পুলিশ লাইনসের ব্যারাকে ঝুলছিল নারী কনস্টেবল, কলেজ হোস্টেলে ছাত্রী
Published: 19th, January 2025 GMT
পটুয়াখালীতে নারী পুলিশ কনস্টেবল ও কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে পটুয়াখালী পুলিশ লাইনসের ব্যারাক থেকে কনস্টেবল তৃষ্ণা বিশ্বাস (২১) এবং পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজ ছাত্রীনিবাস থেকে রিয়ামনি আক্তার মিলার (১৮) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। দু’টি ঘটনারই তদন্ত করছে পুলিশ।
কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবু নাহিয়ান নামে এক যুবককে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আহমাদ মাইনুল হাসান জানান, তৃষ্ণার বাড়ি মাদারীপুর জেলার ডাসার থানার পূর্ব কমলাপুর গ্রামে। তিনি ২০২৩ সালের নভেম্বরে পুলিশে যোগদান করেন। তৃষ্ণা ডিপ্রেশনে ভুগছিলেন। তার রুমে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র পাওয়া গেছে। ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকায় চিকিৎসা নেন। ওই চিকিৎসাপত্রে ‘আত্মহত্যার প্রবণতা’ লেখা রয়েছে। চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি হাসপাতালে ভর্তি হননি এবং বিষয়টি কাউকে জানাননি। তিনি যে ওষুধ সেবন করতেন তাও জেলা পুলিশকেও অবহিত করেননি। পরিবারের সদস্যরা আসার পরে আইনি কার্যক্রম শেষে মরদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে কলেজছাত্রী মিলার রুমমেট আয়শা সিদ্দিকা বলেন, ‘মিলা রাতে হোস্টেলে ছিল না। কোথায় ছিল তাও জানি না। সকালে সে রুমে আসে এবং সোয়া ৯টার দিকে আমরা ডাইনিংয়ে যাই। সেখান থেকে ফিরে দেখি ভেতর থেকে দরজা আটকানো। ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় জানালার ফাঁক দিয়ে দেখার চেষ্টা করি। তখন মিলাকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলতে দেখতে পাই। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকি। মিলা কখনও কিছু আমাদের সঙ্গে শেয়ার করেনি।’
মিলার ফুফু মোসা.
কলেজে অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. মোদাচ্ছের বিল্লাহ জানান, মিলা মেধাবী শিক্ষার্থী। কলেজ ছাত্রীনিবাসের দোতলায় ২০০১ রুমে থাকত। সকালে সহপাঠীদের অগোচরে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয় সে। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে পমেক হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবু নাহিয়ান নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদ ও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
পটুয়াখালী সদর থানার ওসি ইমতিয়াজ মাহমুদ মুঠোফোনে জানান, কলেজছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় আবু নাহিয়ান নামে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।