খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা
Published: 25th, January 2025 GMT
খুলনা নগরীর তেঁতুলতলা মোড়ে গতকাল শুক্রবার রাতে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে ও গুলি করে এক তরুণকে হত্যা করেছে। নিহত অর্ণব কুমার সরকার খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের মাস্টার্সের ছাত্র। এদিকে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজশাহী কলেজের এক ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনার জেরে গতকাল রাতে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা।
খুলনার সোনাডাঙ্গা থানার পুলিশ জানায়, নিহত অর্ণব নগরীর সোনাডাঙ্গা থানার আবু আহম্মেদ সড়কের বাসিন্দা ঠিকাদার নীতীশ চন্দ্র সরকারের ছেলে। তিনি গতকাল রাত ৯টার দিকে তেঁতুলতলা মোড়ে মোটরসাইকেলের ওপর বসে চা পান করছিলেন। এ সময় ৪-৫ জন সন্ত্রাসী এসে তাঁকে কুপিয়ে ও গুলি করে পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে ৫ রাউন্ড গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। তবে হত্যার কারণ জানা যায়নি। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে, রাজশাহী কলেজের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ছাত্র নিহত শিমুল শিহাব নগরীর মেহেরচণ্ডীর জামাল হোসেনের ছেলে।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান জানান, ক্যাম্পাস থেকে রাত ১১টার দিকে একটি ছেলেকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। প্রথমে সড়ক দুর্ঘটনার কথা বলে লুকাচ্ছিল। পরে জেরার মুখে মারামারি করে মৃত্যু হয়েছে বলে জানায়। তাঁকে ‘ফিজিক্যাল অ্যাসল্ট ব্রট ডেথ’ হিসেবে পেয়েছেন। শরীরের বাইরের অংশে ক্ষত পাওয়া যায়নি। নিয়ম অনুযায়ী, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী দাবি করা এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা কয়েকজন ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম। তখন আমরা দেখি, আমাদের সামনে দিয়ে একজন খুব জোরে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর পেছনে একটা মেয়ে ছিলেন। কিছুদূর যাওয়ার পর ছেলেটি মোটরসাইকেলসহ রাস্তায় পড়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে তিনি জ্ঞান হারান। তাঁর শরীরে তেমন আঘাত লাগেনি। আশপাশের শিক্ষার্থীরা তখন তাঁর মাথায় পানি দেন। পরে প্রক্টর এসে মেয়েটিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তখন মেয়েটি বলেন, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে করে ছেলেটিকে নিয়ে যাওয়া হয়।’
এ ঘটনায় মেয়েটির দুই ধরনের বক্তব্য পাওয়া গেছে। ছেলেটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে চালাচ্ছিলেন বলে মেয়েটি জানান। সামনে প্রতিরোধক থাকলেও তিনি তা দেখতে পাননি। এ ছাড়া মাথায় রডের আঘাত লেগে থাকতে পারে।
প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুর রহমান বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে আমি ঘটনা জানতে পারি। আমাদের সহকারী প্রক্টর টহল দিচ্ছিলেন। তখন ক্যাম্পাসের ভেতরে শিমুল তাঁর মেয়ে বন্ধুকে নিয়ে সায়েন্স ভবনের দিকে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। প্রক্টরের গাড়ি দেখে তারা মোটরসাইকেলে করে দ্রুত চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। ওদিক দিয়ে রাস্তার কাজ চলছিল। সেখানে দুর্ঘটনা ঘটে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক সাজিদ হাফিজ বলেন, ‘ছেলেটিকে যখন হাসপাতালে আনা হয়, তখন তাঁর শরীরে কোনো আঘাতের দাগ ছিল না। তবে গায়ে ধুলাবালি লেগে ছিল। তখন তাঁর শরীরে পালস ছিল না। পরে আমরা তাঁকে রামেকে পাঠাই।’
এ বিষয়ে নগরের মতিহার থানার ওসি আব্দুল মালেক জানান, লাশে কোনো মারধর, ছেঁড়া-ফাটা কিংবা ক্ষত পাওয়া যায়নি। তাই সুনির্দিষ্টভাবে এখনও কিছু বলা যাচ্ছে না। ময়নাতদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে। নিহতের পরিবার কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। তারা মৌখিকভাবে দাবি করেছেন, তাঁকে মারধর করে মারা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর তারা মামলা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এ মৃত্যুর ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটের সামনে আগুন জ্বালিয়ে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভকারীরা ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত, প্রক্টরের পদত্যাগ এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বহিষ্কার ও বিচারের দাবি জানান।
এ সময় তারা ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, ‘তুমি কে আমি কে, বহিরাগত বহিরাগত’, ‘শিমুল ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে’, ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
শুভ নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘কেউ যদি অপরাধ করে থাকে, তবে তার জন্য প্রশাসন আছে। তাই বলে তাকে মেরে ফেলবে? আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না।’
মাহিম নামের আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘এটা একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হলে কি আমরা ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারব না? সে জন্য আমাদের মেরে ফেলবে?’
রাত পৌনে ৯টায় কর্মসূচির সমাপ্তি ঘোষণা করেন তারা। এ সময় আজ বেলা ১১টায় আবারও মহাসড়ক অবরোধের ঘোষণা দেন।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: তদন ত নগর র ঘটন য় গতক ল ঘটন র এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
ঝগড়া থেকে দেয়ালে মাথা ঠোকা, সালমান-ঐশ্বরিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে প্রকাশ্যে আনলেন প্রতিবেশী
বলিউডের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত প্রেম-বিচ্ছেদের একটি হলো ঐশ্বরিয়া রাই ও সালমান খানের সম্পর্ক। প্রেমের সূচনা হয়েছিল পর্দার আড়ালেই, কিন্তু আলোচনায় আসে ‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবির মাধ্যমে। ছবির রোমান্স যেন বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিল। অথচ সেই রূপকথার প্রেমই কিছুদিনের মধ্যে রূপ নেয় দুঃস্বপ্নে। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার পর শুধু ব্যক্তিজীবন নয়, কর্মজীবনেও কঠিন আঘাত সহ্য করতে হয়েছিল ঐশ্বরিয়াকে।
প্রতিবেশীর চোখে সেই সময়
বিজ্ঞাপন জগতের কিংবদন্তি প্রহ্লাদ কাক্কর ছিলেন ঐশ্বরিয়ার ঘনিষ্ঠজন। ঐশ্বরিয়ার মায়ের একই ভবনে থাকতেন তিনি। সম্পর্কের শুরুর দিক থেকে ক্যারিয়ারের উত্থান—সবকিছু কাছ থেকে দেখেছেন তিনি। তাঁর মতে, সালমান ছিলেন ভীষণ আক্রমণাত্মক। ঐশ্বরিয়ার ওপর প্রভাব বিস্তার করতে চাইতেন। প্রহ্লাদ এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘সালমান খুবই আক্রমণাত্মক ছিলেন। আমি একই ভবনে থাকতাম, সবকিছু শুনতাম-দেখতাম। ঝগড়া, চিৎকার, এমনকি দেয়ালে মাথা ঠোকা…এগুলো নিয়মিত ছিল। সম্পর্ক আসলে অনেক আগেই ভেঙে গিয়েছিল, শুধু ঘোষণাটা পরে এসেছে। বিচ্ছেদটা সবার মধ্যে স্বস্তি এনেছিল—ঐশ্বরিয়ার, তাঁর বাবা-মায়ের, এমনকি সালমানেরও।’