যাদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে পূর্বপুরুষরা সতর্ক করে গেছেন, যাদের কাছে সাহাবায়ে কেরামের সম্মান নিরাপদ নয় তা‌দের স‌ঙ্গে ‌নির্বাচনী জোটবদ্ধ হওয়া থে‌কে বিরত থাকার আহ্বান জা‌নি‌য়ে‌ছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী।

বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকা‌লে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত জাতীয় উলামা মাশায়েখ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

জামায়াতকে ইঙ্গিত ক‌রে বাবুনগরী ব‌লেন, “আগামী নির্বাচনে এমন কারো সঙ্গে জোটবদ্ধ হওয়া যাবে না যাদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে আমাদের পূর্বপুরুষরা সতর্ক করে গেছেন।”

“আপনারা তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হবেন না, যাদের কাছে সাহাবায়ে কেরামের সম্মান নিরাপদ নয়, নবীজী বলেছেন, আমি আর আমার সাহাবারা যে পথ ও পন্থার ওপর আছি, সেটাই মুক্তির একমাত্র পথ।”

তাই সহি আকিদার সব দল জোটবদ্ধভাবে ইসলামের খেদমত করার আহ্বান জানান তি‌নি।

যাদের মাধ্যমে ইসলামের ক্ষতি হবে তাদের সঙ্গে ঐক্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানি‌য়ে হেফাজতের আমির আবারও বলেন, “তাদের সঙ্গেও ঐক্যবন্ধ হওয়ার চিন্তাও করবেন না, যাদের বিষয়ে আমাদের আকাবিরে কেরাম সতর্ক করে গেছেন, তাদের ভ্রান্ত আকিদা সম্পর্কে তারা অনেক বই পুস্তকও রচনা করে গেছেন।এসব ভ্রান্ত আকিদার কোনো দলের সঙ্গে আপনারা জোট বন্ধ হবেন না। ইলমে ওহি ও ইসলাম ক্ষতিগ্রস্ত হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত আপনারা গ্রহণ করবেন না।এদেশের দাওয়াতে তাবলিগ, মসজিদ মাদরাসা যেনো কোনো ক্ষতি না হয়, সেদিকেও আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।”

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন নিয়ে তিনি বলেন, “ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপন দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ। তাই এদেশে মানবাধিকার কমিশনের অফিস প্রত‌্যাহার কর‌তে হ‌বে।”

জমিয়তের কেন্দ্রীয় সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুকের সভাপ‌তি‌ত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা খলিল আহমদ কুরাইশী, হেফাজতের মহাসচিব মাওলানা সাজিদুর রহমান, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা বোর্ড বেফাকের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক প্রমুখ।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহ ব ন জ জ টবদ ধ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

গণভোট নিয়ে মতভেদে উপদেষ্টা পরিষদের উদ্বেগ

জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুতত সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

সোমবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এ তথ্য জানানো হয়। যদিও এর আগেই এক সংবাদ সম্মেলনে এমন কথায় জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল।

প্রেস উইং জানায়, জাতীয় ঐক্যমত কমিশন থেকে প্রণীত জুলাই সনদ এবং এর বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদের একটি জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সংস্কার বিষয়ে ঐকমত্য স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য এবং বহু বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঐকমত্য কমিশন ও রাজনৈতিক দলগুলির প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।  

এতে বলা হয়, উপদেষ্টা পরিষদের সভায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) আদেশ চূড়ান্তকরণ এবং এতে উল্লেখিত গণভোট আয়োজন ও গণভোটের বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়। এতে লক্ষ্য করা হয় যে, ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘদিন আলোচনার পরও কয়েকটি সংস্কারের সুপারিশ বিষয়ে ভিন্ন মত রয়েছে। এছাড়া, গণভোট কবে অনুষ্ঠিত হবে ও এর বিষয়বস্তু কী হবে এসব প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর  মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে সে জন্য সভায় উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গণভোটের সময় কখন হবে, গণভোটের বিষয়বস্তু কী হবে, জুলাই সনদে বর্ণিত ভিন্নমতগুলো প্রসঙ্গে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে তা নিয়ে ঐক্যমত কমিশনের প্রস্তাবগুলোর আলোকে জরুরী ভিত্তিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে সভা অভিমত ব্যক্ত করে।

এসব ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদবিরোধী আন্দোলনের দীর্ঘদিনের মিত্র রাজনৈতিক দলগুলোকে স্বীয় উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা করে দ্রুততম সময়ে ( সম্ভব  হলে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে) সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা প্রদান করার আহ্বান জানানো হয়। এমন নির্দেশনা পেলে সরকারের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ অনেক সহজ হবে। বলেও উল্লেখ করা হয়। পরিস্থিতিতে কালক্ষেপণের যেকোনো সুযোগ নাই সেটাও সবার বিবেচনায় রাখার জন্য বলা হয়।

সভায় ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথমার্থে আগামী সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করা হয়।

রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা না পেলে কী হবে এমন প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, “রাজনৈতিক দলগুলো নিজেরা আলাপ-আলোচনা করে এই বিষয়েও আমাদের একটি ঐক্যবদ্ধ নির্দেশনা দেবে—এ প্রত্যাশা করছি। ওনারা যদি আলাপ-আলোচনা করেন, আমাদের জন্য কাজটি অত্যন্ত সহজ হয়। ওনারা যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, অবশ্যই সরকার সরকারের মতো সিদ্ধান্ত নেবে।” 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ