‘এত রোগী আসবেন ভাবতে পারিনি, চারদিকে কেবল চিৎকার-আহাজারি’
Published: 4th, August 2025 GMT
‘আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের ১৬ জুলাই থেকে হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ওয়ার্ডে সেবা দিচ্ছিলাম। যখনই বেশি হতাহত আসছিলেন, আমরা ওই ওয়ার্ডে গিয়ে কাজ করেছি। তবে ৪ আগস্ট একটা ভয়াবহ দিন। ওই দিন এত রোগী আসবেন ভাবতে পারিনি, চারদিকে কেবল চিৎকার-আহাজারি। এর মধ্যে সেবা দিতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছি আমরা।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে এফসিপিএস কোর্সে অধ্যয়নরত চিকিৎসক মো.
সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত বছরের ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেটে ছাত্র-জনতার কর্মসূচি ছিল। আগে থেকে এই কর্মসূচি ঠেকানোর ঘোষণা দিয়েছিল ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো। একটি সংঘর্ষ আসন্ন ছিল, তা নগরবাসী টের পেয়েছিলেন আগেই।
সকাল থেকেই হাজার হাজার ছাত্র-জনতা সেখানে জড়ো হন। তাঁদের হটাতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরাও বলপ্রয়োগ শুরু করেন। বেলা ১১টার পর থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়। সেই সঙ্গে উভয় পক্ষে পাথর নিক্ষেপ চলতে থাকে। কেউ গুলি, কেউবা পাথরে আহত হয়ে পড়ে যান। কেউবা প্রাণভয়ে ছুটতে শুরু করেন।
সকাল থেকেই হাজার হাজার ছাত্র-জনতা সেখানে জড়ো হন। তাঁদের হটাতে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনীর পাশাপাশি ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরাও বলপ্রয়োগ শুরু করেন। বেলা ১১টার পর থেকে প্রচণ্ড গোলাগুলি শুরু হয়। সেই সঙ্গে উভয় পক্ষে পাথর নিক্ষেপ চলতে থাকে। কেউ গুলি, কেউবা পাথরে আহত হয়ে পড়ে যান। কেউবা প্রাণভয়ে ছুটতে শুরু করেন।বেলা সাড়ে ১১টা থেকে চমেক হাসপাতালে আহত ব্যক্তিদের নিয়ে আসা শুরু হয়। কেউ মাথায়, কেউ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে চিকিৎসা নিতে আসেন। কাউকে আনা হয় অজ্ঞান অবস্থায়। চিকিৎসক মিজানুর রহমান ওই দিন সকাল থেকে চমেক হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি বিভাগে ছিলেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘আহত ব্যক্তিরা হাসপাতালের ওসেক (ওয়ান–স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার) হয়ে ক্যাজুয়ালটিতে চলে আসেন। একের পর এক আহত ব্যক্তি আসতে থাকেন। প্রাথমিক কাজ ছিল তাঁদের ইনজুরি শনাক্ত করে সেই অনুযায়ী সেবা দেওয়া। সঙ্গে সঙ্গে ওয়ার্ডের অস্ত্রোপচার কক্ষে তাঁদের ঢোকানো হচ্ছিল। যাঁদের ফ্র্যাকচার ছিল, তাঁদের প্লাস্টার দেওয়া, কাউকে সেলাই দেওয়া, আবার কারও জরুরি অস্ত্রোপচার চলছিল সমানতালে।’
গত বছরের ৪ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট এলাকায় ছাত্র–জনতার অবস্থানউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আর কত অঙ্ক মেলাবে বাংলাদেশ
যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ—বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের জন্যই শৈশবের দুঃসহ স্মৃতি। পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে অনেকেই অঙ্কের কঠিন সব ধাধা থেকে বেঁচে যাওয়ার স্বস্তির শ্বাস ছাড়েন— বিশ্ববিদ্যালয়ে পা রেখে গণিতের সমীকরণের পথ পেরোতে হবে না এমন বিষয় খোঁজেন কেউ কেউ।
কিন্তু তিনি যদি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সমর্থক হন? তাহলে তাঁর আর ওই সুযোগ কই। আগে তো তাও টিউশনে গিয়ে আলাদা করে অঙ্কটা বুঝে নেওয়া যেত। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটের অঙ্কটা মেলাতে সে সাহায্যও নেই। উল্টো উচ্চরক্তচাপ মেপে নেওয়ার মেশিনটা কোথায় আছে, অল্প বয়সেই শুরু করতে হয় সেই খোঁজ।
হৃদয়ে যাঁদের রোগ আছে, তাঁদের শঙ্কা থাকে হার্ট অ্যাটাকের। কে কত রান করলে কী হবে, কার জয়ে কী ক্ষতি—এসব সমীকরণ মেলাতে মেলাতে পার হয় বহু নির্ঘুম রাত। বিশ্বাস হচ্ছে না? ক্রিকেট সংক্রান্ত কোনো হ্যাশট্যাগ দিয়ে ফেসবুকে সার্চ করুন কাল রাতে আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা এশিয়া কাপের ম্যাচের আগে-পরেও এমন কত অভিজ্ঞতা ঘুরে বেড়াচ্ছে সামাজিক মাধ্যমটিতে।
আফগানিস্তানের ইনিংসের শেষ ওভারে মোহাম্মদ নবী যখন ৫ ছক্কা হাঁকিয়ে দিলেন দুনিত ভেল্লালাগেকে—নবম-দশম শ্রেণির অঙ্কে ফাঁকি দেওয়া ছেলেটাও নিশ্চয়ই বসে গিয়েছিলেন অঙ্ক মেলাতে। এখন যদিও কাজটা সহজ, কোনো এক ব্রাউজারে ক্লিক করলেই ভেসে ওঠে লেখাটা ‘শ্রীলঙ্কা যদি…বাংলাদেশ তাহলে…।’
আরও পড়ুনসুপার ফোরে বাংলাদেশ৮ ঘণ্টা আগেযদি-কিন্তুর সমীকরণ মেলানো সহজ হয়ে গেলেও ম্যাচের দুশ্চিন্তা কমানোর কোনো অ্যাপ তো আর বের হয়নি। দুনিয়া আধুনিক হয়ে গেছে— কিন্তু বাংলাদেশের সমর্থকদের ম্যাচ জেতানোর রীতি তো রয়ে গেছে সেকেলেই। ‘এই এখান থেকে কিন্তু উঠবে না, উঠলেই আর শ্রীলঙ্কা জিতবে না’—কিছু মুহূর্তের জন্য আবুধাবির প্রেসবক্সের পাশের গ্যালারিতে গিয়েও শোনা গেল তা।
নিজের দলের হলেও তা না হয় মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু ব্যস্ত জীবনে প্রতিদিন কি কাজ বাদ দিয়ে ক্রিকেট ম্যাচ দেখা যায়? বাংলাদেশের সমর্থকদের করতে হয় তাও। কারণ তাঁদের ভাগ্য তো আর নিজেদের হাতে না। এবারের এশিয়া কাপেই দেখুন, দুটো ম্যাচ জিতেও স্বস্তি ছিল না একদমই।
হংকংয়ের বিপক্ষে সহজে জিততে পারেনি লিটন দাসের দল