আরআইবি পরিচালনা পর্ষদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক আনিসুর রহমানকে স্মরণ
Published: 13th, January 2025 GMT
অধ্যাপক আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ তথা বিশ্বের একজন প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ ও উন্নয়নবিশেষজ্ঞ এবং একই সঙ্গে একজন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ও আরও নানা অভিধায় পরিচিত এক মহান ব্যক্তিত্ব। তবে আমরা এ লেখায় আজ তাঁকে একান্তভাবে স্মরণ করেছি রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস, বাংলাদেশের (আরআইবি) একজন স্বপ্নদ্রষ্টা, পথনির্দেশক এবং পরিচালনা পর্ষদের একজন বিশিষ্ট সদস্য হিসেবে তাঁর ভূমিকা নিয়ে।
অধ্যাপক আনিসুর রহমান ৫ জানুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর স্মরণে আরআইবি অফিসে চেয়ারম্যান ড.
আরআইবি প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে সাতজন বোর্ড সদস্য নিয়ে। তার মধ্যে অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য অধ্যাপক আনিসুর রহমান। নেদারল্যান্ডস সরকারের দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক সহায়তায় শুরুতে আরআইবির কার্যক্রম ছিল প্রধানত দুই ধরনের। এক. দারিদ্র্য বিমোচন গবেষণার কাজে বিভিন্ন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া। দুই. জনগণের চাহিদাভিত্তিক ও অংশগ্রহণমূলক গবেষণার জন্য নতুন গবেষক সৃষ্টিতে সহায়তা করা।
দারিদ্র্য বিমোচনসংক্রান্ত গবেষণায় আরআইবি দারিদ্র্যকে সামগ্রিকভাবে ও মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে নতুন ধারা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়। দারিদ্র্যের মানবিকীকরণ দৃষ্টিভঙ্গি তৈরির ক্ষেত্রে অধ্যাপক আনিসুর রহমান গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। তাঁর মতাদর্শ অনুসরণ করে আরআইবি মনে করে, দরিদ্র জনগণের চাহিদা শুধু অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-স্বাস্থ্য-শিক্ষার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এর বাইরেও সুবিচার, সাম্য, বৈষম্য দূরীকরণ, সুশাসন, মানবাধিকার, সংস্কৃতি, জ্ঞানতৃষ্ণা পূরণসহ সর্বোপরি সৃজনশীলতা ও সৌন্দর্য বিকাশের সুযোগ সৃষ্টির চাহিদা রয়েছে। দারিদ্র্যকে সার্বিকভাবে অনুধাবন করার এই যে অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি, তা একান্তই আনিস স্যারের মানসজাত।
আরআইবি গবেষণাকে শুধু টেকনিক্যাল প্রশ্নে সীমাবদ্ধ রাখেননি। এর লক্ষ্য, অভীষ্ট জনগোষ্ঠীর জীবনের উন্নয়ন তথা জনগণের আত্ম-উন্নয়ন। সারা দেশে তৃণমূল পর্যায়ে অনেক সুবিধাবঞ্চিত ও অধিকারবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর নিজেদের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হওয়ার অনেক দৃষ্টান্ত আছে, যাকে উন্নয়নের পরিসরে সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন। এ বিষয়ে আনিস স্যার সব সময় জনগণের আত্মশক্তির কথা সামনে তুলে ধরেছেন। জনগণকে ‘দরিদ্র’অভিধায় অভিহিত করার যে প্রয়াস এই শতকের গোড়ার দিকের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে দেখা যেত, তার প্রচণ্ড রকম বিরোধিতা করেছেন তিনি। দরিদ্রজনের অর্থনৈতিক দারিদ্র্যকে অস্বীকার না করে, বরং তাদের অফুরন্ত সম্ভাবনা ও সৃজনশীলতার প্রতি হাত বাড়িয়ে দিয়ে তাদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে কাজ করেছেন তিনি। তিনি ‘দরিদ্র’ না বলে ‘সুবিধাবঞ্চিত’ও ‘অধিকারবঞ্চিত’—এই টার্মগুলো ব্যবহার করতে আমাদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। আরআইবি সেই ধারাবাহিকতা এখনো বজায় রেখেছে।
পার্টিসিপেটরি অ্যাকশন রিসার্চ (পিএআর) বা গণগবেষণাতত্ত্বকে বাংলাদেশে পরিচিত করেছেন অধ্যাপক আনিসুর রহমান। এই তত্ত্বকে আরআইবি তার সব গবেষণার কাজে প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করে এগিয়ে যাচ্ছে আগামীর দিকে। প্রথম দিকে এই তত্ত্বকে বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষা কর্মসূচিতে সামাজিক বিজ্ঞানের মানদণ্ডের পরিসরে মেনে নিতে অনীহা ছিল। কিন্তু আরআইবির বাস্তবায়ন ও জনমনে এর গ্রহণযোগ্যতা এবং সেই সঙ্গে আরও কিছু বেসরকারি সংগঠনের কর্মসূচিতে এর অন্তর্ভুক্তি গণগবেষণাতত্ত্বের গ্রহণযোগ্যতাকে দৃঢ় করেছে।
গণগবেষণার একটি মৌলিক ধারণা হলো চিন্তাশক্তি বা জ্ঞানের দিক দিয়ে কোনো শ্রেণিই অন্য কোনো শ্রেণির চাইতে অগ্রসর নয়। দৈনন্দিন সংগ্রামের কারণে কারও চিন্তা করার অবকাশ কম বা কারও বেশি। কিন্তু সব মানুষই প্রকৃতপক্ষে সৃজনশীল। সুযোগ পেলে তার বিকাশ ঘটে ও সামনে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই অন্যান্য গোষ্ঠী থেকে আলাদা করে প্রান্তিক জনগণের উন্নয়ন কখনো অন্যের ‘অবজেক্ট’ হতে পারে না, তারা নিজেই তাদের জীবনের, কর্মের অধীশ্বর। পারস্পরিক সম্পর্ক তাই ‘সাবজেক্ট-সাবজেক্ট’।
এভাবে সাধারণ মানুষকে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে যথাযথ সম্মান দেওয়া এবং তারা যে নিজস্ব সমস্যা সমাধানের জন্য চিন্তা ও কাজ করার ক্ষমতা রাখে এই বোধকে সামনে তুলে ধরার ক্ষেত্রে আনিসুর রহমান স্যার প্রাগ্রসর ভূমিকা রেখে গেছেন। প্রায় পঁচিশ বছর ধরে আরআইবির প্রতিটি গবেষণায়, তিনি আমাদের বলেছেন, জনগণকে আত্মশক্তিতে সচেতন করে তুলতে হবে, যাতে আরআইবির ওপর তাদের নির্ভরশীলতা তৈরি না হয়।
আরআইবি গবেষণা এলাকা থেকে সরে এলে কীভাবে তারা নিজেকে টিকিয়ে রেখে বিদ্যমান কর্মকাণ্ড চালিয়ে নিতে পারবে, সেই বিষয়ে তাদের সচেতন করার জন্য তিনি দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। তাঁর এই নির্দেশনা সব সময়ই আরআইবির কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করে রেখেছে, ভবিষ্যতেও রাখবে।
এখানেই আনিস স্যারের ব্যতিক্রমী চিন্তাচেতনা আমাদের মনোজগৎকে প্রভাবিত করেছে। জনগণকে প্রাধান্য দিয়ে চিন্তার জগৎ বা গবেষণার ফোকাস করা শিখিয়েছেন তিনি আমাদের।
আরআইবির শুরুতে গবেষণাকাজের ফোকাস হিসেবে ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠী’ নির্ধারণে অধ্যাপক আনিসুর রহমানের ভূমিকা ছিল অন্যতম। সেই সময় তিনি আরআইবি চেয়ারম্যান ড. শামসুল বারি, পরিচালনা পর্ষদ সদস্য ড. হামিদা হোসেন, নির্বাহী পরিচালক ড. মেঘনা গুহঠাকুরতাসহ অন্যদের সঙ্গে ঢাকার বাইরের জেলাগুলোয় নিরন্তর ভ্রমণ করতেন এবং বিভিন্ন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে বসে তাদের সমস্যা জানা এবং কীভাবে তারা তাদের সমস্যাকে মূল্যায়ন করে সমাধানের অন্বেষণ করে তা অধ্যয়ন করতেন।
এভাবেই বাংলাদেশের আনাচকানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ৪০টির বেশি জনগোষ্ঠী আমাদের জ্ঞানকাণ্ডে, গবেষণার জগতে উল্লিখিত হয়। এসব অপ্রচলিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে নাগারচি, শব্দকর, কাওরা, মুচি, কৈবর্ত, মাহাতো, সন্ন্যাসী, চৌধালী, বেহারা জনগোষ্ঠী অন্যতম। এসব জনগোষ্ঠীর আত্ম-উন্নয়নও অধিকার রক্ষায় আরআইবি ধারাবাহিকভাবে কাজ করে আসছে। আগে যাযাবর বেদে জনগোষ্ঠীর ভোটাধিকার ছিল না। কারণ, তাদের কোনো স্থায়ী আবাস ছিল না। তাদের ভোটাধিকার ইস্যু নিয়ে নীতিনির্ধারক পর্যায়ে রিইবের ক্রমাগত চেষ্টার ফলে বর্তমানে তারা ভোটের অধিকার লাভ করতে সক্ষম হয়। এ রকম আরও সফলতার অন্যতম নেপথ্য রূপকার ছিলেন আনিস স্যার।
অধ্যাপক আনিসুর রহমানের জীবন-দর্শন ছিল জনগণকেই তাদের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া। তাদের আত্মশক্তিতে বলীয়ান করে, তাদের হাত ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সহায়তা করা। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী ও রবীন্দ্র-অনুরাগী। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবন-দর্শনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছিলেন। রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে আত্মশক্তির যে চর্চা করেছিলেন এবং সে বিষয়ে তাঁর যাবতীয় লেখা থেকে আনিস স্যার উদ্ধৃতি ব্যবহার করেছেন তাঁর বিভিন্ন লেখায়। জনগণের প্রতি এই যে দায়বদ্ধতার এই প্রকাশ আমরা দেখি তাঁর রচিত—যে আগুন জ্বলেছিল, পথে যা পেয়েছি—বইয়ের প্রতি পাতায়।
জনগণের সামষ্টিক শক্তি যে একটা বড় শক্তি এবং তা যে সমাজ রূপান্তরের কাজে বড় ভূমিকা রাখতে পারে, তা আনিস স্যার আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন তাঁর লেখা পার্টিসিপেটরি অ্যাকশন রিসার্চ: জীবনের পাঠশালা থেকে শিক্ষা বইটিতে। মানুষকে সঠিক পথে চলার পথে অ্যানিমেটর বা উজ্জীবকের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এর প্রতিফলন আমরা আরআইবির পক্ষ থেকে দেখেছি আনিস স্যারের নিজের মধ্যেই।
আরআইবির গবেষকদের তিনি সরাসরি পথনির্দেশক ছিলেন না, তিনি বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরতেন, যাতে অন্যদের সিদ্ধান্ত নিতে এবং নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করতে সহজ হয়। এসব কাজ স্যার অগোচরেই করে গেছেন। আরআইবির গবেষণা ও প্রকাশনার মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের সৃজনশীল সফল উদ্যোগগুলোর কথা প্রচার ও প্রসারের কাজে নিরন্তর সহযোগী হয়ে দেশজুড়ে এক শর কাছাকাছি সাংবাদিককে অনুপ্রাণিত ও শাণিত করেছিলেন তিনি।
আরআইবিকে নিজস্ব স্বতন্ত্র দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে দেশের অন্যতম গবেষণাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে এভাবেই অবদান রেখে গেছেন অধ্যাপক আনিসুর রহমান। আরআইবি পরিবার থেকে আমরা তাঁকে গভীর কৃতজ্ঞতায় শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি।
সুরাইয়া বেগম পরিচালক, রিসার্চ ইনিশিয়েটিভস, বাংলাদেশ (আরআইবি)
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়: ডাকসু
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগের সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিএনপি ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায় বলে দাবি করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
রবিবার (২ নভেম্বর) ডাকসুর ভিপি মো. আবু সাদিক, জিএস এসএম ফরহাদ ও এজিএস মুহা: মহিউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত ‘রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কাৃরের বিরোধিতা এবং ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো অক্ষুণ্ন রাখার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ডাকসুর প্রতিবাদ' শীর্ষক এক প্রতিবাদলিপিতে এ কথা বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানবিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ করতে ২ কমিটি
ঢাবিতে সপ্তাহব্যাপী শিল্পকর্ম প্রদর্শনী শুরু
প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, জুলাই বিপ্লব ছিল বৈষম্য, অবিচার ও ফ্যাসিবাদী শাসনকাঠামোর বিরুদ্ধে এ দেশের সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার এক সম্মিলিত বিপ্লব। কেবল সরকার পরিবর্তন নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, স্বাধীন ও শক্তিশালী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান গঠন, প্রশাসনিক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং একটি বৈষম্যহীন-ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আকাঙ্ক্ষা ছিল এই বিপ্লবের মূল ভিত্তি। নতুন প্রজন্ম চেয়েছিল এমন একটি বাংলাদেশ, যেখানে কোন প্রকার বৈষম্য ও রাজনৈতিক একচেটিয়া কর্তৃত্বের জায়গা থাকবে না।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ধারাবাহিকভাবে সংস্কার কার্যকর করার বিরোধিতা করে তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়েছে। বিশেষত বিএনপি এমন সব মৌলিক সংস্কারের বিরোধিতা করেছে যা সরাসরি ছাত্র–জনতার স্বপ্নের সঙ্গে জড়িত। পিএসসি, দুদক, ন্যায়পাল ও মহা-হিসাব নিরীক্ষকের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে স্বচ্ছ ও দলীয় প্রভাবমুক্ত নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিত করার সংস্কার প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে তারা ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি বহাল রাখতে চায়।
যে বৈষম্যমূলক চাকরি ব্যবস্থাকে কেন্দ্র করেই জুলাই বিপ্লবের সূচনা হয়েছিল সেই কাঠামো পরিবর্তনের বিরুদ্ধাচরণ করে বিএনপি নতুন প্রজন্মের ন্যায্য দাবি অস্বীকার করছে। পাশাপাশি জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কমিশনের বিরোধিতা, অনুচ্ছেদ–৭০ সংস্কারে আপত্তি, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান আলাদা দুজন ব্যক্তির মতো আধুনিক গণতান্ত্রিক প্রস্তাবে বিরোধিতা, আইন পেশায় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত নির্বাচনের প্রতিবন্ধকতা, স্বতন্ত্র ফৌজদারি তদন্ত সার্ভিস গঠনে তাদের আপত্তি রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যৎ নির্মাণের পথে বড় বাঁধার সৃষ্টি করছে। এভাবে বিএনপি মূলত জুলাই বিপ্লবের চেতনাকে অস্বীকার করে নতুন বাংলাদেশ নির্মাণের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
প্রতিবাদলিপিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সংস্কারগুলো ব্যক্তি বা দলীয় স্বার্থ নয় বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার এবং আধুনিক, গণতান্ত্রিক ও শক্তিশালী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান তৈরির লক্ষ্যেই প্রস্তাবিত হয়েছে। জুলাই বিপ্লব পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ গঠনের নৈতিক দায়িত্ব ছাত্র ও সর্বস্তরের জনগণের। তাই সংস্কারের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জনগণ থেকে নিতে হবে। আর গণভোটই জনগণের ম্যান্ডেট নিশ্চিতের উপযুক্ত মাধ্যম। গণভোটের মাধ্যমেই জনগণ ঠিক করবে দেশের স্বার্থে কোন কোন সংস্কার প্রস্তাবনাগুলোকে তারা সমর্থন দিবে।
কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা বা প্রাতিষ্ঠানিক প্রভাব যদি রাষ্ট্রগঠনমূলক সংস্কারের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তবে ছাত্র-জনতা সেই বাধা অতিক্রমে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেবে জানিয়ে প্রতিবাদলিপিতে আরো বলা হয়, জুলাই বিপ্লব শুধু শাসক বা সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন নয় বরং জুলাই বিপ্লব হলো ফ্যাসিবাদী কাঠামো বিলোপ করে ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণ।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী