গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র উদঘাটন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে দিনব্যাপী এ অভিযান পরিচালনা করে দুদক। সহকারী পরিচালক এনামুল হকের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি বিশেষ দল এ অভিযানে অংশ নেয়।

অভিযান শেষে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের ব্রিফ করেন সমন্নিত গাজীপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক এনামুল হক। 

তিনি বলেন, “প্রথমে সকাল ৯টা থেকে ছদ্মবেশে টানা দুই ঘণ্টা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবজারভেশন করি। তাতে বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা আমরা পাই। যেমন জরুরি বিভাগে যারা সহকারী হিসেবে কাজ করে, তারা ব্যান্ডেজ বাঁধা বা ওষুধ দেওয়ার পর ৫০/১০০ টাকা জোর করে নিচ্ছে।

‘যে অভিযোগগুলো পেয়েছি তা আমাদের ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে জানানো হবে। তারা পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন। জনগণের অর্থ ও সেবার স্বচ্ছতা নিশ্চিতে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দুদকের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।” 

তিনি আরো বলেন, “সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান পরিচালনা করেছি। তদন্তে অভিযোগগুলোর সত্যতাও মিলেছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নিজেও অনিয়মের দায় স্বীকার করেছেন।”

অভিযোগগুলো ছিল- কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত দেরিতে অফিসে আসেন, ফলে রোগীরা সঠিক সময়ে সেবা পান না; সরকার নির্ধারিত তিন টাকার পরিবর্তে রোগীদের কাছ থেকে পাঁচ টাকা করে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে; হাসপাতালের গুরুত্বপূর্ণ আল্ট্রা-সনোগ্রাম ও এক্স-রে মেশিন দীর্ঘদিন ধরে অকেজো পড়ে আছে। ফলে রোগীদের বাইরের বেসরকারি হাসপাতালে বা ক্লিনিকে উচ্চমূল্যে পরীক্ষা করাতে হচ্ছে; রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারের মান অত্যন্ত নিম্নমানের এবং পরিমাণেও কম; রান্নাঘর ও হাসপাতালের পরিবেশের ছিল অস্বাস্থ্যকর ও নোংরা এবং স্টোরের মজুত মালামালের হিসাবের সঙ্গে বাস্তবতার মিল পাওয়া যায়নি।

অভিযোগের ব্যাপারে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

রেজওয়ানা রশিদ বলেন, “আমি সবাইকে দায়িত্ব ভাগ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। তাদের ব্যর্থতার কারণে পুরো দায়ভার আমাকে নিতে হচ্ছে।”

ঢাকা/রফিক/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর মকর ত উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ছুটি না পেয়ে অসুস্থ শ্রমিকের মৃত্যু, মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ 

নারায়ণগঞ্জের বন্দরের মদনপুর এলাকায় লারিজ ফ্যাশনের পোশাক কারখানায় অসুস্থ হয়ে রিনা আক্তার (৩২) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকরা। 

সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে তারা মদনপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেন। খবর পেয়ে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

প্রত্যক্ষদর্শী ও শ্রমিকরা জানিয়েছেন, রিনা আক্তার অসুস্থ অবস্থায় কারখানায় কাজ করছিলেন। রোববার তিনি বেশি অসুস্থতা অনুভব করলে ছুটি চেয়ে আবেদন করেন। তবে, কর্তৃপক্ষ ওই শ্রমিকের আবেদনে সাড়া না দিয়ে কাজ করতে বাধ্য করেন। ওই নারী গুরুতর অসুস্থ হয়ে ফ্লোরে লুটিয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে সহকর্মীরা স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

অবরোধকারী শ্রমিকদের অভিযোগ, তাদের সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য মালিকপক্ষ দায়ী। রিনা অসুস্থ হওয়া সত্ত্বেও তাকে ছুটি দেওয়া হয়নি। চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন তিনি। 

লারিজ ফ্যাশনের মালিকপক্ষ ও কর্মকর্তাদেরকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা।

এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লারিজ ফ্যাশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) শিমুল বলেছেন, আমাদের একজন শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে মৃত্যু হয়। এতে আমাদের কোনো গাফিলতি নেই। আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি।

কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেছেন, সহকর্মীর মৃত্যুর জন্য গার্মেন্টস মালিকপক্ষ দায়ী, এমন অভিযোগ করে শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমেছেন। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছি। ঘটনাস্থলে থানা পুলিশের সঙ্গে হাইওয়ে ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশও আছে। শ্রমিকরা রাস্তা থেকে সরে গেছেন। যানচলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।

ঢাকা/অনিক/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ