গণঅভ্যুত্থান ১০ বছর পর প্রতিষ্ঠিত থাকবে না: পিআইবি মহাপরিচালক
Published: 26th, January 2025 GMT
প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ বলেছেন, “৭২ থেকে ৭৫ এর ইতিহাস ও পত্রিকার খবর মুছে ফেলা হয়েছে। মিডিয়া ছাড়া ফ্যাসিবাদ এতদিন টিকে থাকতে পারত না। যখন মিডিয়া ব্যর্থ হয়, তখন রাষ্ট্র টিকে থাকে না। নতুন প্রজন্ম তাদের কথাগুলো বলতে পারছে না। কারণ তাদের কোন মিডিয়া নেই। এ গণঅভ্যুত্থান হয়তো ১০ বছর পর প্রতিষ্ঠিত থাকবে না। কারণ ষড়যন্ত্রকারীরা একে নস্যাৎ করে দিতে পারে।”
রবিবার (২৬ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে পিআইবি আয়োজিত ‘সংবাদ না বয়ান: গণমাধ্যমের ঝোঁক ও ঝুঁকি’ শীর্ষক সেমিনারে মূল আলোচক হিসেবে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, “একসময় গণমাধ্যম শুধু খবর প্রচার করতো। কিন্তু ফ্যাসিবাদী সময়ে গণমাধ্যম বিভিন্ন বয়ান প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। উন্নয়নের জোয়ার ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে বিভিন্ন বয়ান প্রচার করা হত। বয়ানের মাধ্যমে গণমাধ্যম প্রমাণ করতো কে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের, কে বিপক্ষের লোক। এতে জড়িয়ে পড়েছিল সাংবাদিক, শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবীরাও।”
তিনি আরও বলেন, “রাজনীতিতে ইসলাম ও মুসলমানের নাম থাকা মানেই তারা সন্দেহভাজন জনগোষ্ঠী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের নামে প্রহসনের সময় কিংবা তারও আগে বুদ্ধিজীবীরা লিখেছিল, প্রয়োজনে কয়েক লক্ষ মানুষ মারতে হবে। তবুও বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের পথে রাখতে হবে।”
চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আর রাজীর সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.
এছাড়া আলোচক হিসেবে ছিলেন চবির যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোরশেদুল ইসলাম এবং কবি, বুদ্ধিজীবী ও ক্রিটিক রিফাত হাসান।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি