আমরা মালয়েশিয়ার সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য চাই: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 13th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ মালয়েশিয়ার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক বাড়াতে চায় এবং একইসঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্য নিশ্চিত করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি ) বিকালে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার মোহাম্মদ শোহাদা অথমানের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।
সাক্ষাৎকালে তারা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন।
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে কোরিয়া, জাপান ও সিঙ্গাপুরের সাথে মুক্তি বাণিজ্য চুক্তির লক্ষে আলোচনা শুরু করেছে। মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য দ্রুত আলোচনা শুরু করা দরকার। এতে দুদেশই উপকৃত হবে।’’
বতর্মান প্রেক্ষাপটে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বহুবিধ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উপযুক্ত পরিবেশ বিরাজ করছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের রিজার্ভের একটি বড় অংশ আসে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স থেকে। দক্ষ জনশক্তির রপ্তানির মাধ্যমে আমরা সেখানে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে চাই।’’
এ সময় তিনি বাংলাদেশে স্পেশাল ইকনোমিক জোনে আরো বেশি মালয়েশিয়ান বিনিয়োগের আহ্বান জানান।
পামওয়েল রপ্তানি বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘‘রমজান মাসে বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা বেড়ে যায়। দেশে পামওয়েলের চাহিদা রয়েছে।’’
মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার বলেন, ‘‘মালয়েশিয়া ইলেকট্রিক চিপস ও সেমি কন্ডাক্টর খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে। এ খাতে সেমি কন্ডাক্টর ডিজাইনারসহ প্রচুর দক্ষ জনবল প্রয়োজন। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের আমরা প্রশিক্ষণ ও শিক্ষাদানের মাধ্যমে দক্ষ করে সেখানে কাজের সুযোগ করে দিতে চাই।’’
এ সময় তিনি দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে সহযোগিতা বাড়ানোরও প্রতিশ্রুতি দেন।
মোহাম্মদ শোহাদা অথমান আরো বলেন, ‘‘বিশ্বব্যাপী হালাল ফুডের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। মালয়েশিয়ায় হালাল ফুডের বাজার ১১৩ বিলয়ন ডলার। ২০৩১ সালে বিশ্বে এ বাজারের আকার দাড়াবে ৬ ট্রিলিয়ন ডলারে। মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উচিত হালাল ফুডের বাজার লক্ষ করে প্রস্তুতি নেওয়া।’’
এ সময় হাইকমিশনার হালাল ফুড প্রস্তুত ও সার্টিফিকেশনে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
উল্লেখ্য ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ছিল ২৮৭৮.
হাসনাত//
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
২০ বছর পর সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলার আসামির আত্মসমর্পণ
দীর্ঘ ২০ বছর পলাতক থাকার পর খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার আত্মসমর্পণ করেছেন। সোমবার খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমাম জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।
ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জিল্লুর রহমান খান সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ ওরফে নুরুর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন।
জানা যায়, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাব অদূরে সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে খুন হন সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা।
ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মাজাহারুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরের পর আদালতে উপস্থিত হন ডিসকো সাত্তার। ওকালত নামায় তিনি উল্লেখ করেন, জীবন এবং জীবিকার তাগিদে খুলনার বাইরে থাকায় মামলার রায় প্রচারের সময়ে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি রায়ের বিষয়টি অবগত ছিলেন না।
ট্রাইব্যুনাল থেকে জানা গেছে, সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যার দু’দিন পর ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি খুলনা সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) রণজিৎ কুমার দাস বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার তৎকালীন ওসি মোশাররফ হোসেন ২০০৪ সালের ২০ জুন হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট দাখিলের পর থেকে ডিসকো সাত্তার পলাতক ছিলেন।
দীর্ঘ এক যুগ পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর আদালত মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় ৯ জন আসামিকে দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন কারদণ্ড প্রদান করেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন ওরফে নুরুজ্জামান, বুলবুল ওরফে বুলু, আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম ওরফে বোমরু আকরাম ওরফে বোমা আকরাম ওরফে ফাটা, আলী আকবর সিকদার ওরফে শাওন, ছাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বেল্লাল, মিঠুন ওরফে মিটুল, সাকা ওরফে শওকাত হোসেন, সরো ওরফে সরোয়ার হোসেন।
মামলায় দু’জন খালাস পেয়েছিলেন। তারা হলেন হাই ইসলাম ও কচি ওরফে ওমর ফারুক।