বাংলাদেশের সাংবিধানিক নাম পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ করেছে সংবিধান সংস্কার কমিশন। বর্তমান ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ পরিবর্তন করে ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ করার প্রস্তাবও করেছে কমিশন।

আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কাছে সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন। বর্তমানে বাংলাদেশের সংবিধানের নাম হিসেবে উল্লেখ আছে, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান’। সংবিধান সংস্কার কমিশনের সুপারিশে সংবিধানের প্রস্তাব হিসেবে বলা হয়েছে, ‘জনগণের সম্মতি নিয়ে আমরা এই সংবিধান জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান হিসেবে গ্রহণ করছি।’

এই কমিশনের সূপারিশে বলা হয়েছে- সংবিধানের প্রযোজ্য সব ক্ষেত্রে ‘প্রজাতন্ত্র’ এবং ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দের পরিবর্তে ‘নাগরিকতন্ত্র’ এবং ‘জনগণতন্ত্রী বাংলাদেশ’ শব্দ ব্যবহৃত হবে। তবে ইংরেজি সংস্করণে ‘রিপাবলিক’ ও ‘পিপলস রিপাবলিক অব বাংলাদেশ’ শব্দগুলো থাকছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

২ থেকে ৫ টাকার সবজিও পাওয়া যায় গোলবানুর দোকানে, ছাত্রীরাই একমাত্র ক্রেতা

চারপাশ খোলা, বাঁশ ও কাগজের ছাউনি দিয়ে একটি ঝুপড়ি দোকানে প্লাস্টিকের চেয়ারে বসে আছেন ষাটোর্ধ্ব এক নারী। জীর্ণশীর্ণ কাপড় ও শরীর দেখে যে কেউ ভাবতে পারেন, তিনি বিশ্রাম নিচ্ছেন। তাঁর সামনে ছয় থেকে সাত রকমের শীতকালীন সবজির পসরা সাজানো আছে। ছুটির দিন থাকায় কিছুক্ষণ পরপর ক্রেতারা ভিড় জমাচ্ছেন। দাঁড়িপাল্লা দিয়ে ওজন করে তাঁদেরকে ব্যাগে করে সবজি দিচ্ছেন ওই নারী। বিক্রয়মূল্য নিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে দরদাম করতেও দেখা যায় তাঁকে।

শনিবার সকালে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক প্রথম ছাত্রী হলের পাশে বেশ কিছুক্ষণ এ দৃশ্য দেখার পর কথা হয় ওই নারীর সঙ্গে। তিনি জানালেন, তাঁর নাম গোলবানু। মুক্তিযুদ্ধের সময় তাঁর বয়স ১১ ছিল। সে অনুযায়ী এখন তাঁর বয়স ৬৩ হবে। স্বামী জমশেদ আলী অসুস্থ। পরিবারের সদস্য ১১ জন। এর মধ্যে তাঁর এক ছেলে, ছেলের বউ, ছেলের সন্তান, অসুস্থ স্বামীসহ মোট পাঁচজন সদস্য আছেন। অন্যদিকে বিবাহিত মেয়ের স্বামী শারীরিকভাবে রোগাক্রান্ত হওয়ায় তাঁর সন্তানসহ পরিবারের ছয় সদস্য গোলবানুর পরিবারেই থাকেন। গোলবানুর ছেলে দিনমজুরির কাজ করেন। তবে সব দিন কাজ মেলে না। মেয়ে মানুষের বাড়িতে কাজ করেন। বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন টিয়রবাড়ি এলাকায় তাঁরা বসবাস করেন।

গোলবানুর দোকানের ক্রেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রীরা। ছাত্রীদের কেউ কেউ গোলবানুকে ‘খালা’, কেউ ‘মামি’ বলে সম্বোধন করেন। হলে ব্যক্তিগতভাবে রান্না করার সুযোগ থাকায় ছাত্রীদের অনেকেই নিজের খাবার নিজেই তৈরি করেন। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থেকে সবজি আনতে গিয়ে সময় এবং বাড়তি অর্থ গুনতে হয় তাঁদের। সে জন্য অধিকাংশ ছাত্রীই গোলবানুর কাছ থেকে তরকারি কেনেন।

শনিবার ক্যাম্পাসে ছুটির দিন থাকায় সবজি-তরকারি একটু কম পরিমাণে নিয়ে আসেন গোলবানু। আড়ত থেকে ওই দিন তিনি এক টুকরি টমেটো, ৫ কেজি আলু, ৬ কেজি শিম, ১৫ কেজি বেগুন, ২৪টি ফুলকপি, ১০টি বাঁধাকপি, ৫ কেজি পেঁয়াজের ডাঁটা, ৫ কেজি গাঁজর, আড়াই কেজি কাঁচা মরিচ, ১ কেজি ধনেপাতা, কয়েক আঁটি পুঁইশাক ও লালশাক এনেছেন বলে জানান। এদিন দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাঁর অর্ধেক বিক্রি হয়েছিল।

গোলবানুর দোকানের ক্রেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের ছাত্রীরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ