ভোটার তালিকা হালনাগাদ শুরু সোমবার, বাড়ি বাড়ি যাবেন কর্মকর্তারা
Published: 19th, January 2025 GMT
সারাদেশে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে সোমবার। এ কার্যক্রমে ৬৫ হাজার মানুষ কাজ করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ঘোষিত যে সময়সীমা সেটিকে মাথায় রেখেই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন।
আগারগাঁও নির্বাচন কমিশন ভবনে রোববার সকালে ইউএনডিপি কর্তৃক ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমের সরঞ্জাম প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় কমিশনের অন্যান্য সদস্য এবং কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে ভোটার তালিকা হালনাগাদের জন্য নির্বাচন কমিশনকে প্রাথমিকভাবে ১৭৫টি ল্যাপটপ, ২০০ ডকুমেন্টস স্ক্যানার ও ৪৩০০ ব্যাগ দিয়েছে ইউএনডিপি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানান, এ কার্যক্রমে ইউএনডিপি আমাদের লজিস্টিক সাপোর্ট দিচ্ছে। পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াতেই হয়তো আমরা তাদের সমর্থন চাইব।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) এই ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম ৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে। নিবন্ধন কেন্দ্রে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে চলবে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত। যাদের জন্ম ২০০৮ সালের ১ জানুয়ারি বা তার আগে, তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হবে। দেশব্যাপী এ কার্যক্রমে অংশ নেবেন নির্বাচন কর্মকর্তা, সুপারভাইজার ও মাঠ কর্মকর্তারা। ইসি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
হালনাগাদ কার্যক্রমে ল্যাপটপ, স্ক্যানার, ব্যাগসহ অন্যান্য উপকরণ বা সরঞ্জাম দিয়ে ইসিকে সহায়তা করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি-ইউএনডিপি। আজ রোববার সকাল ৯টায় সরঞ্জাম প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে অংশ নিতে ৬৬ হাজার লোকবল প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
এ ছাড়া উপজেলা অথবা থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে ভোটার এলাকা পরিবর্তনের আবেদন গ্রহণ, মৃত ভোটারের নাম বাদ ও নতুন ভোটারের তথ্য সফটওয়্যারের সাহায্যে ডেটা এন্ট্রি ও ডেটা আপলোড করা হবে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত।
ইসির সিনিয়র সহকারী সচিব নাসির উদ্দিন চৌধুরী জানান, বিগত ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমে যারা বাদ পড়েছিলেন, তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হবে। ভোটার তালিকা থেকে মৃতদের বাদ দেওয়া হবে। ২০২৬ সালের ২ জানুয়ারি নতুন ভোটারদের তালিকায় যুক্ত করা হবে। এরপর দাবি-আপত্তি নিষ্পত্তি শেষে ওই বছরের ২ মার্চ চূড়ান্ত তালিকা করবে ইসি।
সর্বশেষ হালনাগাদ অনুযায়ী, দেশে ভোটার সংখ্যা ১২ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার ১৬০। তাদের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ২১ লাখ ৪৪ হাজার ৫৮৭ ও নারী ভোটার ৫ কোটি ৯৭ লাখ ৪ হাজার ৬৪১ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ৯৩২ জন।
আগে থেকেই ইসির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করাই বর্তমান কমিশনের প্রধান লক্ষ্য। ভোটার হওয়ার যোগ্য, বিশেষ করে নারী ও তরুণ প্রজন্মের কেউ যেন তালিকা থেকে বাদ না পড়ে, সেদিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। তথ্য গোপন করে একাধিক স্থানে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করাকে অপরাধ হিসেবে ধরা হবে। কমিশন মনে করে, তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে গোপনে ভোটার হওয়া সম্ভব নয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউএনড প
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল