ভারতীয় নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেওয়ার আগেই গুজরাটের পোরবন্দরে বিধ্বস্ত হয়েছে আদানি ‘ডিফেন্স অ্যান্ড এরোস্পেস’ নির্মিত ‘দৃষ্টি ১০ স্টারলাইনার’ ড্রোন। মঙ্গলবার হিন্দুস্তান টাইমস এ তথ্য জানিয়েছে।

ইজ়রায়েলি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আদানি গ্রুপ এই ড্রোন তৈরি করেছিল। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে এই স্বয়ংক্রিয় ড্রোন তৈরি করা হয়েছে। যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের পাশাপাশি আকাশপথে নজরদারি চালাতে বিশেষ ভাবে উপযোগী এই যন্ত্র। প্রতিটি ড্রোনের জন্য খরচ পড়েছে ১৪৫ কোটি রুপি।

‘প্রধানমন্ত্রী মোদির ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি গৌতম আদানির সংস্থার ড্রোন কেনা নিয়ে কংগ্রেসসহ বিরোধী দলগুলো প্রশ্ন তুলেছিল। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিন্দুস্তান এরোনটিক্স লিমিটেড এবং ভারত ডায়নামিক্স ড্রোন তৈরি করতে সক্ষম হলেও তাদের বাদ দিয়ে আদানিকে ড্রোন তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়ে সরব হন বিরোধীরা। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অভিযোগ করেছিলেন, আদানি গোষ্ঠী ইজ়রায়েল থেকে চারটি ‘হার্মিস-৯০০’ ড্রোনের যন্ত্রাংশ আমদানি করে। আর তা জুড়ে দিয়ে সেই ড্রোনের নাম ‘দৃষ্টি-১০ স্টারলাইনার’ রেখেছে। তারা শুধু ড্রোনের এয়ারফ্রেম তৈরি করেছে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, সামুদ্রিক অভিযানে যুক্ত হতে ড্রোনটিকে হায়দারাবাদ থেকে পোরবন্দরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। নৌবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের আগে পরীক্ষামূলক উড়ানের সময় এটি বিধ্বস্ত হয়। বিধ্বস্ত ড্রোনটি উদ্ধার করেছে সংশ্লিষ্ট সংস্থা। বিষয়টি সম্পর্কে এখনও কোনও বিবৃতি জারি করেনি আদানি গ্রুপ।

উপকূলে নজরদারি বৃদ্ধিতে এই ড্রোনটি নৌবাহিনীর বিশেষ সম্পদ হয়ে উঠতে পারে বলে আশা করা হয়েছিল। নৌবাহিনীর হাতে এই ড্রোন আসলে সমুদ্রে শত্রুপক্ষের জাহাজ বা জলদস্যুদের জলযানে নজরদারি করতে সুবিধা হবে। যেকোনো পরিবেশে কার্যকর এই ড্রোন, ঝড়-ঝঞ্ঝা সইতেও সক্ষম বলে দাবি করেছিল প্রস্তুতকারক সংস্থা।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই ড র ন

এছাড়াও পড়ুন:

এখনো নজরদারি ও অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে: আর্টিকেল নাইনটিন

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিন মনে করে, বাংলাদেশ সরকারের প্রস্তাবিত ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশের খসড়ায় নজরদারি, ভিন্নমত দমনের সুযোগ আছে। এতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে অপব্যবহারেরও সুযোগ রয়ে গেছে।

আজ রোববার এক বিবৃতিতে অধ্যাদেশের খসড়ার ওপর নিজেদের পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে আর্টিকেল নাইনটিন। সংস্থাটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের দৃষ্টিকোণ থেকে অধ্যাদেশ প্রণয়নের আহ্বান জানিয়েছে।

আর্টিকেল নাইনটিন বলেছে, ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশটি শক্তিশালী সুরক্ষা ব্যবস্থা এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ না হলে তা সেন্সরশিপ ও নজরদারির সুযোগ বাড়ানোর পাশাপাশি দমনমূলক হয়ে উঠতে পারে।

খসড়াটির কিছু দুর্বলতা চিহ্নিত করেছে মানবাধিকার সংস্থাটি। তাদের মতে, তথ্যের অপব্যবহার রোধের প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা আইনটিতে অনুপস্থিত।

আর্টিকেল নাইনটিন মনে করে, রাজনৈতিক মত, স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য বা বায়োমেট্রিক তথ্যের মতো সংবেদনশীল তথ্যের বিষয়গুলো আলাদাভাবে চিহ্নিত না থাকায় অধ্যাদেশটি দুর্বল গোষ্ঠী, কর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর বৈষম্যমূলক প্রোফাইলিং বা নজরদারি চালানোর সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে যথাযথ সুরক্ষা না থাকলে মানুষ অপব্যবহার বা নজরদারির ভয়ে সক্রিয়ভাবে আলোচনায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পারে।

আর্টিকেল নাইনটিনের আশঙ্কা, নিরপেক্ষ মানদণ্ড ছাড়া তথ্য রক্ষণাবেক্ষণকারী কর্তৃপক্ষ নির্ধারণ করা হলে তা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে গণমাধ্যম এবং নাগরিক সমাজের বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করা হতে পারে।

মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, উপাত্ত সুরক্ষা বোর্ড গঠনের যে নিয়ম রয়েছে, তাতে নির্বাহী বিভাগের নিয়ন্ত্রণ থাকায় এই কর্তৃপক্ষের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা সুসংহত নয়। এতে বোর্ডের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তাদের ক্ষমতার প্রয়োগ একপক্ষীয় বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে উঠতে পারে।

আরও পড়ুনব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া চূড়ান্ত০৩ জুন ২০২৫

এ ছাড়া অভিযোগ গ্রহণ ও নিষ্পত্তির কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না থাকায়, তথ্যের অপব্যবহারের শিকার ব্যক্তিরা প্রকৃত প্রতিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে আর্টিকেল নাইনটিন। সংস্থাটি মনে করে, মতপ্রকাশের স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি গুরুতর সমস্যা।

উল্লেখ্য, ৩ জুন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫–এর খসড়া প্রস্তুত করেছে সরকার। শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়িক সংগঠনসহ সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাঠানো মতামত যাচাই–বাছাই করে খসড়াটি সংযোজন–বিয়োজনের মধ্য দিয়ে বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

আরও পড়ুনবাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ‘সংকটজনক’: আর্টিকেল নাইনটিন২১ মে ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এখনো নজরদারি ও অপব্যবহারের সুযোগ রয়েছে: আর্টিকেল নাইনটিন