মাদারীপুরে কামাল মাতুব্বর (৫৫) নামে এক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন ভুক্তভোগীরা। বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুরে ঘটনাটি ঘটে। ওই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।   

মাদারীপুর সদর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “আসামি কামাল মাতুব্বরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। মামলায় হাজিরা দিতে তিনি বৃহস্পতিবার আদালতে যান। পরে লোকজন তাকে ধরে এনে পুলিশে দেয়। তিনি সব মামলায় জামিনে আছেন। আদালতের রি-কল দেখে তাকে পরিবারের জিম্মায় বৃহস্পতিবার রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক পরিস্থিতির কারণে তিনি আমাদের জিম্মায় ছিলেন।”

মারধরের শিকার কামাল মাতুব্বর ডাসার উপজেলার পূর্ব কমলাপুর গ্রামের মৃত কাদের মাতুব্বরের ছেলে। তার বিরুদ্ধে মানবপাচার ও প্রতিরোধ দমন আইনে একাধিক মামলায় রয়েছে।

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে ছাত্রাবাসে ঢুকে সমন্বয়ককে মারধর

বগুড়ায় আলু ঘাটি নিয়ে মারামারি, থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, কামাল মাতুব্বরকে কিছু লোক ঘিরে ধরে মারধর করছেন। পরে তারা তাকে মাদারীপুর সদর থানায় সোপর্দ করেন।

অভিযোগ রয়েছে, মাদারীপুরের শতাধিক যুবককে উন্নত জীবন ও ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখান কামাল মাতুব্বর। তাদের লিবিয়া দিয়ে অবৈধপথে ইউরোপের দেশ ইতালি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। লিবিয়ায় নেওয়ার পর তাদের আটকে রেখে দফায় দফায় নির্যাতন করেন। পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন লাখ লাখ টাকা। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, রাজীব মাতুব্বর, নিজাম, তাইফুল, তাহের, মুজাম হাওলাদর, শাহাবুদ্দিন ও তারেক মাতুব্বরকে ইতালি নেওয়ার স্বপ্ন দেখান কামাল মাতুব্বর। তিনি তাদের পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৩-১৪ লাখ টাকা নেন। এরপরে এই যুবকদের তিনি লিবিয়ায় নিয়ে যান। কথা ছিল, সেখান থেকে তাদের ইতালি নিয়ে যাওয়া হবে। তবে, লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর এই যুবকদের মাফিয়াদের হাতে তাদের তুলে দেন মানবপাচারকারী কামাল মাতুব্বর। লিবিয়ার মাফিয়ারা বন্দিশালায় আটকে রেখে যুবকদের ওপর চালানো হয় নির্যাতন। মুক্তিপণের টাকা আদায় করতে পরিবারকে নির্যাতনের ভিডিও দেখিয়ে ২০-৪০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় মাফিয়া ও মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা।

ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, বৃহস্পতিবার কামাল মাতুব্বর মাদারীপুর আদালতে হাজিরা দিতে আসবেন। কামাল মাতুব্বর হাজিরা দিতে গেলে ভুক্তভোগীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাকে ঘিরে ধরেন। একপর্যায়ে তাকে গণপিটুনি দিয়ে আটক করে মাদারীপুর সদর থানায় সোপর্দ করেন।

ভুক্তভোগী রাজীব মাতুব্বর বলেন, “কামাল মাতুব্বর লিবিয়া পাঠিয়ে আমাকে একটা অন্ধকার ঘরে এক মাস আটকে রেখে নির্যাতন করে। আমার পরিবার থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। মুক্তিপণের টাকা দিয়ে কোনোমতে বেঁচে ফিরে এসেছি। আমি মানবপাচারকারী কামাল মাতুব্বরের শাস্তি চাই।”

ঢাকা/বেলাল/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম রধর ম নবপ চ র পর ব র

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ