বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালকের মৃত্যুর প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের ডাকা বিক্ষোভে শুক্রবার এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টের কাছে পুলিশ আইন প্রণেতাদের বেতন এবং শিক্ষা তহবিলসহ বেশ কয়েকটি বিষয়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করা ব্যক্তিদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করছিল। ওই সময় সহিংস পুলিশের গাড়ি এক মোটরসাইকেল চালককে চাপা দেয়।
রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির রাজধানীতে শুক্রবার বিকেলে বিক্ষোভের ডাকের ফলে বেশ কয়েকটি স্কুল শিক্ষার্থীদের তাড়াতাড়ি ছুটি দেওয়ার অনুমতি দেয় এবং ব্যাংক ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলে। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওতে দেখা গেছে, কিছু এলাকায় সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার বৃহত্তম ছাত্র ইউনিয়নের প্রধান মুজাম্মিল ইহসান রয়টার্সকে জানিয়েছেন, শুক্রবার বিকেলে পুলিশি সহিংসতার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করবে এবং তিনি অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের উপস্থিতি আশা করেন।
প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো একটি বিশেষভাবে রেকর্ড করা ভিডিও বার্তায় শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে, চালক আফান কুর্নিয়াওয়ানের মৃত্যুর জন্য শোক প্রকাশ করেছেন এবং ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিবিসি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা জাকার্তায় পুলিশ সদর দপ্তরে প্রবেশ করেছে। পরে সেনাবাহিনী তলব করা হয়। সেনা সদস্যরা পুলিশ সদর দপ্তরের বাইরে অবস্থান নিয়েছে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে মধ্য জাকার্তার কুইতাং-এ ব্রিমোব সদর দপ্তরের বাইরে বিক্ষোভকারীদের ভিড় লক্ষ্য করে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করেছে।
জাকার্তায় শুরু হওয়া বিক্ষোভ এখন দেশের সমস্ত প্রধান শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার মেদান এবং সুরাবায়াতে বিক্ষোভের খবর পাওয়া গেছে।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।
প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।
এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।
সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঢাকা/ইভা