মৌলভীবাজারের শেরপুর এলাকার কুশিয়ারা নদীর তীর ঘেঁষে বসেছে ঐতিহ্যবাহী ‘শেরপুর মাছের মেলা’। পৌষ সংক্রান্তি উৎসব উপলক্ষে রাত-দিনের এ মেলায় বিশাল আকৃতির বিভিন্ন ধরনের মাছের পসরা সাজিয়ে বসেছেন দূর দূরান্ত থেকে আসা মৎস্য ব্যবসায়ীরা।

মাছের মেলাকে কেন্দ্র করে হাজারো মানুষের সমাগম ঘটবে বলে আশা করছেন আয়োজকরা। গতকাল রবিবার শুরু হওয়া এই মেলা মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত চলবে।

মেলার অয়োজকরা জানিয়েছেন, প্রায় ৩০ একর জমির ওপর মেলা চলছে। মেলায় রয়েছে পাইকারি ও খুচরা মাছ বিক্রেতারা। কোটি টাকার ওপরে এ মেলায় বেচাকেনা হবে বলে আশা করছেন তারা।

আরো পড়ুন:

টাঙ্গাইলে ফাইলা পাগলার মেলা যৌথবাহিনীর অভিযানে বন্ধ

রাজশাহীতে ১০ দিনব্যাপী বিসিক মেলা শুরু

সরেজমিনে গিয়ে ও আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কুশিয়ারা নদীর তীরে প্রায় ২০০ বছর ধরে চলছে এই মেলা। এবারের মেলায় বিভিন্ন আকারের বোয়াল, রুই, কাতলা, চিতল, বাঘাইড় (বাঘ মাছ) নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। মেলাটি এখন এলাকার অন্যতম উৎসবে পরিণত হয়েছে।

মাছ বিক্রেতা মোহাম্মদ আলী বলেন, “মেলায় নদী ও হাওরের মাছ নিয়ে এসেছি। নানা বয়সের হাজারো মানুষ আসছেন মাছ কিনতে ও দেখতে। ক্রেতারা তাদের সাধ্যের মধ্যে পছন্দের মাছ কেনার চেষ্টা করছেন।” 

মাছ ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী বলেন, “হঠাৎ মাছের দাম কমে যাওয়ায় বেকায়দায় রয়েছি।”

মেলায় আসা ক্রেতা কফিল উদ্দিন বলেন, “এ মেলা আমাদের এলাকার ঐতিহ্য। আমরা প্রতিবছর অপেক্ষায় থাকি কখন মেলা শুরু হবে। কারণ অনেক দুর্লভ মাছ আছে যা একমাত্র এ মেলায় পাওয়া যায়। এছাড়া মেলায় বিভিন্ন ধরনের খাবার হোটেল, তিলুয়া-বাতাসা, খৈ, মুড়ি, নানারকম মৌসুমী ফল পাওয়া যায়। শিশুদের জন্য থাকে বিনোদনের ব্যবস্থা।” 

মেলার ইজারাদার কর্নেল আহমেদ বলেন, “শেরপুর বাজারের আশেপাশের ৫-৬টি গ্রামের মানুষ মিলে আমরা মেলা পরিচালনার জন্য ইজারা নেই। এখানে ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা মাছ নিয়ে আসেন। মেলায় ২০ টি পাইকারি দোকান ও ২৫০টি খুচরা মাছের দোকান রয়েছে। প্রায় কোটি টাকার বেশি মাছ বেচাকেনা হবে বলে আমরা আশাবাদী।”

ঢাকা/আজিজ/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা

চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাহাড়ি প্রদেশ গুইঝৌতে প্রাচীনকাল থেকে ‘গেলাও’ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ভিয়েতনামেও এই জনগোষ্ঠীর মানুষ বাস করেন। চীনে তাঁদের সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ ৭৭ হাজার।

কৃষিনির্ভর গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা আজও প্রাচীনকালের পুরোনো এক ঐতিহ্য আগলে রেখেছেন। বছরের নির্দিষ্ট দিনে তাঁরা গাছকে খাওয়ান, যা চীনা ভাষায় ‘ওয়েই শু’ রীতি নামে পরিচিত।

এই প্রাচীন রীতি মূলত একধরনের প্রার্থনা। স্থানীয় অধিবাসীদের বিশ্বাস, এতে প্রকৃতি তুষ্ট হয়, ফসল ভালো হয়, পরিবারে শান্তি ও সমৃদ্ধি আসে। প্রতিবছর দুটি উৎসবের সময় এই অনুষ্ঠান পালন করা হয়—চীনা নববর্ষে, যা বসন্ত উৎসব নামে পরিচিত। আর গেলাও নববর্ষে, যা চান্দ্র পঞ্জিকার তৃতীয় মাসের তৃতীয় দিনে পালিত হয়।

অনুষ্ঠানের দিন সকালে আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী পাহাড়ের ঢালে জড়ো হন। তাঁরা সঙ্গে করে চাল থেকে তৈরি মদ, শূকরের মাংস, মাছ ও লাল আঠালো চাল নিয়ে আসেন। পাহাড়ে পৌঁছে প্রথমে আতশবাজি পোড়ানো হয়। এতে করে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

এর মধ্যেই একটি পুরোনো ও শক্তিশালী গাছ বাছাই করা হয়। এরপর সবাই ধূপ জ্বালিয়ে নতজানু হয়ে প্রার্থনা করেন। সবশেষে মূল পর্ব ‘গাছকে খাওয়ানো’ শুরু হয়।

একজন কুঠার বা ছুরি দিয়ে গাছে তিনটি জায়গায় ছোট করে কেটে দেন। সেই ক্ষতস্থানে চাল, মাংস ও মদ ঢেলে দেওয়া হয়, যাতে গাছ তাঁদের দেওয়া ভোগ গ্রহণ করতে পারে। পরে ওই জায়গা লাল কাগজে মুড়ে দেওয়া হয়।

এ ছাড়া গাছের গোড়া ঘিরে আগাছা পরিষ্কার করা হয়, মাটি আলগা করে দেওয়া হয়। এতে নতুন জীবনের বার্তা মেলে বলে মনে করেন গেলাও জনগোষ্ঠীর সদস্যরা।

যে গাছকে খাওয়ানো হয়, সেটি যদি ফলদ হয়, তাহলে ভোগ দানকারীরা একটি আশাব্যঞ্জক শ্লোক উচ্চারণ করেন। বলেন, ‘তোমায় চাল খাওয়াই, ফল দিয়ো গুচ্ছ গুচ্ছ; তোমায় মাংস খাওয়াই, ফল দিয়ো দলা দলা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনে দুবলার চরে রাস উৎসব শুরু আজ, এবারও নেই মেলার আয়োজন
  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • ভালো ফলনের আশায় গাছকে খাওয়ান তাঁরা
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক