সীমান্ত পরিস্থিতি: ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করে উদ্বেগ জানালেন পররাষ্ট্রসচিব
Published: 12th, January 2025 GMT
ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন। আজ রোববার বিকেলে ঢাকায় ভারতের শীর্ষ কূটনীতিককে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
পররাষ্ট্রসচিব মো. জসীম উদ্দিন আজ সন্ধ্যায় এ কথা জানান।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব জসীম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সীমান্তে এখন যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত। সম্প্রতি সীমান্তে বাংলাদেশের একজন নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। সব মিলিয়ে আমরা সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের কাছে উদ্বেগ জানিয়েছি।’
পররাষ্ট্রসচিব জানান, সীমান্তের বর্তমান পরিস্থিতির উত্তরণে আগামী মাসে (ফেব্রুয়ারি) ভারতের দিল্লিতে বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে: ভারতের হাইকমিশনারএর আগে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বেরিয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে দুই দেশের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী ভারতের বিএসএফ ও বাংলাদেশের বিজিবি সহযোগিতার মাধ্যমে সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে কাজ করবে।
প্রণয় ভার্মা বলেন, ‘আমি পররাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আলোচনা করেছি। অপরাধমুক্ত সীমান্ত নিশ্চিতের ব্যাপারে ভারতের প্রত্যয় নিয়ে কথা বলেছি। চোরাচালান, অপরাধীদের চলাচল, পাচারের চ্যালেঞ্জ কার্যকরভাবে দমনের বিষয়ে আলোচনা করেছি।’
সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের বিষয়ে ভারতের হাইকমিশনার বলেন, ‘নিরাপত্তার জন্য সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়ার ব্যাপারে আমাদের মধ্যে বোঝাপড়া রয়েছে। এ ব্যাপারে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবির মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। আমরা আশা করি, সীমান্তে অপরাধ দমনের বিষয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে সেই বোঝাপড়ার বাস্তবায়ন হবে।’
আরও পড়ুনপাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের বেড়া স্থাপনে বিজিবির বাধা, নওগাঁয় উত্তেজনা নিরসনে পতাকা বৈঠক১০ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনবিজিবির শক্ত অবস্থানে সীমান্তে বেড়া নির্মাণ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছে ভারত : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতায় গ্রেপ্তার বাংলাদেশি যুবক
জঙ্গি সন্দেহে কলকাতা পুলিশের বিশেষ টাস্ক ফোর্সের (এসটিএফ) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে এক বাংলাদেশি নাগরিক। মুফতি আবদুল্লাহ আল মাসুদ নামে ওই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয় পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার গয়েশপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকা থেকে। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ চলে। বৃহস্পতিবার এই ঘটনাটি ঘটেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও ভারত থেকে নিজের দেশে ফিরে যাননি মাসুদ। তিনি অবৈধভাবে পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কাটাগঞ্জ এলাকায় বসবাস করতেন। সম্প্রতি তার বেশ কিছু কর্মকান্ডে সন্দেহ প্রকাশ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরই মাসুদকে ইসলামী উগ্রপন্থী বলে দাবি করে পুলিশে অভিযোগ করা হয়। যেহেতু তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তাই পুলিশ তাকে একজন অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি সামনে আসার পরই যথেষ্ট উত্তেজনা ছড়িয়েছে। যদিও এ ব্যাপারে কলকাতা পুলিশের পক্ষে কিছুই জানানো হয়নি।
অন্যদিকে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত বাংলাদেশের দিনাজপুর সীমান্ত ও ভোমরা ঘোজাডাঙা সীমান্তে এলাকায় অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন আরো ১১ জন বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ ও বিএসএফের যৌথ অভিযানে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এক বাংলাদেশি নাগরিককে। আটককৃতে ওই ব্যক্তির নাম পঞ্চানন পাল। তিনি বাংলাদেশের ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গা থানার বাসিন্দা। ভারতে তিনি পরিচয় বদল করে রূপায়ণ পাল নামে বসবাস করছিলেন বলে অভিযোগ। তার কাছ থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্ট ছাড়াও ভারতের আধার কার্ড, ভোটার কার্ড ও এমনকি ভারতীয় পাসপোর্ট পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে।
একইদিনে ভারত থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময়ে ঘোজাডাঙ্গা ভোমরা সীমান্তের কাছে সরুপনগর এলাকার তারালি সীমান্ত থেকে বিএসএফের ১৪৩নম্বর ব্যাটালিয়নের হাতে আটক হয়েছেন আরো বাংলাদেশি নাগরিক।
সীমান্তরক্ষী বাহিনী জানিয়েছে আটকের পর তাদের স্বরূপনগর থানার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আটককৃতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু, তিনজন পুরুষ ও চারজন নারী। এর সবাই বাংলাদেশের সাতক্ষীরা এবং খুলনার বাগেরহাটের বাসিন্দা।
সুচরিতা/শাহেদ