ডেঙ্গুতে মাসিক মৃত্যুর রেকর্ড ভাঙল আজ
Published: 18th, September 2025 GMT
চলতি বছর ডেঙ্গুতে মাসিক মৃত্যুর রেকর্ড ভেঙে গেল আজ বৃহস্পতিবার। এ বছর এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছিল জুলাই মাসে, ৪১ জন। আর আজ চলতি মাসের ১২ দিন বাকি থাকতেই এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (গতকাল বুধবার সকাল আটটা থেকে আজ বৃহস্পতিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৬ জন। এ সময় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৪৭ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এখন পর্যন্ত দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬৭ জন। আর এ বছরে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪০ হাজার ৪৬১ জন।
সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন হাসপাতালে দেশের সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছে। এ সংখ্যা ১২৮। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রোগী ভর্তি হয়েছে উত্তর সিটির হাসপাতালগুলোয়, সংখ্যা ১১৩। বরিশাল বিভাগে ১০৮ জন রোগী ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছেন এ সময়। আর এ বিভাগের জেলা বরগুনায় এ সময় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫২। দেশের কোনো একক জেলা হিসেবে রোগীর এ সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ।
চলতি সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকেই ডেঙ্গুর সংক্রমণ আগের মাসগুলোর চেয়ে বাড়তে থাকে। এর সঙ্গে বাড়তে থাকে মৃত্যুও। চলতি মাসে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে যত আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে, তা এ সময়ে আগের কোনো মাসে হয়নি। এ বছর যত আক্রান্ত ও মৃত্যু হয়েছে, তা গত বছরের এ সময়ের চেয়ে বেশি।
সাধারণত বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়তে শুরু করে। এ বছর ডেঙ্গুতে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যুর আশঙ্কা করেছিলেন জনস্বাস্থ্যবিদ ও কীটতত্ত্ববিদেরা। তবে সরকারের পক্ষ থেকে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে জোরদার কোনো তৎপরতা দেখা যায়নি।
সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ আজ প্রথম আলোকে বলেন, মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যত কোনো কার্যক্রম নেই। বিষয়টি একেবারে গা–সওয়া হয়ে গেছে। সরকারের কোনো ভাবনা নেই। মশা নিয়ন্ত্রণে কার্যত ব্যর্থ সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো।
চলতি বছর ডেঙ্গুর সঙ্গে বেড়েছে চিকুনগুনিয়া। চিকিৎসকেরা বলছেন, জ্বর হলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া জরুরি। সেই সঙ্গে ডেঙ্গুর পরীক্ষা করাও দরকার।
এ বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে রোগীর সংখ্যা হয়েছে ১০ হাজার ৫২২। ঢাকার বাইরে এ সংখ্যা ২৯ হাজার ৯৩৯ জন।
তৌহিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ঢাকার বাইরে এবার যে ডেঙ্গু বাড়তে পারে, তা শুরু থেকেই ধারণা করা হয়েছিল। কিন্তু ঢাকার বাইরে মশা নিয়ন্ত্রণে কোনো ব্যবস্থাই নেই।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র এ সময় এ বছর
এছাড়াও পড়ুন:
জিম্মিদশা থেকে নারীকে উদ্ধার, পুলিশ বলছে মাদক নিয়ে বিরোধ
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের পূর্ব ডুমখালী রিজার্ভপাড়া এলাকার একটি বসতঘরের জিম্মিদশা থেকে এক নারীকে (৪৬) উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় অস্ত্রসহ একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে পুলিশ এ অভিযান চালায়। ওই নারীর বাড়ি খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলায়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম রমজান আলী (৩৬)। তিনি পূর্ব ডুমখালী এলাকার নজির আহমদের ছেলে। তাঁর কাছ থেকে দেশে তৈরি একটি একনলা বন্দুক (এলজি), একটি গুলি ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল রাতে চকরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরকানুল ইসলাম বাদী হয়ে অস্ত্র আইনে একটি মামলা করেন।
চকরিয়া থানার পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, খাগড়াছড়ি থেকে চকরিয়ার ডুলাহাজারায় এলে ১৫ সেপ্টেম্বর ওই নারীকে দুর্বৃত্তরা রিজার্ভপাড়া এলাকার একটি ঘরে আটকে রাখে। এরপর ওই নারীকে মুক্ত করতে থানায় অভিযোগ দেন তাঁর মেয়ে। অভিযোগে বলা হয়, ওই নারীর সামনে কিছু ইয়াবা ও অস্ত্র রেখে ভিডিও করা হয়। এরপর সেসব ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরিবারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা আদায় করা হয়। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে উদ্ধার করে।
উদ্ধারের পর ওই নারী সাংবাদিকদের বলেন, একটি চক্র কৌশলে তাঁকে চকরিয়ায় নিয়ে এসে আটকে রাখে। মাদক ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসিয়ে ভিডিও ধারণ করে। পরে সেই ভিডিও পরিবারের কাছে পাঠিয়ে চাঁদা দাবি করে।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, উদ্ধার হওয়া নারীর বিরুদ্ধে ঢাকার মতিঝিলসহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। মূলত ইয়াবা কেনাবেচার টাকার ভাগ–বাঁটোয়ারার দ্বন্দ্বে তাঁকে পূর্ব ডুমখালী রিজার্ভপাড়া এলাকায় আটকে রাখা হয়।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, এক নারীকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির অভিযোগ পেয়ে পুলিশ অভিযান চালায়। এ সময় ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী চক্রের একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশের অভিযান টের পেয়ে চক্রের অন্য তিন সদস্য পালিয়ে গেছেন।
তৌহিদুল আনোয়ার আরও বলেন, গ্রেপ্তার রমজান আলীকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতে হাজির করা হলে তিনি জবানবন্দি দেন। ভুক্তভোগী নারীকে আটকে রাখার কথাও স্বীকার করেন তিনি।