Samakal:
2025-07-31@21:47:30 GMT

চেনা-অচেনার ভিড়ে...

Published: 23rd, January 2025 GMT

চেনা-অচেনার ভিড়ে...

‘এই মুহূর্তে এমন দাবি করব না যে, অভিনয়ে আমি খুব পারদর্শী। কিন্তু এও সত্যি, যে অভিনয়ের জন্য আমি তৃষিত; সেই তৃষ্ণা পরিণত শিল্পী হয়ে ওঠার। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে আমার উপলব্ধি এটাই, অভিনয় হলো জীবনের প্রতিচ্ছবি। ঘটনাবহুল নানা অধ্যায়ের মধ্য দিয়ে যে কাহিনির বিন্যাস, তা সুনিপুণ অভিনয় দিয়েই বাস্তব করে তুলতে হয়। তাই প্রতিনিয়ত কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কখনও অগ্রজ শিল্পী ও নির্মাতাদের কাছে, কখনও আশপাশের মানুষ ও তাদের যাপিত জীবনকে দেখে। যখন ঘর ছেড়ে বাইরে পা রাখি, চেনা-অচেনা মানুষের ভিড়ে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করি। জানতে চাই, জীবন চাকা সচল রাখতে কে কীভাবে দিনমান লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভাবনার জগৎ, পৃথিবীকে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি, আশা-আকাঙ্ক্ষা থেকে শুরু করে যা কিছু জানা ও বুঝে নেওয়ার সুযোগ পাই, তা হাতছাড়া করি না।’

ফারিন খানের মুখে এ কথাগুলো শুনে বোঝা গেল, অভিনয়ের নেশা তাঁকে দারুণভাবে পেয়ে বসেছে। তাই পরিণত শিল্পী হয়ে ওঠার বাসনায় যতভাবে যতকিছু শিখে নেওয়া যায়, তা শেখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। অভিনয়ে খুব একটা পারদর্শী না ফারিন– এ কথা যদি আমরা মেনেও নেই, তবু বলতেই হবে, তিনি এ সময়ের সম্ভাবনাময়ী তারকাদের একজন। কেন এ কথা বলছি, তার অন্যতম উদাহরণ নির্মাতা কাজল আরেফিন অমির ‘ফিমেল-থ্রি’।

এই নাটকের শেষ দৃশ্যে কিছু সময়ের জন্য ফারিন খানকে দেখা গিয়েছিল। যেখানে তার আগমন ব্যাটারি গলির নতুন ভাড়াটে হিসেবে। সহঅভিনেতাদের সঙ্গে ছিল না কোনো সংলাপ। তবু এক্সপ্রেশনের মধ্য দিয়ে দর্শক নজর কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ‘ফিমেল-থ্রি’ মুক্তির পর অনেকে তাকে ‘ব্যাটারি গলির আগুন’ বলাও শুরু করেছিলেন; যা আভাস দেয়, আগামী সময়টা হতে চলেছে ফারিন খানের। 
কোনো নাটকের একটি দৃশ্যে অভিনয় করেই রাতারাতি তারকা বনে যাবেন, সে কথা বিশ্বাস করেন না ফারিন খান নিজেও। তবে কিছু কাজ থাকে যা, ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে ধরা দেয়।

‘ফিমেল-থ্রি’ হলো সেই নাটক, যাকে ক্যারিয়ারে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবেই উল্লেখ করতে চান এই অভিনেত্রী। তার কথায়, ‘আমরা যা কিছুই করি না কেন, তার জন্য চাই একটা ব্রেক থ্রু। ‘ফিমেল-থ্রি’ হলো সেই নাটক, যা আমাকে আলাদাভাবে দর্শকের কাছে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। এও প্রমাণ করেছে, চরিত্রের ব্যাপ্তি ততটা গুরুত্বপূর্ণ নয়; যতটা গুরুত্বপূর্ণ তার উপস্থাপন। সে কারণে অভিনয়ে গল্প, চরিত্র ও নির্মাতাকে প্রাধান্য দিয়ে আসছি।’ ফারিনের এ কথা জানা গেল, কাজের বিষয়ে তার বাছ-বিচারটা কেমন। এখন প্রশ্ন হলো, সিনেমার মাধ্যমে যার অভিনয়ে অভিষেক, সে এখন ছোটপর্দার দিকে ঝুঁকে পড়েছে কেন?

এর উত্তরে ফারিন বলেন, সিনেমায় আর কখনও অভিনয় করব না– এমন কথা জোর দিয়ে বলতে চাই না। ২০১৭ সালে আমি যখন ‘ধ্যাত্তেরিকি’ সিনেমায় অভিনয় করি, তখন বয়স অনেক কম ছিল। অভিনয়ের অনেক কিছুই আত্মস্থ করা হয়ে উঠেনি। ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে অভিনয় করতে গিয়েই এই উপলব্ধি হয়েছে। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, অভিনয় যতটা শেখা যায়, তা শিখেই বড়পর্দার জন্য ক্যামেরার সামনে দাঁড়ব।’ এ ভাবনা থেকেই কি থিয়েটারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া? ‘আসলেই তাই। যদিও এখন প্রাচ্যনাটের হয়ে মঞ্চে কাজ করা হয়ে উঠছে না, তবে নাট্যদলের অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ ধরে রেখেছি। তাদের কাছে কিছু না কিছু শেখার সুযোগ হচ্ছে।’ কিন্তু অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার আগেই দর্শক আপনাকে মডেল হিসেবে চিনেছে, এটা কীভাবে সম্ভব হলো?

এর জবাবে ফারিন বলেন, ‘এটা সম্ভব হয়েছে বন্ধুদের মাধ্যমেই। আমার উচ্চতা ৫ ফিট ৮ ইঞ্চি। এ জন্য বন্ধুরা প্রায়ই বলত, তোর উচিত র্যা ম্প মডেল হিসেবে কাজ করা। শুধু মুখে এ কথা বলেই ক্ষান্ত থাকেনি বন্ধুরা। ওরা জোর করে ফটোশুটও করিয়েছে। দেখিয়ে দিয়েছে মডেলিংয়ের জন্য যোগাযোগের রাস্তা। তাই অল্প-স্বল্প চেষ্টা থেকেই সুযোগ পেয়ে গেছি মডেল হিসেবে কাজ করার। কিন্তু ছয় মাসের মধ্যে রেকর্ডসংখ্যক কাজ করা হয়ে যাবে– তা কল্পনাও করিনি। বলা যায়, মডেলিং শুরুর ছয় মাসেই শীর্ষ ব্র্যান্ডগুলোর বিজ্ঞাপন মডেল হওয়া থেকে শুরু করে শুভেচ্ছা দূত হওয়ার অভিজ্ঞতাও হয়ে গেছে।’ ফারিনের মুখে এ কথা শুনে যে বিষয়ে কৌতূহল জাগে, তা হলো তাঁর অভিনয়ে আসা। মডেল হিসেবে যখন অনেকের নজর কেড়ে ফেলেছেন, তখন পথ বদলে ছোটপর্দায় অভিনয় করতে আসার কারণ?

এ প্রশ্নে ফারিন বলেন, ‘মডেল হিসেবে অনেকের নজরে পড়েছি ঠিকই, কিন্তু অভিনয়ের তৃষ্ণা তো থেকেই গেছে। ঠিক যেমন নাচের দুর্বলতা তেমনি অভিনয়ের প্রতি। দেশ-বিদেশের অনেক মঞ্চে পারফর্ম করেছি। সেই সুবাদে যে আনন্দ ও মানসিক শান্তি পেয়েছি, তা কখনও ভুলে যাওয়ার নয়। যদিও নাচের আগের মতো সময় দিতে পারছি না, তারপরও নাচ থেকে দূরে সরে যাওয়ার আদৌ কোনো ইচ্ছা নেই। একইভাবে অভিনয় ধরে রাখতে চাই। মানছি, আমার অভিনীত কাজের তালিকাটা ছোট। তারপরও ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘ঠিকানা’, ‘পাবো কি তারে’, ‘ফিমেল-৩’, ‘প্রথম প্রেমের গল্প’, ‘কালো ছেলে’ নাটকগুলোর পাশাপাশি ওয়েব সিনেমা ‘ত্রিভুজ’সহ যে ক’টি কাজ করেছি, সেগুলো আমার লালিত স্বপ্ন পূরণের ভিত গড়ে দিয়েছে। তাই খ্যাতির মোহে নয়, শিল্পী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে একটু একটু করে পথ পাড়ি দিচ্ছি।’


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা

আজ শ্রাবণের ১৬ তারিখ। প্রকৃতির নিয়মে এ মাসে বৃষ্টি বেশি ঝরে। আজও ঢাকার আকাশ মেঘলা। বুধবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ঝুম বৃষ্টি কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি। তবে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রয়েছে ভূমিধসের ঝুঁকি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ বাস, রিকশা ও সাধারণ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রবন্দর এলাকায় অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

শনিবারও সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ এলাকায় এবং অন্যান্য বিভাগে অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বর্ধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। 

গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার ৬৮ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা