অর্থ পাচারে এনু-রুপনের সাত বছর দণ্ড
Published: 30th, January 2025 GMT
অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা পুরান ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়াকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় আরো সাতজনকে চার বছর করে কারাভোগের দণ্ড দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মাসুদ পারভেজ এই রায় শোনান।
দণ্ডের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকার দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা তাদের অর্থদণ্ড করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মিয়া জাহিদুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে এসব তথ্য দিয়েছেন।
জাহিদুল ইসলামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দণ্ডিত অন্যরা হলেন: শহিদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, মিরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, তুহিন মুন্সি, নবীর হোসেন সিকদার, সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল সরকার। তাদেরও ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে, যা সমহারে দিতে বলা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সাজা ভোগ করতে হবে তাদের।
এই মামলার ঘটনায় জব্দ করা ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, কারাগারে আটক এনু, রুপন, শহিদুল, নবীর হোসেনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল আদালতে হাজির হন। তাদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানাসহ তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে পলাতক থাকায় অপর দুই আসামি মেরাজুল ও তুহিন বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দায়ের করা মামলায় এর আগেও সাজা হয়েছে এনু-রুপনের।
২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর র্যাব-৩ এর পরিদর্শক (শহর ও যান) আবুল বাশার সূত্রাপুর থানায় মামলাটি করেছিলেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে র্যাব-৩ ক্যাসিনো-বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মতিঝিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো খেলা পরিচালানাকারীদের অন্যতম সক্রিয় সদস্য রুপন ভূঁইয়ার বাসায় ক্যাসিনো থেকে উপার্জিত প্রচুর অবৈধ অর্থ ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের জন্য সূত্রাপুর থানাধীন বানিয়ার মুরগীটোলা রুপন ভূঁইয়ার বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা এবং বাসার সিন্ধুকের ভেতর থেকে ৫ কেজি ১৬৩ স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে, যার মূল্য মূল্য আড়াই কোটি টাকা।
এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের ৫/৬ বছর আগে থেকে এনামুল হক এনু এবং তার ভাই রুপন ভূঁইয়া অন্যান্য আসামির সহায়তায় মতিঝিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ওয়ান-টেন জুয়া খেলা শুরু করে। রুপন ভূঁইয়া অপর আসামিদের সহায়তায় অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে উপার্জিত সংঘবদ্ধ অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন বা ছদ্মাবৃত্ত করার অপরাধ করেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪(২) ধারার মধ্যে পড়ে।
২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।
ঢাকা/মামুন/রাসেল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম ল হক ভ
এছাড়াও পড়ুন:
মুক্তিপণ দিয়েও পাঁচ মাস ধরে ১৪ তরুণের খোঁজ পাচ্ছেন না স্বজনেরা
অবৈধ পথে ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেছিলেন মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার ১৪ তরুণ। কিন্তু দুবাই হয়ে লিবিয়ায় পৌঁছানোর পর পাঁচ মাস ধরে তাঁদের আর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। স্বজনদের দাবি, দালালের প্রলোভনে পড়ে জনপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকা মুক্তিপণও দিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু সন্ধান না পাওয়ায় চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন তাঁরা।
ইউরোপের কোনো দেশে গেলে সচ্ছলতা আসবে, এমন ধারণা নিয়ে প্রতিবছর মাদারীপুর থেকে শত শত তরুণ সেখানে পাড়ি জমানোর চেষ্টা করছেন। তবে অবৈধ পথে ইউরোপ যেতে গিয়ে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। কেউবা দালালের খপ্পরে পড়ে নির্যাতনের শিকার হয়ে কাটাচ্ছেন বন্দিজীবন। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের তথ্য বলছে, ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত জেলার ৪৫ জন লিবিয়া হয়ে ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন। ২০১৯ থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিবিয়া থেকে বাংলাদেশে ফিরে আসতে পেরেছেন অন্তত ৩৫০ তরুণ। নিখোঁজ আছেন তিন শতাধিক।
সবশেষ নিখোঁজ তরুণদের সবার বাড়ি রাজৈরের বাজিতপুর ইউনিয়নে। তাঁরা হলেন পাখুল্লা গ্রামের জাহাঙ্গীর ব্যাপারীর ছেলে সালমান ব্যাপারী, চৌরাশী গ্রামের মোসলেম শিকদারের ছেলে বাবুল শিকদার, একই গ্রামের মজিবর বয়াতীর ছেলে সাজ্জাদ বয়াতী, জাকির মাতুব্বরের ছেলে বাদল মাতুব্বর, কানাই রায়ের ছেলে লিটন রায়, নিরঞ্জন বাড়ৈর ছেলে বাঁধন বাড়ৈ, কিসমদ্দি বাজিতপুর গ্রামের আলম চৌকিদারের ছেলে ইমন চৌকিদার, অহিদুল মাতুব্বরের ছেলে নয়ন মাতুব্বর, আজিজ খালাসির ছেলে খলিল খালাসি, সোনা মিয়া চৌকিদারের ছেলে সোহেল চৌকিদার, নয়াকান্দি বাজিতপুর গ্রামের গৌরাঙ্গ বাড়ৈর ছেলে গৌতম বাড়ৈ, একই গ্রামের সামচু সরদারের ছেলে ইমরান সরদার, শ্রীনাথদী বাজিতপুরের জলিল বয়াতীর ছেলে আল আমিন বয়াতি ও শ্রীনদী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান ঘরামির ছেলে আলী ঘরামি। তাঁদের সবার বয়স ১৮ থেকে ২৮ বছরের মধ্যে।
স্বজনদের অভিযোগ, মানব পাচার চক্রের সক্রিয় সদস্য বাজিতপুর এলাকার বাবুল হাওলাদার ইতালি নেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রত্যেক পরিবারের কাছ থেকে প্রথমে ১৬ লাখ টাকা করে নেন। পরে লিবিয়ায় বন্দী করে আদায় করেন আরও ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এর পর থেকে ঘরে তালা ঝুলিয়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত বাবুল ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মাদারীপুরের ১৪ তরুণ ইতালি যেতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে দালালের হাত ধরে ঘর ছাড়েন। নিখোঁজ তরুণদের সন্ধানে তাদের ছবি হাতে স্বজনেরা