ডাকসু নির্বাচন: বাতিল হতে পারে জুলিয়াস সিজারের প্রার্থিতা
Published: 25th, August 2025 GMT
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে স্বতন্ত্র ভিপি (সহ-সভাপতি) পদপ্রার্থী নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা জুলিয়াস সিজারের প্রার্থিতা বাতিলের জন্য সুপারিশ করেছে ট্রাইবুন্যাল।
ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বাতিলকৃত প্রার্থীদের আপিল নিষ্পত্তি ও আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগগুলো নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গঠিত ট্রাইব্যুন্যাল কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
৩ দাবিতে গোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
ডাকসু নির্বাচনে লড়ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৯ শিক্ষার্থী
সোমবার (২৫ আগস্ট) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডাকসু নির্বাচনের চিফ রিটার্নিং কর্মকর্তা অধ্যাপক ড.
তিনি বলেন, “যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, সে বিষয়গুলো সমাধানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করেছেন। এই কাজ তো আমাদের না। তারা আমাদের কাছে সুপারিশ করেছে। আমরা এখন বিষয়গুলো নিয়ে বসব। তবে ট্রাইবুন্যাালের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে নির্বাচন কমিশন বাধ্য।”
জানা যায়, স্বাধীন এই ট্রাইব্যুন্যাল কমিটি জুলিয়াস সিজার ছাড়াও বায়েজিদ বোস্তামী নামের আরো একজনের প্রার্থিতা বাতিলের সুপারিশ করেছে। একইসঙ্গে তাদের নাম ভোটার তালিকা থেকেও বাদ দেওয়ার বিষয়েও সুপারিশ এসেছে। মূলত নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সংশ্লিষ্টতা থাকায় এ সুপারিশ করা হয়েছে।
ট্রাইবুন্যাল কমিটির সুপারিশ বলছে, অপরাধ বিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বায়েজিদ বোস্তামী সন্ত্রাসের দায়ে নিষিদ্ধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেও জড়িত ছিল। অনুরূপ ব্যক্তিদের নাম ভোটার তালিকা থেকে ইতোপূর্বে বাদ দেওয়া হয়েছে। এজন্য এই দুই শিক্ষার্থীর নামও ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে।
ফলে মো. জুলিয়াস সিজার তালুকদার ও বায়েজিদ বোস্তামীর প্রার্থিতা বাতিল করার জন্য সুপারিশ করা হলো।
সুপারিশ আরো বলা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আসাদুজ্জামান জিলানী ও মো. খায়রুল আলমের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী কর্তৃক আনিত অভিযোগে যথাযথ প্রমাণাদি না থাকায় এবং অভিযোগপত্রে অভিযোগকারীর স্বাক্ষর না থাকায় কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে যথাযথ চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প র শ কর
এছাড়াও পড়ুন:
আসাদুজ্জামান নূরের চারটি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দের আদেশ
সাবেক সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরের ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি জব্দ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাঁর নামে থাকা ১৬টি ব্যাংক হিসাবও অবরুদ্ধ করার আদেশ দেওয়া হয়েছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ আজ সোমবার এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, আসাদুজ্জামান নূরের অর্জিত সম্পদ সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত করা যায়নি। তবে তদন্তকালে তাঁর নামে পাওয়া স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ যেন তিনি হস্তান্তর ও স্থানান্তর করতে না পারেন, সে জন্য তা জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন।
দুদকের পক্ষ থেকে আদালতকে লিখিতভাবে বলা হয়েছে, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার সম্পদ অর্জন ও ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে আসাদুজ্জামান নূরের বিরুদ্ধে গত ৩০ জুলাই মামলা করেছে দুদক। তাঁর নামে ৪টি ফ্ল্যাট ও ১০ কাঠা জমি রয়েছে। আরও রয়েছে তাঁর ১৬টি ব্যাংক হিসাব।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূর ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৫ কোটি ৩৭ লাখ ১ হাজার ১৯০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন এবং তা নিজের দখলে রেখেছেন। এ ছাড়া তাঁর নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৯টি হিসাবে ১৫৮ কোটি ৭৮ লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে। এই লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের অভিযোগ আনা হয়েছে, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, আসাদুজ্জামান নূরের বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৮৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৩ টাকা জমা এবং ৭৩ কোটি ৫ লাখ ৮১ হাজার ৩০৫ টাকা উত্তোলন হয়েছে। এসব লেনদেনের উৎস অস্পষ্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০০৩-০৪ করবর্ষ থেকে ২০২৩-২৪ করবর্ষ পর্যন্ত আসাদুজ্জামান নূরের বৈধ আয় ছিল ৩২ কোটি ৯৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৮ টাকা। এ সময়ে তাঁর পারিবারিক ব্যয় ছিল ৯ কোটি ৩২ লাখ ২৫ হাজার ৭৬১ টাকা। সে অনুযায়ী নিট সঞ্চয় দাঁড়ায় ২৩ কোটি ৬৪ লাখ ৫৭ হাজার ৯২৭ টাকায়। অথচ তাঁর অর্জিত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২৯ কোটি ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৭ টাকা। এতে ৫ কোটি ৩৭ লাখ টাকার উৎস পাওয়া যায়নি বলে দুদক জানিয়েছে।
২০০১ সালে নীলফামারী-২ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আসাদুজ্জামান নূর। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাবেক মন্ত্রী ও এমপিদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার শুরু করে দুদক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো। এরই ধারাবাহিকতায় গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর রাতে রাজধানীর বেইলী রোডে নিজ বাসা থেকে আসাদুজ্জামান নূরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আরও পড়ুনআট মাসে ১৯২ একর জমি, ২৮ ভবন ও ৩৮ ফ্ল্যাট জব্দ ১৭ মে ২০২৫