হকার সাগর হত্যায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী এনামুর রিমান্ডে
Published: 27th, January 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হকার মো. সাগরকে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জশিতা ইসলাম শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
এনামুর রহমানের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো.
ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রানা প্লাজার দুর্ঘটনায় আহতের চিকিৎসা দিয়ে আলোচনায় আসেন ডা. এনামুর রহমান। পরবর্তী সময়ে তার মাথায় ফ্যাসিস্টের ভূত চেপে বসে। তাকে পুরস্কার হিসেবে এমপি, পরে প্রতিমন্ত্রী বানানো হয়। শেখ হাসিনাকে ফ্যাসিস্ট বানাতে সহযোগিতা করেছেন এনামুর রহমান। আমরা চাই, যারা ফ্যাসিজমের পক্ষে কাজ করেছেন, তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার হোক।”
আসামিপক্ষের আইনজীবী প্রাণনাথ ডা. এনামুর রহমানের রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, “গত সংসদ নির্বাচনে তিনি এমপি ছিলেন না। এ হত্যা মামলার সঙ্গে তিনি জড়িত না। তিনি থাকেন সাভারে, অথচ ঘটনাস্থল মিরপুর। উনি অনেক অসুস্থ ও বয়স্ক। এ বিবেচনায় তার রিমান্ড বাতিল করা হোক। প্রয়োজনে তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।”
উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
গতকাল রোববার রাতে রাজধানীর ভাটারা থেকে ডা. এনামুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর গোলচত্ত্বরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন হকার মো. সাগর। ওই দিন বিকেল ৪টায় তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা বিউটি আক্তার বাদী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। এ মামলায় শেখ হাসিনাসহ ২৪২ জন আসামি করা হয়েছে। মামলার ৩০ নম্বর এজাহারনামীয় আসামি ডা. এনামুর রহমান।
ঢাকা/মামুন/রফিক
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনায় বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া প্রশ্নে রুল
চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) পরিচালনায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির চলমান প্রক্রিয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি হাবিবুল গনি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার এ রুল দেন। একই সঙ্গে যেকোনো অপারেটরকে এনসিটি পরিচালনার দায়িত্ব (নিযুক্ত) দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতি অনুসারে ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক পাবলিক বিডিং (দরপত্র আহ্বান) নিশ্চিত করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আরও পড়ুননতুন ব্যবস্থাপনায় নিউমুরিং টার্মিনাল পরিচালনা শুরু০৭ জুলাই ২০২৫নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে ছেড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে বাংলাদেশ যুব অর্থনীতিবিদ ফোরামের পক্ষে সংগঠনটির সভাপতি মির্জা ওয়ালিদ হোসাইন রিটটি করেন। রিটে নৌসচিব, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিবাদী করা হয়।
‘নিউমুরিং টার্মিনালে সবই আছে, তবু কেন বিদেশির হাতে যাচ্ছে’ শিরোনামে গত ২৬ এপ্রিল প্রথম আলোয় একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। এ প্রতিবেদনসহ এ বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এনসিটি পরিচালনায় ন্যায্য ও প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র আহ্বান করার নির্দেশনা চেয়ে রিটটি করা হয়।
আগের ধারাবাহিকতায় ৯ জুলাই রিটের ওপর শুনানি শেষ হয়। সেদিন আদালত ২৩ জুলাই আদেশের জন্য দিন রাখেন। ধার্য তারিখে আদালত আদেশের জন্য ৩০ জুলাই দিন রাখেন। এ অনুসারে আজ বিষয়টি আদেশের জন্য আদালতের কার্যতালিকার ৭ নম্বর ক্রমিকে ওঠে।
আজ মধ্যাহ্নবিরতির পর আদালত আদেশ দেন। আদালত বলেন, শুধু রুল দেওয়া হলো।
আদেশের সময় রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও আহসানুল করিম এবং আইনজীবী কায়সার কামাল ও আনোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মহাদ্দেস-উল-ইসলাম।
পরে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার নতুন দায়িত্ব নিয়েছে নৌবাহিনীর প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড। টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাইফ পাওয়ারটেকের চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর ৬ জুলাই দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে এ দায়িত্ব নেয় জাহাজ মেরামতের এ প্রতিষ্ঠান। প্রথমবারের মতো বন্দরে টার্মিনাল পরিচালনায় যুক্ত হলো চিটাগং ড্রাইডক।
চট্টগ্রাম বন্দরের বৃহৎ এই টার্মিনাল নির্মিত হয় ২০০৭ সালে। টার্মিনালটি নির্মাণ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ধাপে ধাপে মোট ২ হাজার ৭১২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানি কনটেইনারের সিংহভাগ এই টার্মিনাল দিয়ে পরিবহন হয়।