অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনে করা মামলায় আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা পুরান ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ওরফে এনু ও তার ভাই রুপন ভূঁইয়াকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় আরো সাতজনকে চার বছর করে কারাভোগের দণ্ড দেওয়া হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক মাসুদ পারভেজ এই রায় শোনান। 

দণ্ডের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকার দ্বিগুণ অর্থাৎ ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা তাদের অর্থদণ্ড  করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মিয়া জাহিদুল ইসলাম রাইজিংবিডি ডটকমকে এসব তথ্য দিয়েছেন।

জাহিদুল ইসলামের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দণ্ডিত অন্যরা হলেন: শহিদুল হক ভূঁইয়া, রশিদুল হক ভূঁইয়া, মিরাজুল হক ভূঁইয়া শিপলু, তুহিন মুন্সি, নবীর হোসেন সিকদার, সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল সরকার। তাদেরও ৩৪ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকা অর্থদণ্ড  করা হয়েছে, যা সমহারে  দিতে বলা হয়েছে। অনাদায়ে আরো ৩ মাসের সাজা ভোগ করতে হবে তাদের।

এই মামলার ঘটনায় জব্দ করা ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে বলা হয়েছে। 

জাহিদুল ইসলাম বলেন, কারাগারে আটক এনু, রুপন, শহিদুল, নবীর হোসেনকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। জামিনে থাকা সাইফুল ইসলাম ও জয় গোপাল আদালতে হাজির হন। তাদের উপস্থিতিতে আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ের পর সাজা পরোয়ানাসহ তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। তবে পলাতক থাকায় অপর দুই আসামি মেরাজুল ও তুহিন বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দায়ের করা মামলায় এর আগেও সাজা হয়েছে এনু-রুপনের।

২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর র‌্যাব-৩ এর পরিদর্শক (শহর ও যান) আবুল বাশার সূত্রাপুর থানায় মামলাটি করেছিলেন।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে র‍্যাব-৩ ক্যাসিনো-বিরোধী অভিযান পরিচালনার সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মতিঝিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে অবৈধ ক্যাসিনো খেলা পরিচালানাকারীদের অন্যতম সক্রিয় সদস্য রুপন ভূঁইয়ার বাসায় ক্যাসিনো থেকে উপার্জিত প্রচুর অবৈধ অর্থ ও স্বর্ণালংকার উদ্ধারের জন্য সূত্রাপুর থানাধীন বানিয়ার মুরগীটোলা রুপন ভূঁইয়ার বাড়ি ঘেরাও করে অভিযান চালায়। সেখান থেকে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৩০০ টাকা এবং বাসার সিন্ধুকের ভেতর থেকে ৫ কেজি ১৬৩ স্বর্ণালংকার উদ্ধার করে, যার মূল্য মূল্য আড়াই কোটি  টাকা।

এজাহারে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের ৫/৬ বছর আগে থেকে এনামুল হক এনু এবং তার ভাই রুপন ভূঁইয়া অন্যান্য আসামির সহায়তায় মতিঝিল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ওয়ান-টেন জুয়া খেলা শুরু করে। রুপন ভূঁইয়া অপর আসামিদের সহায়তায় অবৈধ ক্যাসিনো ব্যবসা থেকে উপার্জিত সংঘবদ্ধ অপরাধলব্ধ আয়ের অবৈধ প্রকৃতি, উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন বা ছদ্মাবৃত্ত করার অপরাধ করেন, যা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন- ২০১২ এর ৪(২) ধারার মধ্যে পড়ে। 

২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

ঢাকা/মামুন/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম ল হক ভ

এছাড়াও পড়ুন:

মে মাসে বিজিবির অভিযানে ১৩৩ কোটি টাকার চোরাচালান জব্দ

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত মে মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৩ কোটি ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।

সোমবার (১৬ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বিজিবি।

বিজিবি জানায়, জব্দ করা চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১ কেজি ৫১২ গ্রাম স্বর্ণ, ১০ হাজার ৫৪৪টি শাড়ি, ৫ হাজার ১৪০টি কাপড়, ৩ হাজার ৪৭২টি তৈরি পোশাক, ১৯ হাজার ৩১৪ মিটার থান কাপড়, ২ লাখ ৫২ হাজার ২৯টি কসমেটিকস সামগ্রী, ৫ হাজার ৪৪৩টি ইমিটেশন সামগ্রী, ২৪ লাখ ৭১ হাজার ৫৫১টি আতশবাজি, ১৭ হাজার ৫২৩ ঘনফুট কাঠ, ৩ হাজার ১৫১ কেজি চা পাতা, ৯২ হাজার ৪৮৭ কেজি সুপারি, ৫৩ হাজার ৪০ কেজি চিনি, ২০ হাজার ৪৪২ কেজি সার, ২৯ হাজার ৯৮৫ কেজি কয়লা, ১০০ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ৩৪১টি মোবাইল, ১৭ হাজার ৬৫টি মোবাইল ডিসপ্লে, ৬ হাজার ৫৪০টি ইলেকট্রনিক্স সামগ্রী, ১৫,১১২টি চশমা, ৬ হাজার ৫৪৩ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫ হাজার ৯৬০ কেজি ভোজ্য তেল, ১০১০ লিটার ডিজেল/অকটেন, ১ হাজার ৫২৬ কেজি পিঁয়াজ, ৮ হাজার ৮২৬ কেজি রসুন, ২০ হাজার ৬৪২ কেজি জিরা, ১১ হাজার ২৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৫০ হাজার ১৯১ কেজি ফুচকা, ৯ হাজার ১৭৯ কেজি মাছ, ৫০ হাজার ৬০৩ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ৯৩৪ কেজি কফি, ২ লাখ ২৫ হাজার ৩৪৩ পিস চকোলেট, ১ হাজার ১৩১টি গরু/মহিষ, ৪টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ১৩টি ট্রাক/কাভার্ডভ্যান, ১৫টি পিকআপ, ৪টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ৯২টি নৌকা, ২৬টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৭২টি মোটরসাইকেল এবং ২২টি বাইসাইকেল।

আরো পড়ুন:

ঘাস খেতে খেতে সীমান্তের ওপারে ১০ গরু, ফেরত দিল বিএসএফ

ঠাকুরগাঁও সীমান্ত দিয়ে আরো ২৩ জনেকে ঠেলে দিল বিএসএফ

উদ্ধার করা অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ৫টি বিদেশি পিস্তল, ২টি ৯মি.মি. পিস্তল, ২টি শট/পাইপ গান, ৫টি ম্যাগাজিন, ৪টি ককটেল, ২৪টি গুলি এবং ১টি হ্যান্ড গ্রেনেড।

এছাড়া গত মাসে বিজিবি বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করেছে। জব্দ করা মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৯৬৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ১০ কেজি ৯৩৫ গ্রাম হেরোইন, ২৩ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ আইস, ১ কেজি ৪১০ গ্রাম কোকেন, ১০ হাজার ৫২১ বোতল ফেনসিডিল, ৮ হাজার ৯৮৩ বোতল বিদেশি মদ, ৭১.২৫ লিটার বাংলা মদ, ৮১৩ বোতল ক্যান বিয়ার, ১ হাজার ৯১৩ কেজি ৬৩০ গ্রাম গাঁজা, ২ লাখ ২৯ হাজার ৬০২ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ৩০ হাজার ১১৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৫৪ ঞাজার ৩৪৭ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ৫ বোতল এলএসডি, ২০ হাজার ৪৯৩টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট, ৭৩৭টি এমকেডিল/কফিডিল এবং ৬ লাখ ৮৩ হাজার ৬০৪ পিস বিভিন্ন প্রকার ওষুধ ও ট্যাবলেট।

সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪৫ জন চোরাকারবারি এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ৭১৫ জন বাংলাদেশি নাগরিক ও ১০ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৯০ জন মিয়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

ঢাকা/এমআর/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ