‘তোমায় আর একবার দেখার জন্য সব করতে পারি বাবা’
Published: 13th, January 2025 GMT
ভারতীয় বাংলা সিনেমার বর্ষীয়ান অভিনেতা সন্তু মুখার্জি। ২০২০ সালের ১১ মার্চ পরপারে পাড়ি জমান তিনি। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সন্তু মুখার্জির জন্মদিন। বেঁচে থাকলে আজ ৭৪ বছর পূর্ণ করতেন। বিশেষ দিনে এই অভিনেতাকে স্মরণ করেছেন তারই কন্যা জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বস্তিকা মুখার্জি।
বাবার জন্মদিন উপলক্ষে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন স্বস্তিকা মুখার্জি। লেখার শুরুতে আলোচিত এই অভিনেত্রী লেখেন, “শুভ জন্মদিন বাবা। কোথায় আছো সে তো জানি না, কে আলমারি থেকে নতুন জামা বের করে জোর করে পরিয়ে দেবে তাও জানি না। আশা করি, কেউ নিশ্চয়ই আছে, আমার মতন করে তোমায় আগলে রেখেছে। প্রতি বছরের মতন, এবারেও নতুন ফতুয়া-লুঙ্গি পরো। খাদির দোকানে গেলে, গেরুয়া রংয়ের কোনো কাপড় দেখলেই মনে হয় তোমার জন্য একটা পাঞ্জাবি বানাতে দিই, তারপর মুহূর্তেই মনে পড়ে তুমি তো নেই।”
বাবা-মা না থাকার কারণে বাড়িতে আনন্দ-উৎসব কমে গেছে। তা স্মরণ করে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “আজ সন্ধে নামলে দুপাত্তর ব্যালেন্টাইন খেও। কত ভালোবাসতে। পৃথিবীর এত জায়গায় যাই, যত ভালো স্কচই কিনে আনি না কেন সেই ব্যালেন্টাইনটাই সেরা। তোমার আর মায়ের না থাকাতে বাড়িতে খাওয়া দাওয়া, লোকজনের আসা-যাওয়া, আনন্দ উৎসব প্রায় উঠে গেছে বললেই চলে। ঠিক ওই গানটার মতন— এত আনন্দ আয়োজন সবই বৃথা তোমায় ছাড়া।”
আরো পড়ুন:
সালমানের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন যীশুর কন্যা, নীরবতা ভাঙলেন সারা
স্ত্রী-সন্তানদের জন্য কত কোটি টাকা রেখে গেছেন ইরফান খান
বাবা-মাকে সবসময়ই মনে পড়ে স্বস্তিকার। তার ভাষায়, “১৩ জানুয়ারি, এই দিনটা আমার কাছে আজীবন ‘আমার বাবার জন্মদিন’ হয়েই রয়ে যাবে। অবশ্য, শুধু একটা দিন কেন? বাকি বছরের অজস্র দিনগুলোও তোমাদের দুজনের দিন হয়েই রয়ে গেছে। জন্মদিন, বেড়াতে যাওয়ার দিন, অসুখ করার দিন, হাসপাতালে যাওয়ার দিন, সেখান থেকে ফেরার দিন, না ফেরার দিন এইসব। জীবনটাই দুটো ট্রাম লাইনে বিভক্ত। তখনো মা ছিল, তখন আর মা ছিল না। তখনো বাবা ছিল, তখন বাবা ছিল না।”
বাবাকে আরো কটা দিন কাছে পাওয়ার আকুতি জানিয়ে স্বস্তিকা মুখার্জি বলেন, “আর কটা দিন থেকে গেলে পারতে বাবা, না হয় অনেক রাত অব্দি জমিয়ে আড্ডা মারতে মারতে, লোকজনের গুষ্টি উদ্ধার করতে করতে দু’ পেগ হুইস্কি খাওয়ার জন্যই রয়ে যেতে। না হয়, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচ দেখে চিৎকার করার জন্য রয়ে যেতে। না হয়, দরবেশ, ক্ষীরকদম্ব, মনোহরা, সীতাভোগদের জন্য রয়ে যেতে। ভাত-রুটির শেষ পাতে রোজ একটু মিষ্টি খাওয়ার পাটও চুকে গেছে। বাড়িতে আর মিষ্টি কেনা হয় না।”
আরেকবার বাবাকে দেখার প্রবল ইচ্ছা হয় স্বস্তিকার। তা উল্লেখ করে এ অভিনেত্রী বলেন, “তোমায় আর একবার দেখার জন্য সব করতে পারি বাবা। তুমি তো ঈশ্বরের কাছে আছো, তুমি ওনাকে বলো, এই জন্মে হোক বা পরের জন্মে বা দু জন্মের সন্ধিক্ষণে আমাদের দেখাটা যেন হয়। কত কথা জমে আছে বাবা। এক পাহাড়।”
বাবার জন্মদিনে তার প্রিয় পারফিউম গায়ে মেখেছেন স্বস্তিকা। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “আজ তোমার ফেভারিট ব্রুট পারফিউমটা মেখেছি, তোমার জন্মদিনে তোমার গায়ের গন্ধ থাকুক গায়ে। রোজ ঘুমাতে গেলে ভাবি, চোখ খুললেই হঠাৎ যদি তোমায় দেখতে পাই, জড়িয়ে ধরে বসে থাকব, অনেকক্ষণ। বেশি কিছু চাই না, এইটুকুই। কখনো এলে ‘ভেবলি’ বলে ডেকো বাবা, ঠিক বুঝে নেব তুমি ডেকেছ। ভালো থেকো। তোমার পথে ঝলমলে আলো থাক, ইউডি কোলনের গন্ধ থাক, অনেকটা যত্ন আর ভালোবাসা থাক। আমার কাছে অপেক্ষা থাক, আমার সারাক্ষণের সঙ্গী।”
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ার শেরপুরে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলেন ৩ বন্ধু, দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ জনের
বগুড়ার শেরপুরে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার গাড়িদহ ইউনিয়নের ফুলবাড়ী বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আরও একজন আহত হয়েছেন।
নিহত দুজন হলেন গাড়িদহ ইউনিয়নের রামেশ্বরপুর গ্রামের মেহেদী হাসান (২০) এবং শেরপুর পৌর শহরের গোঁসাইপাড়া মহল্লার সাহাবুল হাসান (২০)। আহত হয়েছেন একই এলাকার উৎসব চক্রবর্তী (২০)।
প্রত্যক্ষদর্শী দুজন জানান, তিন বন্ধু একটি মোটরসাইকেলে করে রামেশ্বরপুর গ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মোটরসাইকেলের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে গাড়িটি রাস্তার পাশে একটি দোকানের শাটারের সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে তিনজনই গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনায় মেহেদী হাসান ও সাহাবুল হাসান গুরুতর জখম হন। তাঁদের হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আহত অপরজন উৎসব চক্রবর্তী স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তিনজনই বন্ধু ছিলেন। মোটরসাইকেলের চালক ছিলেন সাহাবুল হাসান।
আহত উৎসব চক্রবর্তী বলেন, গতকাল রাতে মেহেদী হাসানকে বাড়িতে পৌঁছে দিতে যাওয়ার সময় দ্রুতগতিতে মোটরসাইকেল চালানোর কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তিনজনই এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন।
বগুড়া সদর থানার ছিলিমপুর পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) লাল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ১০টা থেকে সোয়া ১০টার মধ্যে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাহাবুল হাসান ও মেহেদী হাসান মারা যান।
শেরপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জয়নুল আবেদীন বলেন, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে দুজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।