নির্বাচনে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেবে জামায়াত: গোলাম পরওয়ার
Published: 18th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “৫ আগস্টের বিজয়কে অক্ষুণ্ন রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে জামায়াতে ইসলামী ছাড়া বিকল্প কোনো রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না সাধারণ মানুষ। তাই জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করবে।”
শনিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকালে চাঁদপুর সদরের হরিণা ফেরিঘাটে নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
গোলাম পরোয়ার বলেন, “জামায়াতে ইসলামী পূর্বে বিভিন্ন দলের সঙ্গে জোটবদ্ধ ছিল। সবশেষ নেতাকর্মীদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই ২০২২ সালে জোট ভেঙ্গে যায়। তবে ইসলামী দলসহ অন্যান্য সমমনা দলের সঙ্গে জোট করতে জামায়াতে ইসলামীর কোনো আপত্তি নেই।”
আরো পড়ুন:
জামায়াতের লড়াই চালু থাকবে: ডা.
সবকিছুর সংস্কার অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়: গোলাম পারওয়ার
তিনি আরো বলেন, “যাদের সঙ্গে জোট করা হবে, দেশ ও জনগণের স্বার্থে প্রয়োজনে তাদের কিছু কিছু আসন আমরা ছেড়ে দেব। ফ্যাসিবাদী সরকারের নৈরাজ্যবাদ থেকে মুক্তির জন্য জামায়াতে ইসলামী সব সময় সোচ্চার থেকে আন্দোলন সংগ্রাম করে যেতে ঐক্যবদ্ধ।”
গোলাম পরোয়ার ফেনী জেলায় সাংগঠনিক সফর শেষে খুলনায় যাওয়ার পথে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য চাঁদপুর হরিণা ফেরিঘাটে চাঁদপুর জেলা জামায়াতের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন- চাঁদপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া, শহর শাখার আমির অ্যাডভোকেট শাহজাহান খান, সেক্রেটারি শেখ মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন, সদর উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আফসার উদ্দিন মিয়াজী, সেক্রেটারি মাওলানা জুবায়ের হোসেন, সহ-সেক্রেটারি সুলতান মাহমুদ।
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।