্ত গর্ত খুঁড়ে বালু চাপা দিয়ে আরও দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন বলে অভিযোগ করেন আসমা খাতুন। তিনি বলেন, এ সময় তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ বাধ্য হয়ে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপককে ফোন করে টাকা দিতে বলেন। সাংবাদিক মফিজের হিসাব নম্বরে পূবালী ব্যাংক থেকে ৬৮ লাখ ও সাউথ বাংলা ব্যাংক থেকে ৩২ লাখ টাকা পাঠানো হয়। এ সময় সাংবাদিক মফিজ আরও এক কোটি টাকার চেক আদায় করেন। এরপর কাউকে কিছু বললে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেন।
প্রথম আলোকে আসমা খাতুন বলেন, ‘বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনি ও সাংবাদিক মফিজের নেতৃত্বে কয়েকজন আমার ব্যবসায়ী স্বামীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কয়েক দফায় চার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। আমার স্বামী ভয়ে এলাকাছাড়া। আমরাও চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে আছি। ব্যবসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। চার শতাংশ জমির ওপর বাড়ি ছাড়া আর কিছুই এখন নেই আমাদের। আমাদের একমাত্র ছেলে বিবিএ পড়ে। ছেলের বউ বিএ পড়ছে। তাদের পরীক্ষার ফরম পূরণ সামনে। সেই ফরম পূরণের টাকা পর্যন্ত এখন আমার কাছে নেই। আমরা একেবারে পথে বসে গেছি। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।’
এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান জনির মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে অভিযুক্ত সাংবাদিক মফিজ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আপনি যাকে খুঁজছেন আমি সে মফিজ না।’ এরপর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
আসমা খাতুন অভিযোগ করেন, ‘সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু তিন দিনেও ওখান থেকে কেউ যোগাযোগ করেননি। থানায় গিয়ে ওসিকে (ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) সব কাগজপত্র দিয়েছি। মৌখিকভাবেও সব জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল আলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ এখনো কেউ করেননি। তবে মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। এখনই এ বিষয়ে আর কিছু বলতে পারছি না।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আস দ জ জ ম ন ব যবস য় নওয় প ড় য গ কর ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
জন্মদিনে দেশে নেই দেশবরেণ্য অভিনয়শিল্পী ববিতা। তিনি এখন আছেন কানাডায়, একমাত্র ছেলে অনিকের কাছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ছেলের কাছে উড়াল দিয়েছেন ববিতা। থাকবেন আগামী নভেম্বর পর্যন্ত। এরপর দেশবরেণ্যে এই অভিনয়শিল্পীর ঢাকায় ফেরার কথা। আজ বুধবার কানাডার স্থানীয় সময় সকালে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপে কথা প্রসঙ্গে জানালেন ববিতা।
আজ ৩০ জুলাই ববিতার জন্মদিন। কয়েক বছর ধরে এই দিনে ঢাকায় থাকলে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের নিয়ে গুলশানের বাসায় গান শোনা, আড্ডা দেওয়া, খাওয়াদাওয়া হয়। এর বাইরে পরিচিতজনেরা শুভেচ্ছা জানান। এবার ওসব নেই, যেহেতু কানাডায় আছেন তিনি। ববিতা প্রথম আলোকে জানান, জন্মদিন নিয়ে সেভাবে কোনো ধরনের পরিকল্পনা নেই। কখনো এটা থাকেও না। বললেন, ‘আমার ছেলের আজকে অফিস আছে। বিকেল পাঁচটায় ওর অফিস শেষ হবে। এরপর মা–ছেলে দুজন মিলে ঘুরতে যাব। ছবি তুলব। রাতের খাবার খাব। কেক কাটব। তারপর দুজন মিলে বাসায় ফিরব। ছেলের কাছে আছি, এটাই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগার।’
ফরিদা আক্তার ববিতা