জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির মতবিনিময় সভায় পদবঞ্চিত ও পদধারীদের মধ্যে হট্টগোল ও ভাঙচুর হয়েছে৷ এতে সভাটি স্থগিত করা হয়৷ এ ঘটনার ইন্ধন দিয়েছে শিবির বলে দাবি করছেন শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সভায় এ ঘটনা ঘটে৷ ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মোতাবেক একটি সভার আয়োজন করে শাখা ছাত্রদলের নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটি। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা পদের দাবি জানিয়ে এবং কমিটিতে ছাত্রলীগ ও শিবির পদ পেয়েছে- এমন দাবি তুলে স্লোগান দিতে দিতে বের হয়ে যান। সেখান থেকে বের হয়ে তারা কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়া প্রাঙ্গণে চলে যান। কিছুক্ষণ পর তারা আবার ফিরে গিয়ে জহির রায়হান মিলনায়তনের সেমিনার কক্ষের বাইরে জড়ো হয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় সেমিনারের ভেতরে থাকা পদধারী নেতাকর্মীরাও পাল্টা স্লোগান দিতে থাকেন। ফলে সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উভয়পক্ষের স্লোগান চলাকালে মিলনাতয়নে লাইট বন্ধ করে সেমিনার কক্ষের জানালার কাচ ভাঙচুর করা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এসে বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটেছে; তা আসলেই কাম্য নয়। আমরা চাই, সবাই সুন্দরভাবে সহাবস্থানের মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করুক। আশা করবো, কেউ রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার ব্যাপারে সচেতন থাকবে।’ 

ছাত্রদলের পদবঞ্চিতদের দাবি, আওয়ামী দুঃশাসনের কঠিন সময়ে তারা রাজনীতি করে এসেছেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে এসেছেন। কিন্তু নবগঠিত কমিটিতে তাদের মূল্যায়ন করা হয়নি। উলটো দুঃসময়ে যাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি, যারা ছাত্রলীগ করেছে; তাদের দিয়ে পকেট কমিটি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে আজকের সভা তারা বর্জন করেছেন।

পদবঞ্চিত নেতা ইকবাল হোসেন বলেন, ‘জাবি ছাত্রদলের কমিটিতে অনেক ত্যাগীদের জায়গা হয়নি। ত্যাগীদের পদায়নের কথা বলে এক মাসের জন্য এ সিনিয়র কমিটি করা হয়েছে। কিন্তু এখানে অনেক ত্যাগী কর্মীকে বাদ দিয়ে ছাত্রলীগ, বির্তকিত লোকজন, এমনকি ৫ আগস্টের পর রাজনীতিতে এসেছে এমন প্রায় শতাধিক লোক পদ পেলেও ত্যাগীরা বঞ্চিত হয়েছে।' 

মতবিনিময় সভায় হট্টগোলে শিবিরের ইন্ধন রয়েছে দাবি করে শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর। তিনি বলেন, আমরা ধারণা করছি, শিবিরের ইন্ধনে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত সভা বানচালের চেষ্টা করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে আমাদের একটা অংশ আছে, যাদের মধ্যে না পাওয়ার বেদনা আছে। কিন্তু আমরা মনে করি, তৃতীয় কোনো শক্তির ইন্ধনে এ ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কেন্দ্রীয় সংসদের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। সেখানে নির্দেশনা আছে, কারও বিরুদ্ধে যদি অকাট্য প্রমাণ থাকে ছাত্রলীগ ও শিবির সংশ্লিষ্ট থাকার, আমরা তাদের অব্যাহতি দিবো।

এদিকে, রাত ৯টার দিকে ছাত্রদল কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পদ ভাঙচুর ও অছাত্রদের দ্বারা ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজনীতি তৈরি করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জাবি শাখার নেতাকর্মীরা৷

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র ন ত কর ম র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডে আমূল পরিবর্তন আনলেন নরেন্দ্র মোদি

কাশ্মীরের পেহেলগামকাণ্ডের পর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডের (এনএসএবি) খোলনলচে বদলে দিল নরেন্দ্র মোদি সরকার। আজ বুধবার ওই পর্ষদের শীর্ষে বসানো হলো ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের (র) সাবেক প্রধান অলোক যোশিকে। ২০১২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ছিলেন র–এর প্রধান।

পেহেলগামকাণ্ডে ও পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাতের আবহে দীর্ঘ সাত বছর পর এনএসএবি পুনর্গঠন করা হলো।

এই বোর্ডের বাকি ৬ সদস্যের নামও ঘোষণা করা হয়েছে। পিটিআই ও এএনআই সরকারি সূত্রের বরাতে জানিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চলের সাবেক এয়ার কমান্ডার এয়ার মার্শাল পি এম সিনহা, দক্ষিণাঞ্চলের সাবেক সেনা কমান্ডার লে. জেনারেল এ কে সিং এবং সাবেক রিয়ার অ্যাডমিরাল মন্টি খান্না নবগঠিত বোর্ডের সদস্য হয়েছেন।

সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক এই তিন কর্তার পাশাপাশি নবগঠিত এনএসএবির সদস্য করা হয়েছে ভারতীয় পুলিশ সার্ভিস কমিশনের দুই সাবেক কর্তা রাজীব রঞ্জন ভার্মা ও মনমোহন সিংকে। বোর্ডের ষষ্ঠ সদস্য হয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্তা বি ভেঙ্কটেশ ভার্মা।

কাশ্মীরের পেহেলগামে ২২ এপ্রিল সন্ত্রাসী হামলার পর এনএসএবির পুনর্গঠন করা হলো। আজ বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্তের খবর বার্তা সংস্থা পিটিআই ও এএনআই জানায়।

এনএসএবির প্রধান দায়িত্ব জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় ব্যাখ্যা ও পর্যালোচনা করে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির আলোকে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা। এনএসএবি সেই সুপারিশ করে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলকে (এনএসসি)।

জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলও সময়ে–সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে এনএসএবির পরামর্শ চায়। পরিস্থিতির বিচারে এনএসএবি সেই সব বিষয়ে সরকারকে তার অভিমত জানায়। জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের শীর্ষে রয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী। অজিত দোভাল জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বোর্ডে আমূল পরিবর্তন আনলেন নরেন্দ্র মোদি