হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না সিলেট স্ট্রাইকার্স। বিপিএলের পুরোনো দলটি এবার ভালো কিছুর প্রত্যাশায় ছিল। কিন্তু টুর্নামেন্টে সাত ম্যাচের মাত্র দুটিতে এখন পর্যন্ত জিততে পেরেছে তারা। শুক্রবার দুর্বার রাজশাহীর কাছে ৬৫ রানে বিধ্বস্ত হয়েছে। যেখানে ব্যাটসম্যানরা ছিলেন একেবারেই নিষ্প্রভ। ১৮৫ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় সিলেটের ইনিংস।

ম্যাচ হারের পর সিলেটের অধিনায়ক আরিফুল হক জানিয়েছেন, যে লক্ষ্য পেয়েছিলেন এবং উইকেট যেমন ছিল, তাড়া করা যেত। ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হওয়ায় তা হয়নি। বিশেষ করে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা রান না করায় হতাশ আরিফুল। এছাড়া বিদেশী ক্রিকেটারদের থেকে পুরোপুরি সাপোর্ট (পারফরম্যান্স) না পাওয়ায় সিলেট মাঠে ফল পাচ্ছে না বলেও দাবি তার।

রাজশাহীর বিপক্ষে হেরে যাওয়া ম্যাচে রনি তালুকদার ৪ এবং পল স্টারর্লিং ২ রান করেন। স্টারর্লিং ধারাবাহিকভাবেই ব্যর্থ। চার ম্যাচে তার স্কোর যথাক্রমে, ৬, ১৬, ০ ও ২। ভালো করতে পারেননি অ্যারোন জোন্স। ছয় ম্যাচ খেলে তার সর্বোচ্চ রান ৩৮। করেছেন মাত্র ৯২ রান। স্কটিশ ওপেনার জর্জ মুনসে ৭ ম্যাচে ১৩৩ রান করেছেন ১৯ গড়ে। এক ম্যাচে ৫২ বাদে বাকি সবগুলোতেই আড়ালে ছিলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

খালেদের মায়ের প্রতি শোক প্রকাশ করে লড়াইয়ে চিটাগং-রংপুর 

ছুটির দিনে ২০ হাজার দর্শকে পরিপূর্ণ জহুর আহাম্মদ স্টেডিয়াম

অন্যদিকে স্থানীয় ক্রিকেটাররা সিলেটকে আশা দেখাচ্ছেন। জাকির হাসান ৭ ম্যাচে ২৯০ রান করেছেন। রনি তালুকদার ১৯২ এবং জাকের আলী ১৪৭ রান করেছেন। বিদেশীদের পারফরম্যান্সের ঘাটতির কথা জানিয়ে আরিফুল বলেছেন, “আমার মনে হয় এই উইকেটে এই রান (১৮৫) চেজ করার মতো ছিল। আমাদের যে উপরের দিকে ব্যাটসম্যানরা ছিল…আমাদের বিদেশীরা আমাদেরকে টোটালি সাপোর্ট করছেন না। আমাদের দেশি খেলোয়াড়রা যারা আছে ওভারঅল তারাই সাত ম্যাচে পারফর্ম করেছে। টপ অর্ডারে আমাদের বেশিরভাগ বিদেশি ক্রিকেটার। তারা যদি সাপোর্ট না করে ১৮০ কেন আমরা ১৫০ রানও চেজ করতে পারব না।”

বিদেশীদের সমস্যা কোথায় হচ্ছে তা বুঝতে পারছেন না আরিফুলও, “আমার দিক থেকে আমি চেষ্টা করছি। আমি কথা বলছি। টেক্সট করছি। আমি বলছি যে, কি করলে ভালো হয়। আসলে খেলাটা মাঠের। আমাদের যারা বিদেশী আছে তাদের কিন্তু পরিসংখ্যান ভালো। আবার বেশি বলারও কিছু নেই। আসলে কথা বার্তা  হচ্ছে কিন্তু ওইটা (রান) করতে পারছে না।”

একইসাথে পরিবর্তনেরও ডাক দিয়ে রাখলেন আরিফুল, “আমাদের কোচিং স্টাফদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। পরিবর্তন আনতে হবে। পরিবর্তন না আনলে আসলে হচ্ছে না।” 
শেষ চারে যাওয়ার সুযোগ এখনও আছে তাদের। পাঁচ ম্যাচে অন্তত চারটিতে তাদের জিততেই হবে। সেরা চারে জায়গা পেতে হলে টপ অর্ডার থেকে পারফর্ম চান আরিফুল, “আমার মনে হয় আমরা কোনো দিন ব্যাটিং খারাপ করছি। কোনো দিন বোলিং খারাপ করছি। আমার কোনো দিন তিনটা জায়গা-তে একই ভাবে পারফর্ম করতে পারছি না। আপনার টপ অর্ডারে যদি রান না হয়, শেষ দিকে যতই মারেন ১২০–১৫০ রানের বেশি হবে না। টপ অর্ডার থেকে যদি ক্যারি করে তাহলে নিচের দিকে ওইটা ক্যারি করা যায়। কিন্তু হচ্ছে না। আমাদের মিক্সড আাপ হচ্ছে। আমরা তিনটি পজিশনেই খেলতে পারছি না।” 

চট্টগ্রাম/ইয়াসিন/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল র ন কর কর ছ ন আর ফ ল

এছাড়াও পড়ুন:

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়

অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।

তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।

ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।

প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।

তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।

এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।

তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।

চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।

এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।

২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।

এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।

অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।  

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন অধিনায়ক কাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তামিমের
  • টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
  • ব্রাজিলে আলোকাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • ব্রাজিলে আলো কাড়া রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির
  • রিবেইরোয় চোখ আর্সেনাল-নাপোলির 
  • কোচ কাবরেরার পদত্যাগ দাবি, অনিশ্চয়তায় ভবিষ্যৎ