ম্যাচ চলাকালেই মারা গেলেন ওয়েলালাগের বাবা
Published: 19th, September 2025 GMT
এশিয়া কাপের মঞ্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন শ্রীলঙ্কার তরুণ অলরাউন্ডার দুনিথ ওয়েলালাগে। মাঠের ভেতর দিনটা যেমন ভালো কাটেনি, মাঠের বাইরে তার জন্য অপেক্ষা করছিল আরও বড় এক আঘাত। ম্যাচ শেষ হওয়ার পরই তিনি জানতে পারেন, আর কোনোদিন বাবাকে দেখতে পারবেন না। খেলার উত্তেজনার রেশ মিলিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে পড়ে তার পুরো পৃথিবী।
২২ বছর বয়সী এই স্পিনারের বাবা সুরঙ্গা ওয়েলালাগে মারা যান বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) যেদিন ছেলের দেশের হয়ে এশিয়া কাপে প্রথমবার মাঠে নামার কথা ছিল। কিন্তু বাবার মৃত্যু সংবাদ তিনি জানতে পারেন ম্যাচ শেষ হওয়ার পর। দেশের হয়ে দায়িত্ব পালন করে তিনি যখন সতীর্থদের সঙ্গে জয় উদযাপনে ছিলেন, তখনই নীরবে নিভে যায় তার পরিবারের সবচেয়ে প্রিয় মানুষের জীবনপ্রদীপ। সংবাদটি জানার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি দেশে ফিরে যান, ফলে এশিয়া কাপের বাকি ম্যাচগুলোতে তার খেলা এখন অনিশ্চিত।
আরো পড়ুন:
সান্ত্বনার জয়ে আফগানিস্তানের সফর শেষ
ব্যাটিং ব্যর্থতায় এক ম্যাচ আগেই সিরিজ হারলো আফগানিস্তান
ম্যাচটিও যেন তার জন্য হয়ে ওঠে এক দুঃস্বপ্ন। শেষ ওভারে বল করতে এসে অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবীর ঝড়ো ব্যাটিংয়ের শিকার হন তিনি। এক ওভারেই পাঁচটি ছক্কা হজম করতে হয় তাকে, সেই সঙ্গে আফগানিস্তান পায় লড়াই করার মতো সংগ্রহ। ওয়েলালাগের বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪ ওভারে ৪৯ রান খরচে মাত্র ১ উইকেট। শ্রীলঙ্কা অবশ্য লক্ষ্য তাড়া করতে তেমন বেগ পায়নি। নুয়ান তুষারার দুর্দান্ত বোলিং (১৮ রানে ৪ উইকেট) আর কুশল মেন্ডিসের অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংসে ভর করে সহজ জয় পায় তারা।
কিন্তু ক্রিকেটে পাওয়া সেই জয়ের কোনো মূল্যই নেই ওয়েলালাগের চোখে। একদিকে জাতীয় দলের হয়ে প্রথমবার এশিয়া কাপে খেলতে নামার গর্ব, অন্যদিকে বাবাকে হারানোর বেদনা; এই দ্বন্দ্বে ভেঙে পড়েছেন তিনি। এখন শ্রীলঙ্কা সুপার ফোরে জায়গা করে নিলেও ওয়েলালাগে থাকবেন কি না, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
ক্রিকেটের বাইরেও খেলোয়াড়রা মানুষ, তাদেরও থাকে আবেগ, থাকে শোক আর ক্ষতি। দুনিথ ওয়েলালাগের গল্পটা তাই শুধু ক্রিকেট নয়, বরং এক তরুণ সন্তানের হঠাৎ বাবাকে হারানোর বেদনাময় কাহিনি। মাঠে জয় পেলেও জীবনের এই পরাজয় যে কোনো ক্রীড়াবিদের জন্য অসহনীয়।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
৩ দাবিই পূরণ চান অনশনরত জবি শিক্ষার্থীরা
শিক্ষার্থীদের লাগাতার অনশন কর্মসূচির মুখে অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রথমবারের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে।
তবে এই ঘোষণায় সন্তুষ্ট নন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তিন দফা দাবির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন ছাড়া অনশন ভাঙবেন না বলে জানিয়েছেন তারা।
আরো পড়ুন:
জানুয়ারি থেকে বিশেষ বৃত্তি পাবেন জবি শিক্ষার্থীরা
জকসুর রোডম্যাপ ঘোষণা, নির্বাচন ২৭ নভেম্বর
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে।
রোডম্যাপ অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে জকসু নির্বাচন। এর আগে আগামী ৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে এবং কমিশন ১১তম দিনে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করবে।
রোডম্যাপ ঘোষণার পরও অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
ছাত্রদলের সদস্য সচিব শামসুল আরেফিন বলেন, “আমরা অনশনকারীদের সঙ্গে একমত। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।”
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “আমরা শর্তসাপেক্ষ কোনো ঘোষণা মানব না। আমাদের দাবি ছিল তিনটি—শুধু জকসু নির্বাচন ঘোষণা করে হবে না। তাই অনশন চালিয়ে যাব।”
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্য সচিব শাহিন মিয়া অভিযোগ করে বলেন, “রোডম্যাপে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বিধি কবে পাস হবে তা স্পষ্ট করা হয়নি। আবারও আমাদের মুলা দেখানোর চেষ্টা চলছে। এজন্য আমরা অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর হওয়ার নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা; জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ; ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি দিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে আধুনিক সুবিধা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু।
এর আগে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রফিক ভবনের নিচে তিন দফা দাবিতে অনশন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অনশনে অংশ নেয় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস), ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ছাত্রদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
প্রতিষ্ঠার প্রায় দুই দশক পর এবারই প্রথমবারের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা হলো। কিন্তু ঘোষণায় অস্পষ্টতা ও শর্ত যুক্ত করার অভিযোগে অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী