প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ চায় জাতীয় শিক্ষক ফোরাম
Published: 20th, October 2025 GMT
দেশে চলমান এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি মেনে নিয়ে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম।
শিক্ষকদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে ফোরামের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি পেশ করে ৩ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নবম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা
শেকৃবি উপাচার্যসহ ২ অধ্যাপকের বিরুদ্ধে গবেষণাপত্র চুরির অভিযোগ
৭ দফা দাবি-
১.
২. ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দিতে হবে।
৩. এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের ৭৫% উৎসব ভাতা দিতে হবে।
৪. ১০৮৯টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার এমপিও ফাইলে প্রধান উপদেষ্টার স্বাক্ষর করে গেজেট প্রকাশ ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনুদানবিহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলো এমপিওর জন্য গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে হবে।
৫. ৪% কর্তন বন্ধ এবং অবসরকালীন প্রাপ্ত অর্থ অনধিক ৬ মাসের মধ্যে প্রদান করতে হবে।
৬. শিক্ষকদের হয়রানি ও হামলার বিচার, শিক্ষক সুরক্ষা আইন ও সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো প্রণয়ন, সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ প্রদান, শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলকরণ এবং সব পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু করতে হবে।
৭. সর্বোপরি শিক্ষায় বৈষম্য নিরসনে শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ করতে হবে।
সাত দফা দাবি আদায়ে ফোরাম ৩ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তা হলো-চলমান শিক্ষক আন্দোলনের সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ ও অংশগ্রহণ। দাবি আদায় না হলে আগামী ২৫ অক্টোবর সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন। ২৬ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া বলেন, “শিক্ষাবর্ষের শেষ পর্যায়ে এসে শিক্ষক আন্দোলনে শিক্ষা ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে। সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা তালাবদ্ধ।”
“সামনে নির্বাচনী পরীক্ষা, বার্ষিক পরীক্ষা, তদুপরি এ বৎসরে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। তাই সরকারের উচিত দ্রুত দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। নতুবা শিক্ষক আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে, তাতে শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না। অতএব, এই অচলাবস্থা নিরসন করে শিক্ষক-কর্মচারীদের বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপনা করেন ফোরামের সেক্রেটারি জেনারেল প্রভাষক ডা. আব্দুস সবুর।
উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি উপাধ্যক্ষ মাওলানা মো. নেছার উদ্দিন, অধ্যাপক ডক্টর কামরুজ্জামান, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল ইশতিয়াক আল আমীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম জাহিদ তিতুমীর।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র ব যবস থ এমপ ও
এছাড়াও পড়ুন:
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে নবান্নের আয়োজনে বাংলার ঐতিহ্যের পরিচয়
অগ্রহায়ণ মাস বাঙালির গ্রামীণ জীবনে নিয়ে আসে উৎসব ও আনন্দের বিশেষ আবেশ। নতুন ধান ঘরে তোলার পর সেই চালের প্রথম ভাত, পিঠাপুলির ঘ্রাণ আর মিলেমিশে খাওয়ার সংস্কৃতি—সব মিলিয়ে নবান্ন উৎসব বাঙালির কৃষিভিত্তিক সমাজ ও সংস্কৃতির এক অনিবার্য অনুষঙ্গ। তবে আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা ও যান্ত্রিকতায় এ উৎসব অনেকটাই হারিয়ে যাচ্ছে। তবু শিকড়ের টান ধরে রাখতে ও তরুণ প্রজন্মকে বাংলার ঐতিহ্যের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েক বছর ধরে আয়োজন করা হচ্ছে নবান্ন উৎসব। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘পদাতিক’ এ আয়োজন করে আসছে।
এবারও বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চ প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে দুই দিনব্যাপী নবান্ন উৎসব ‘নব ছন্দে নবান্ন’। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শুরু হওয়া এ উৎসবকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসজুড়ে রঙিন পোশাকে সজ্জিত শিক্ষার্থীরা, গানবাজনার সুর, পিঠার সৌরভ আর গ্রামীণ মোটিফে সাজানো স্টল মিলিয়ে তৈরি হয় চিরায়ত গ্রামীণ উৎসবের উষ্ণ আবহ।
সন্ধ্যায় পদাতিক সদস্যদের পরিবেশনায় পঞ্চকবির গান দিয়ে উৎসবের উদ্বোধনী হয়। এরপর একে একে পরিবেশিত হতে থাকে কোরাস গান, একক সংগীত, নাচ, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। গভীর রাত পর্যন্ত চলে আয়োজনের বিভিন্ন পরিবেশনা। আজ শুক্রবারও চলবে এ উৎসব।
সংগঠনটির উদ্যোগে মুক্তমঞ্চের সামনে সাজানো হয় পিঠা, ঐতিহ্যবাহী খাবার, হাতে তৈরি সামগ্রী ও গ্রামীণ জীবনধারাকে উপস্থাপন করা ১৪টি স্টল। চিতই, ভাপা, পাটিসাপটা, দুধ–চিড়াসহ নানা ধরনের শীতের পিঠায় দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ আকর্ষণ ছিল শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি চুড়ি ও বাহারি রঙের গয়না।
উৎসবের প্রথম দিনে সন্ধ্যায় পদাতিক সদস্যদের পঞ্চকবির গানের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় অনুষ্ঠানমালার। এরপর একে একে পরিবেশিত হয় কোরাস সংগীত, একক সংগীত, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও নাট্যাংশ। শিক্ষার্থীদের শৈশবের স্মৃতিতে ফিরিয়ে নিতে মেলায় যুক্ত করা হয় নাগরদোলা ও শিশুদের ট্রেন। এসব আয়োজন শিশুদের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্ক দর্শনার্থীদের মধ্যেও বাড়তি উৎসাহ তৈরি করে।
মেলায় আসা শিক্ষার্থী সুমাইয়া ইসলাম বলেন, ‘সারা বছর ক্লাস, পরীক্ষার চাপের মধ্যে এমন গ্রামীণ উৎসব আমাদের মানসিক স্বস্তি ও ভিন্ন রকম আনন্দের উপলক্ষ। তাই সারা বছর আমরা এ উৎসবের জন্য অপেক্ষায় থাকি।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পঞ্চকবির গানের মধ্যদিয়ে উৎসবের উদ্বোধন হয়