প্রথমবার বিপিএলের ট্রফি রাজশাহীতে
Published: 19th, January 2025 GMT
প্রথমবারের মতো রাজশাহী এসেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) ট্রফি। কখনো চ্যাম্পিয়ন হয়ে রাজশাহীর দল ট্রফিটি আনতে পারেনি। তবে প্রথমবারের মতো প্রদর্শনের জন্য ট্রফি আনা হয়েছে রাজশাহীতে। রবিবার (১৯ জানুয়ারি, ২০২৫) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরের আলুপট্টি মোড়ে বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ট্রফি প্রদর্শনীর জন্য উন্মোচন করা হয়।
ট্রফি উন্মোচন করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক সিটি মেয়র মিজানুর রহমান মিনু। সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত রাখা এই ট্রফি দেখতে ভিড় করেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। চ্যাম্পিয়ন ট্রফিটি খুব কাছ থেকে দেখতে পেয়ে অনেকেই উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। অনেকেই আবার ট্রফির সাথে সেলফি তুলে সাক্ষী হয়ে থাকতে চান। এ সময় ক্রিকেটপ্রেমীরা প্রত্যাশা করেন, বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি যেন এবার রাজশাহীর ঘরেই আসে।
ট্রফি উন্মোচনের পর বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু বলেন, ‘‘পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ক্রিকেট খেলোয়াড় স্যার গারফিল্ড সোবার্স আজ থেকে ১৫-১৬ বছর আগে রাজশাহীর মাঠ ঘুরে দেখে রাজশাহীর মাঠকে বিশ্বমানের হিসেবে ঘোষণা করেছিলেন। এক সময় বাংলাদেশ ওয়ানডে ও টেস্ট টিমের বেস্ট ইলেভেনের সাতজন ছিল রাজশাহীর। আজকে রাজশাহী আবারও জেগে উঠেছে। এ সময় রাজশাহী অঞ্চলে ভাল মানের ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরিসহ আগামীতে রাজশাহীতে বিপিএল আয়োজনের বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।’’
আরো পড়ুন:
‘ঘরের ছেলে বনাম ঘরের দলের’ লড়াইয়ে ফিরল বিপিএল
‘দুই ট্রফি’ নিয়ে রংপুর মাতাতে আসছে রাইডার্স শিবির
ট্রফি প্রদর্শনী আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক বশির আহম্মেদ বলেন, ‘‘ট্রফিটি আলুপট্টি মোড় থেকে রাজশাহী কলেজ, নগর ভবন, রেলগেটসহ পাঁচটি স্থানে প্রদর্শিত হবে। সাধারণ মানুষ খুব কাছ থেকেই দেখতে পারবেন বিপিএলের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এরপর ট্রফিটি যাবে রংপুরে।’’
রাজশাহী/কেয়া/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব প এল প রদর শ ব প এল
এছাড়াও পড়ুন:
বক্সিং রিংয়ে চ্যাম্পিয়ন জিনাতই, বোনকে উৎসাহ দিতে গ্যালারিতে আফঈদা
কদিন ধরে দেশের ক্রীড়াঙ্গনের আড্ডায় ঘুরেফিরে একটাই নাম জিনাত ফেরদৌস। যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এই বক্সার প্রথমবারের মতো পা রেখেছেন জাতীয় বক্সিং রিংয়ে। আর প্রথমবারই নিজের জাত চেনালেন।
আজ বিকেলে পল্টনের মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়ামে ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনালে নেমে প্রতিপক্ষ আফরা খন্দকারকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়নের মুকুট মাথায় তুলেছেন জিনাত। প্রতিযোগিতার আগেই যাঁর আগমন ঘিরে কৌতূহল ছিল তুঙ্গে, সেই জিনাত রিংয়ে নামতেই যেন বুঝিয়ে দিলেন, অন্যদের চেয়ে কেন তিনি এগিয়ে।
তিন রাউন্ডের লড়াইয়ে শুরু থেকেই জিনাত ছিলেন আক্রমণাত্মক। পাঞ্চে ছিল গতি, রক্ষণে ছিল আত্মবিশ্বাস। অন্যদিকে আফরা খন্দকার চেষ্টা করেছেন রক্ষণ সামলে লড়াইয়ে টিকে থাকতে। খান কয়েক মোক্ষম ঘুষিতে কিছুটা নড়বড়ে হলেও শেষ পর্যন্ত দমে যাননি আফরা।
বরং জিনাতের ঘন ঘন আক্রমণের ফাঁক গলে এক-আধটু পাল্টা আঘাত করতেও পেরেছেন। তবে এই পর্যায়ের এক প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ম্যাচটা শেষ পর্যন্ত হয়ে পড়ে তাঁর জন্য অনেকটাই চাপের। তবু আফরা লড়ে গেছেন। আর জিনাতের আত্মবিশ্বাসী উপস্থিতি এ লড়াইকে করে তুলেছিল দেখার মতো।
গ্যালারিতে বসে খেলা দেখছিলেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক ও আফরার বড় বোন আফঈদা খন্দকার। উৎসাহ দিচ্ছিলেন ছোট বোনকে। পাশে ছিলেন মা–বাবাও। তবে পরিবারের ষোলো আনা সমর্থনও জিনাতকে হারানোর জন্য যথেষ্ঠ হয়নি।
ম্যাচ শেষে আফরা বললেন, ‘তিনি একজন ভালো খেলোয়াড়। তাঁর বিপক্ষে খেলা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। বিশেষ করে তাঁর আক্রমণাত্মক স্কিলটা দুর্দান্ত। ম্যাচ শেষে তিনি আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, গুড ফাইট।’
বিজয়ী জিনাত পরে কথা বলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি সবাইকে বলতে চাই, বাংলাদেশের ছেলে-মেয়েরা খেলতে চায়। তারা যদি সুযোগ-সুবিধা পায়, অনেক ভালো করবে। ওদের স্কিল আছে।’
সেমিফাইনালে আছিয়া না ফাইনালে আফরা—কোন লড়াইটা বেশি কঠিন ছিল? জিনাতের জবাব, ‘আমি আমার খেলাটা খেলেছি এবং জিতেছি। দুজনই আলাদা ধাঁচের প্রতিপক্ষ।’
জিনাত বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক পদক জয়ের আকাঙ্ক্ষার কথা আজও বলেছেন। আগামী এশিয়ান গেমসে সুযোগ পেলে পদক জিতবেন কি না, প্রশ্নের ছোট্ট উত্তর, ‘ইনশা আল্লাহ।’
আফরা-জিনাত ফাইনাল ম্যাচটা যেন ছিল দুই প্রতিদ্বন্দ্বী বক্সারের লড়াই নয়, এর বাইরেও চলছিল আরেক নাটক। ফাইনালের কয়েক ঘণ্টা আগেই বক্সিং রিংয়ে এক ব্যতিক্রমী দৃশ্য। আনসারের বক্সার জাহিদুল হক রেফারির রায় নিয়ে ক্ষোভ জানাতে রিংয়ে বসে পড়েন প্রতিবাদ হিসেবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বক্সার জনি ভদ্রর ঘুষিতে কপালে চোট পান জাহিদুল। চিকিৎসাও নেন। একপর্যায়ে রিংয়ের মাঝখানে বসেই অভিনব প্রতিবাদ জানান।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ আনসার দল বাংলাদেশ বক্সিং ফেডারেশনের সভাপতির কাছে অভিযোগ করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিযোগিতা থেকে নিজেদের প্রত্যাহারের হুমকি দেয়। একপর্যায়ে আনসারের প্রতিনিধিরা রিং ছেড়ে চলে যান। মুহূর্তেই ঘনীভূত হয়ে ওঠে অনিশ্চয়তা, আফরা-জিনাত ফাইনালটি আদৌ হবে তো? কারণ, আফরা বাংলাদেশ আনসারের প্রতিযোগী। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আনসার ফিরে আসে এবং প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
এ বিষয়ে বক্সিং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস কুদ্দুস প্রথম আলোকে বলেন, ‘ফাইটে হারলে যা হয়। হারলেই বলে অন্যায় হয়েছে। তবে শেষ পর্যন্ত রিংয়ে ফিরে এসেছে, খেলেছে, এটা ভালো।’
ম্যাচ শুরুর ঠিক আগে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল গ্যালারিতে এসে জিনাতকে শুভেচ্ছা জানায়, তাঁকে উপহারও দেয় তারা। গ্যালারিতে বাড়তি উত্তেজনা আর গুরুত্ব যোগ করে ফাইনাল ম্যাচকে ঘিরে। আর দেশের সংবাদমাধ্যমের ব্যাপক উপস্থিতি তো ছিলই ম্যাচটা ঘিরে।