রাজশাহীর স্বত্বাধিকারীর কাণ্ডে বিপিএলের সম্মানহানি
Published: 27th, January 2025 GMT
কখনো তারকাখচিত ক্রিকেটারদের অংশগ্রহণ, কখনো উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচ- বিপিএল ছিল বাংলাদেশের গর্বের জায়গা। বাংলাদেশের এ টি২০ লিগে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বৈশ্বিক তারকা ক্রিকেটারও খেলেছেন। দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের সম্মানী নিয়ে টুকটাক অভিযোগ থাকলেও বিসিবি সহজেই সমাধান করতে পেরেছে। এবারের বিপিএলে কোনো নিয়মই কাজ করছে না।
সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে দুর্বার রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানা প্রতিষ্ঠান ভ্যালেন্টাইন গ্রুপের এমডি শফিকুর রহমানের কর্মকাণ্ড থেকে। ক্রিকেটারদের ঠিকমত সম্মানী পরিশোধ না করছেন না তিনি। খেলোয়াড়দের জার্সিও দেওয়া হয়নি ঠিকভাবে। কিট ব্যাগ পাননি ইয়াসির আলী রাব্বিরা। বাংলাদেশের ক্রিকেটকে যা বিশ্বের কাছে নত করেছে বলে মনে করেন ক্রিকেটাররা।
পারিশ্রমিক না পাওয়ায় রাজশাহীর দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে চরম অসন্তোষ তৈরি হয়। গুঞ্জন ছিল, গতকাল খেলোয়াড়রা রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে মাঠে নামবেন না। শেষ পর্যন্ত দেশি ক্রিকেটাররা চেক বুঝে পেয়ে মাঠে নামলেও বিদেশি ক্রিকেটাররা হোটেলের দরজা বন্ধ রাখেন। ফলে ১১ জন দেশি ক্রিকেটার নিয়েই মাঠে নামে রাজশাহী। তবে এমন অবস্থাতেও তারা শীর্ষে থাকা রংপুর রাইডার্সকে ২ রানে হারিয়ে চমক দেখিয়েছে।
খেলা হলেও, এই ঘটনায় বিসিবি চরম বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছে। বিসিবির মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইফতেখার রহমান মিঠু হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এটি অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত। দল নিয়ে যা ঘটছে তা মেনে নেওয়া কঠিন। বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করছি এবং দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করব। তবে বিপিএলের মর্যাদা রক্ষা করতে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’
মিঠু আরও বলেন, ‘বিপিএল বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের একটি সম্পদ। এর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হতে দেওয়া যাবে না। চুক্তি অনুযায়ী সব পক্ষকে নিয়ম মেনে চলতে হবে। কিন্তু রাজশাহী ফ্র্যাঞ্চাইজি সেই বিশ্বাস রাখতে পারেনি। এখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।’
টুর্নামেন্টের বৃহত্তর স্বার্থে অনেক ছাড় দেওয়া হলেও ভ্যালেন্টাইন গ্রুপের এমন আচরণ মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। মিঠু বলেন, ‘আমরা সবকিছু ছাড় দিয়ে টুর্নামেন্টটি সচল রেখেছি। কিন্তু প্রতিদিন নতুন নতুন সমস্যা তৈরি হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি আমরা আর সহ্য করব না। সময় এসেছে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার।’
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ওভালে ১৬ উইকেটের দিন
টেস্ট ক্রিকেট ভিন্ন রকম একটি দিনের দেখা পেল। ব্যাট-বলের সমানে-সমান লড়াই হলো। ওভালে ভারত ও ইংল্যান্ডের মধ্যকার শেষ টেস্টের দ্বিতীয় দিনে চরম রোমাঞ্চও ছড়াল। কিন্তু দিন শেষে কে এগিয়ে সেটা নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই।
দলগতভাবে কে এগিয়ে সেটা পরিস্কার না হলেও নিশ্চিতভাবে বোলাররা আপারফ্রন্টে। কেননা ২২ গজে তাদের পকেটে গেছে ১৬ উইকেট। আগের দিনের ৬ উইকেটে ২০৪ রানের সঙ্গে মাত্র ২০ রান যোগ করতে শেষ ৪ উইকেট হারায় ভারত।
জবাব দিতে নেমে ইংল্যান্ডের ১২ ওভারেই রান বিনা উইকেটে ৯২। অথচ তারাই কি না পরের ১৫৫ রান তুলতে হারায় ১০ উইকেট। ২৪৭ রানে অলআউট হয়ে লিড পায় ২৩ রানের। পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে ভারত ২ উইকেটে ৭৫ রান তুলে দিন শেষ করেছে। তাদের লিড ৫২ রানের।
ভারতের প্রথম ইনিংসের রান কতদূর যাবে তা নির্ভর করছিল করুন নায়ারের ওপর। আগের দিন ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। গতকাল দিনের তৃতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন ৫৭ রান করে। ভালো করতে পারেনি ওয়াসিংটন সুন্দর। ২৬ রানে থেমে যায় তার ইনিংস। বাকিরা তেমন কিছু করতে পারেনি। ভারতের স্কোরবোর্ড সমৃদ্ধ করেছে অতিরিক্ত রান। ইংল্যান্ডের বোলাররা ৩৮ রান দিয়েছেন অতিরিক্ত। যেখানে ওয়াইড বলই ছিল ১৬টি। নো বল ৪টি।
পেসার গুস আটিকসন ৩৩ রানে পেয়েছেন ৫ উইকেট। আরেক পেসার টং পেয়েছেন ৩ উইকেট।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ছিল উড়ন্ত। দুুই ওপেনার জ্যাক ক্রয়লে ও বেন ডাকেট সামনে যাকে পেয়েছেন তাকেই পিটিয়েছেন। বাউন্ডারির ফোয়ারা ছুটিয়েছেন ২২ গজে। বেন ডাকেট ৪৩ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। আরেক ওপেনার ক্রয়লে অবশ্য ফিফটি তুলে নেন। ৫৭ বলে ১৪ চারে ৬৪ রান করে আউট হন।
ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারে ভাঙন ধরান পেসার মোহাম্মদ সিরাজ। ওলি পোপে (২২), জো রুট (২৯) ও হ্যারি ব্রুককে (৫৩) আউট করেন এ পেসার। তাকে সঙ্গ দেওয়া প্রসিদ্ধ কৃষ্ঞা নেন ৪ উইকেট। দুই পেসারের ভয়ংকর আক্রমণে ইংল্যান্ড ভালো অবস্থানে থেকেও বড় কিছু করতে পারেনি।
দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করে ভারত রাহুল (৭) ও সুদর্শনের (১১) উইকেট হারায়। ফিফটি তোলা জয়সওয়াল ৫১ ও আকাশ দীপ ৪ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন।
পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ইংল্যান্ড ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে। একটি টেস্ট ড্র হয়েছে। এই ম্যাচ ভারত জিতলে সিরিজ বাঁচাতে পারবে। ইংল্যান্ড জিতলে নিশ্চিত করবে সিরিজ। তৃতীয় দিন শেষে বোঝা যেতে পারে কারা শেষ হাসি হাসবে।
ঢাকা/ইয়াসিন