গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুর বাজারে ককটেল ফাটিয়ে এক বিকাশ ব্যবসায়ীর ৬ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্য এক ব্যবসায়ী।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। 

ভুক্তভোগী বিকাশ ব্যবসায়ী হলেন ফারুক হোসেন। এছাড়া আহত অন্য ব্যবসায়ী শিমুল হোসেনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার সফিপুর বাজারের যমুনা রোডের সামনে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়। পরপর কয়েকটি ককটেল ফুটলে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। প্রাথমিকভাবে কেউ কিছু বুঝতে না পারলেও সামনে গিয়ে দেখা যায় বিকাশ ব্যবসায়ীর টাকা নিতেই ককটেল ছোঁড়া হয়েছে। 

বিকাশ ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন টাকা নিয়ে মাত্র দোকান থেকে বের হলে সঙ্গে সঙ্গে দুটি প্রাইভেটকার থেকে তাকে লক্ষ্য করে ককটেল ছুঁড়ে বেশ কয়েকজন দুর্বৃত্তরা। এ সময় ভয়ে তার হাত থেকে টাকার ব্যাগ পড়ে যায়। এটি দেখে পাশের দোকানদার শিমুল হোসেন দৌড়ে আসলে তাকে উদ্দেশ্য করেও ককটেল ছুঁড়ে মারা হয়। এতে শিমুল গুরুতর আহত হয়। তবে আশপাশের লোকজন জড়ো হওয়ার আগেই দুর্বৃত্তরা টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। 

ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী ফারুক হোসাইন বলেন, “দোকান বন্ধ করে টাকার ব্যাগটা মাত্র হাতে নিয়েছি, এমন সময় প্রাইভেটকার থেকে ৫-৭ জন নেমে আমার দোকান লক্ষ করে ককটেল ছুঁড়ে মারে। এরপর আমার ব্যাগে থাকা ৬ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়।” 

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রিয়াদ মাহমুদ জানান, গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা বিকাশ ব্যবসায়ীর কিছু টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকা/রেজাউল/ইমন

.

উৎস: Risingbd

এছাড়াও পড়ুন:

কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য আহরণ শুরু হচ্ছে শনিবার মধ্যরাতে

তিন মাস দুই দিন পর কাপ্তাই হ্রদে শুরু হচ্ছে মৎস্য আহরণ। শনিবার (২ আগস্ট) মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরতে পারবেন জেলেরা। 

কাপ্তাই হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় কয়েক বছরের মধ্যে এবার নির্দিষ্ট সময়ে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে জেলা প্রশাসন। অন্যান্য বছর ২-৩ দফা সময় বাড়িয়ে প্রায় চার মাস পর মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হতো। কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের বংশবৃদ্ধি, প্রজনন এবং অবমুক্ত করা মাছের বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর তিন মাস কাপ্তাই হ্রদে মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা দেয় জেলা প্রশাসন।

এদিকে, মাছ আহরণে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের পর শুধু জেলে পাড়া নয়, কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে জেলার সবচেয়ে বড় মৎস্য অবতরণকেন্দ্র বিএফডিসি ঘাট। মাছ পরিবহন ও সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে ড্রাম, বরফ ভাঙার মেশিন। দীর্ঘ ৯২ দিনের কর্মহীন জীবনের অবসান ঘটাতে প্রহর গুনছেন জেলেরা। ইতোমধ্যে সব প্রস্তুতি সেরে রেখেছেন ব্যবসায়ী ও বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি)। 

বিএফডিসি সূত্র বলছে, কাপ্তাই হ্রদে কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন, অবমুক্ত করা পোনা মাছের সুষ্ঠু বৃদ্ধির জন্য ১ মে থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়। এ সময়ে হ্রদে প্রায় ৬০ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। কাপ্তাই হ্রদে মৎস্য শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন প্রায় ২৬ হাজার জেলে। 

রাঙামাটির শহরের পুরান পাড়া জেলা পল্লীর বাসিন্দা নেপাল দাশ জানিয়েছেন, মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞাকালে যে সরকারি সহায়তা পাওয়া যায়, তাতে পরিবার নিয়ে চলা কঠিন। দীর্ঘ তিন মাস পর মাছ ধরতে নামতে পারব, এতে খুশি আমরা। 

নতুন পাড়ার জেলে অমর কান্তি দাশ বলেছেন, হ্রদে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় মাছগুলো বড় হওয়ার সুযোগ পাবে। তবে, পানিতে ঢেউ থাকায় শুরুতে বেশি মাছ পাওয়া যাবে না। পানি কিছু কমে আসলে ও স্থির হলে ভালো মাছ পাব, আশা করি। হ্রদে নামার জন্য যা যা প্রস্তুতি, সবকিছু শেষ করেছি। জাল ও নৌকা মেরামত করা হয়েছে। এখন শুধু লেকে নামার অপেক্ষা। 

রাঙামাটি মৎস্য ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি উদয়ন বড়ুয়া বলেছেন, এবার নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে পর্যাপ্ত বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদে যথেষ্ট পানি থাকায় মাছ প্রথম থেকেই প্রজনন এবং বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। আশা করছি, এবার পর্যাপ্ত মাছ পাওয়া যাবে। ব্যবসায়ীরা সব প্রস্ততি নিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে বিএফডিসি ঘাটে মাছ আসবে।

বিএফডিসির রাঙামাটি অঞ্চলের ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেছেন, নিষেধাজ্ঞাকালীন আমাদের উপকেন্দ্রগুলোর যেসব অবকাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন ছিল, সেসব আমরা শেষ করেছি। অন্যান্য যেসব প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন, সেসবও শেষ হয়েছে। আশা করছি, গত বছরের মতো এবছরও ভালো মাছ পাওয়া যাবে।

ঢাকা/শংকর/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ