অবশেষে বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের বমুখাল থেকে অপহৃত ৭ তামাক শ্রমিককে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছেন যৌথবাহিনী। অপহরণের পর টানা ২০ ঘণ্টা অভিযান চালিয়ে বুধবার দিনগত রাত ৮টার দিকে উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ি মেরাইত্তা লেবুখাল থেকে তাদেরকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃতরা হলেন- খামারের মালিক মো.

আমিন (৩৫), খামার মালিকের ছেলে মো. সাকিব (১৪), শ্রমিক মো. আলেক্স জোহার (৩৫), মো. শফি আলম (৩২), মো. জাভেদ (২৬), আসাদ (১৮) ও মো. আবু হানিফ (২১)। এরা সবাই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বাসিন্দা ও বমু খাল এলাকায় মো. রফিক ও মো. আমিনের খামার বাড়িতে তামাক ক্ষেতে শ্রমিকের কাজ করতেন।

সূত্র জানায়, গত মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টার দিকে গজালিয়া ইউনিয়নের বমুখাল নামক স্থান থেকে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা তিনটি খামার বাড়িতে হানা দিয়ে ৭ জন তামাক চাষে নিয়োজিত শ্রমিককে তুলে নিয়ে যান। পরে খামার মালিক মো. রফিকের মোবাইল ফোনে অপহৃতদের স্বজনদের কাছে মুক্তিপণও দাবি করা হয়। খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আবু সৈয়দ ও পুলিশ পরিদর্শক আতিকুর রহমানের নেতৃত্বে যৌথ একটি টিম উদ্ধার অভিযানে নামেন। 
অভিযানে টিকতে না পেরে একপর্যায়ে বুধবার দিনগত রাত ৮টার দিকে সরই ইউনিয়নের মেরাইত্তা লেবুখাল এলাকায় অপহৃতদের ছেড়ে দিয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। 

এ বিষয়ে অপহৃত তামাক খামার মালিক মো. আল আমিন জানান, সশস্ত্র পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা প্রথমে ৯ জনকে তুলে নিয়ে গেলেও কিছুদূর গিয়ে দুজনকে মারধর করে ছেড়ে দেন। বাকী ৭ জনকে চোখ বেঁধে গহীন পাহাড়ে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সন্ত্রাসীরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে খামার মালিক রফিকের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। তারা জেএসএসের সদস্য বলে দাবি করেন বলেও জানান অপহৃতরা। 

অপহৃত ৭ তামাক শ্রমিককে উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, যৌথবাহিনীর অভিযানে সন্ত্রাসীরা টিকতে না পেরে অপহৃতদের ফেলে পালিয়ে যায়। উদ্ধার তামাক কৃষকদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অপহরণ অপহ ত

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা

অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।

ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।

সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।

স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।

মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা