অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা ছাড়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় নেতা এম এম আকাশ। তিনি বলেন, ‘‘আপনাকে দিয়ে আর কিছু হবে না। সংস্কার, বিচার নিয়ে আপনার কর্মকাণ্ড মানুষের মধ্যে আশা জাগাতে পারছে না। আপনি বরং তালবাহানা না করে নির্বাচন দিয়ে বাঘের পিঠ থেকে নেমে যান। সেটা আপনার জন্যও মঙ্গল। দেশের জন্য, জাতির জন্যও মঙ্গল।’’

শুক্রবার (৫ আগস্ট) সিপিবির চট্টগ্রাম জেলা শাখার ত্রয়োদশ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জাতিসংঘের পূর্ণ সমর্থনের অঙ্গীকার

‘গ্রামেও শহরের সমান নেট সেবার ব‍্যবস্থা করা হচ্ছে’

অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে অধ্যাপক এম এম আকাশ। তিনি বলেন, ‘‘এ সরকার সংস্কারের নামে সাত হাজার পৃষ্ঠার দলিল রচনা করেছে। এ অবস্থায় দেশের মানুষ নির্বাচন নিয়ে হতাশ হতে লাগল, নির্বাচন হবে, কি হবে না— সেই প্রশ্ন দেখা দিল। প্রশ্ন উঠল ইউনূস কার, কোন অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে ক্ষমতায় বসেছেন?’’

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের লন্ডন সফর এবং সেখানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গ টেনে এম এম আকাশ বলেন, ‘‘মুহাম্মদ ইউনূস লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠক করে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হবে বললেন। বোঝা গেল, তিনি স্বেচ্ছায় নির্বাচন দিতে চান না। চাপে পড়ে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। বোঝা যাচ্ছে, উনি যে বাঘের পিঠে সওয়ার হয়েছেন, সেখান থেকে কীভাবে নামবেন বুঝতে পারছেন না।’’

সিপিবি মুক্তিযুদ্ধ আর বাহাত্তরের সংবিধানের প্রশ্নে আপস করবে না মন্তব্য করে এম এম আকাশ বলেন, ‘‘রাজাকার-আলবদরদের কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ আমরা রক্ষা করব। এই বাংলাদেশ হবে গরিব, মেহনতি, খেটে খাওয়া মানুষের।’’ 

নগরীর চেরাগি পাহাড় মোড়ে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন কমিউনিস্ট করেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য ড.

এম এম আকাশ। দলের পতাকা উত্তোলন করেন চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অশোক সাহা। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন পার্টির সংস্কৃতি শাখার কর্মীরা।

চট্টগ্রাম জেলা সিপিবির সভাপতি অধ্যাপক অশোক সাহার সভাপতিত্বে ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নুরুচ্ছাফা ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, সিপিবির কেন্দ্রীয় সদস্য মৃণাল চৌধুরী ও চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর।

সকালে সম্মেলনের উদ্বোধনী সমাবেশে শেষে লাল পতাকার মিছিল বের হয়। এরপর নগরীর কাজির দেউড়িতে কমিউনিটি সেন্টারে সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
 

ঢাকা/রেজাউল/বকুল 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম হ ম মদ ইউন স

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকায় অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে শনিবার

ঢাকায় দুই দিনব্যাপী অটোমোবাইল ও কৃষি যন্ত্রপাতির প্রদর্শনী শুরু হচ্ছে আগামী শনিবার। এতে অটোমোবাইল, কৃষি যন্ত্রপাতিসহ হালকা প্রকৌশল খাতের ২৬টি স্টল থাকবে। পাশাপাশি শিল্পের সহায়ক প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে আরও ১২টি। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

বাংলাদেশ অটোমোবাইলস অ্যাসেম্বলার্স অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ও অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় এই প্রদর্শনীর আয়োজন করছে বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এডিসন প্রাইম ভবনের ছাদে এই প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। এই ভবনেই বিসিআইয়ের কার্যালয় অবস্থিত।

আজ বৃহস্পতিবার বিসিআই কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দুই দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী নিয়ে বিস্তারিত জানান চেম্বারটির সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী। আরও উপস্থিত ছিলেন অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী, বিসিআইয়ের পরিচালক মো. শাহেদ আলম, এস এম শাহ আলম, জিয়া হায়দার প্রমুখ।

বিসিআইয়ের সভাপতি বলেন, হালকা প্রকৌশল খাতে বাংলাদেশে বর্তমানে ছোটবড় প্রায় ৫০ হাজার প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই খাতে কাজ করেন ১০ লাখ মানুষ। হালকা প্রকৌশল খাতে স্থানীয় বাজার ১২ বিলিয়ন ডলারের হলেও দেশীয় উৎপাদকেরা অর্ধেক পূরণ করতে পারছেন। তা ছাড়া হালকা প্রকৌশল খাতের বৈশ্বিক বাজারের আকার প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক খাত আর বেশি মূল্য সংযোজন করতে পারবে না। ফলে আমাদের অর্থনীতিকে টেকসই করতে হলে আমাদের অন্য খাতে যেতে হবে। সে ক্ষেত্রে হালকা প্রকৌশল খাত পারে বড় সম্ভাবনার।

অ্যাগ্রিকালচার মেশিনারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, প্রতিবছর কৃষিজমি কমছে। কৃষকের বয়স বাড়ছে, তার কারণ তরুণেরা খুব কম কৃষিকাজে আসছেন। বিশ্বের অনেক দেশেই মোট জনগোষ্ঠীর ১০ শতাংশের কম কৃষিকাজে নিয়োজিত। ১০ শতাংশ মানুষ বাকি ৯০ শতাংশের জন্য খাদ্য জোগান দিচ্ছে। সে কারণে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাংলাদেশেও কৃষিকাজে যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। তবে বড় অংশই আমদানি করতে হচ্ছে।

আলিমুল আহসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে ১২০০ থেকে ১৫০০ কোটি টাকার কৃষি যন্ত্রপাতির বাজার আছে। তার মধ্যে দেশীয় কোম্পানিগুলো সরবরাহ করছে মাত্র ৪০০ থেকে ৪৫০ কোটি টাকার যন্ত্রাংশ। নীতিসহায়তা পেলে দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়বে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ