নানা কারণে শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে পারে। মানবদেহের টিস্যু বা কলায় অতিরিক্ত পানি জমে ফুলে যাওয়ার নাম ইডেমা। শরীরের যে কোনো স্থানে পানি জমতে পারে; তবে পা, পেট, হাত ও মুখ এসব স্থানে ইডেমা বা পানি বেশি দেখা যায়। যেসব কারণে ইডেমা হয় তা হলো খাদ্যে অতিরিক্ত লবণ, হার্ট ফেইলিওর, কিডনি রোগ, লিভার সিরোসিস, গর্ভকাল, লিম্ফ বা লসিকা চলাচলে বাধা, দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে বা বসে থাকা, কিছু ওষুধ ক্যালসিয়াম ব্লকার, ব্যথানাশক, স্টেরয়েড ইত্যাদি। কোনো কোনো সময় ইডেমা হার্ট ফেইলিওর, কিডনি রোগ বা লিভার সিরোসিসের মতো জটিল রোগের উপসর্গ বা চিহ্ন হিসেবে দেখা দেয়। হার্ট ফেইলিওর হলে হৃদযন্ত্র সংকোচনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরিমাণ রক্ত বের করতে পারে না। ফলে ফুসফুস, পা, পেটে পানি জমে যায়। কিডনি অসুস্থ হলে প্রস্রাবের মাধ্যমে দেহের অপ্রয়োজনীয় পানি ও লবণ বের করতে পারে না। ফলে চোখের চারদিক বা পায়ে পানি জমে ফুলে যায়। লিভার সিরোসিস হলে প্রোটিন উৎপাদন কমে যায়। ফলে পানি রক্তনালির ভেতরে না থেকে বাইরে চলে যায়। তাই ওই স্থান ইডেমা হয়ে ফুলে যায়।
উপসর্গ: আক্রান্ত স্থান ফুলে যাওয়া, চামড়ার ঔজ্জ্বল্য ও স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়া, আক্রান্ত অঙ্গ ভারী হয়ে চলাচলে সমস্যা দেখা দেওয়া, শ্বাসকষ্টের উদ্রেক হওয়া।
চিকিৎসা: শরীরে অতিরিক্ত পানি জমলে  চিকিৎসকের পরামর্শমতো চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে।
চিকিৎসার পাশাপাশি যা করতে হবে তা হলো পরিমিত পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে; আলগা লবণ ও লবণাক্ত খাবার খাওয়া বন্ধ রাখতে হবে, ধূমপান বর্জন করতে হবে, সাধ্যমতো কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করতে হবে, তেল-চর্বি-মিষ্টি কম খেতে হবে, উচ্চ রক্তচাপ, ইসকেমিক হার্ট ডিজিজ বা ডায়াবেটিস থাকলে ভালোভাবে চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
নিয়মিত চিকিৎসার পাশাপাশি ইডেমা যাতে ভয়ংকর আকার ধারণ না করে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এ জন্য কিছু বিষয় মানতে হবে। যেমন– চিকিৎসকের নির্দেশমতো ওষুধ নিয়মিত গ্রহণ, আলগা লবণ না খাওয়া, যে কোনো সংক্রমণের চিকিৎসা, রক্তশূন্যতা পূরণ, থাইরয়েডের চিকিৎসা, গর্ভকালীন বিশেষ যত্ন, সহনীয় মাত্রায় নিয়মিত ব্যায়াম করা, তেল-চর্বি-মিষ্টি কম খাওয়া, উত্তেজনা প্রশমন করা, ভারী কাজ না করা, ওজন আদর্শ মাত্রায় রাখা এবং সুশৃঙ্খল জীবনযাপন করা।
[বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক]

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গোল ঠেকান, শিরোপা জেতান—তবু দোন্নারুম্মা, এদেরসনদের কদর কম কেন

আপনি গোলরক্ষক। তাহলে আপনার মতো দুর্ভাগা আর কে আছে!

কেন এমন বলা, সেটি বোঝার জন্য এবারের দলবদল মৌসুমে একটু চোখ বোলালেই হবে। এবারের গ্রীষ্মকালীন দলবদল আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে—বিশ্বসেরা গোলরক্ষক হলেও দলবদলের বাজারে খুব একটা কদর মেলে না। মাঠের অন্য পজিশনের খেলোয়াড়দের তুলনায় তাঁদের গুরুত্ব নেই বললেই চলে।

সবচেয়ে বড় উদাহরণ পিএসজির জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা। পাশাপাশি ম্যানচেস্টার সিটির এদেরসন ও এসি মিলানের মাইক মাইনিয়ঁর কথাও বলা যায়। এ তিনজনই নিঃসন্দেহে বিশ্বের সেরা ১০ গোলরক্ষকের মধ্যে পড়েন। অনেকের চোখে আবার সেরা পাঁচেই জায়গা তাঁদের। কিন্তু তাঁরা যদি ফরোয়ার্ড, মিডফিল্ডার বা ডিফেন্ডার হতেন, তাহলে তাঁদের এজেন্টদের ফোন বেজেই চলত। আর তাঁদের ক্লাব চুক্তি নবায়নের জন্য পাগল হয়ে উঠত।

কিন্তু গোলকিপার হওয়ায় তাঁদের বাস্তবতা ভিন্ন। পিএসজি ইতিমধ্যেই লিলের তরুণ গোলরক্ষক লুকাস শেভালিয়েকে নিতে যাচ্ছে (যদিও এখনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়নি)। ম্যানচেস্টার সিটিও বার্নলির জেমস ট্রাফোর্ডকে এনেছে গোলরক্ষকদের জন্য ব্রিটিশ ট্রান্সফার ফি রেকর্ড গড়ে। দোন্নারুম্মার জন্য ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের, এদেরসনের জন্য গালাতাসারাইয়ের, আর মাইনিয়ঁর জন্য চেলসির আগ্রহের কথা শোনা গেলেও কোনো কিছুই এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

পিএসজির হয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতেছেন জিয়ানলুইজি দোন্নারুম্মা

সম্পর্কিত নিবন্ধ