দর্শকের সেই প্রত্যাশা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি: শাকিব
Published: 1st, February 2025 GMT
‘তুফান’ সিনেমার পর ফের অ্যাকশন অবতারে দেখা যাবে ঢাকাই ছবির জনপ্রিয় নায়ক শাকিব খানকে। তাঁর এবারের মিশনের নাম ‘বরবাদ’। সিনেমাটির প্রথম লটের শুটিংয়ে অংশ নিতে গত বছরের ২২ অক্টোবর মুম্বাইয়ে যান শাকিব খান। সেখানের একটি স্টুডিওতে ২৪ অক্টোবর থেকে শুটিংয়ে অংশ নেন নায়ক। টানা চলতে থাকে শুটিং। এরপর কলকাতায়ও শুটিং হয়ে ঢাকায় দুই দিনে শুটিং হয় বলে জানা গেছে।
নতুন খবর হচ্ছে, সিনেমাটির শুটিং এবার শেষ। যে শহরে সিনেমাটির ক্যামেরা ওপেন হয়, সেই মুম্বাইতেই বরবাদের ক্লোজ হওয়ার খবর এলো। মানে মুম্বাইতে শেষ হলো বরবাদের শুটিং। গত বুধবার শুটিং শেষ করে ঢাকায় ফিরেছেন শাকিব খান।
ঢাকায় ফিরে সিনেমাটি নিয়ে নায়ক বললেন, ‘শুরু থেকেই বরবাদ সিনেমাটির হাইপ অন্যরকম। সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের মাঝে যে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, আমরা সেটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। আমার বিশ্বাস, সিনেমা হলে গিয়ে দর্শকরা তৃপ্তি নিয়েই ফিরবে। বরবাদ বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এটা বিগ স্কেলের ছবি। সব মিলিয়ে ভালো কিছু পেতে যাচ্ছে দর্শক।’
সিনেমাটি অ্যাকশন ভায়োলেন্স রোমান্টিক ধাঁচের ছবি। নির্মাণে কোনো দিকেই কমতি রাখা হয়নি বলে নায়কের কথায় উঠে আসে। যদিও সিনেমাটির শুরু থেকেই শাকিব খান বরবাদের আকাশচুম্বি প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। সিনেমার শুটিং শেষ করে এসে সে প্রত্যাশার ভিত্তি আরও মজবুত হয়েছে বলে ইঙ্গিত দিলেন।
গেল ডিসেম্বরে শাকিবের ‘বরবাদ’-এর মোশন পোস্টারটি প্রকাশ করা হয়। রাজধানীর একটি পাঁচতারকা হোটেলে মোশন পোস্টার উন্মোচন করার সে আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন সিয়াম আহমেদ, পূজা চেরী, দীঘি, শবনম ফারিয়া, মিম মানতাশা এবং বিদ্যা সিনহা মিম।
সে সময় শাকিব খান বলেন, ‘বরবাদ ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে এক নতুন ইতিহাস রচনা করবে বলে আমি মনে করি। এ ছবিটি সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে, একটি গ্র্যান্ড সেটিংয়ে তৈরি করা হয়েছে, যাতে প্রত্যেক কলাকুশলী মুন্সিয়ানার ছাপ রেখেছেন। আমি প্রত্যাশা করছি বরবাদ শুধু দেশে নয়, দেশের বাইরে বাংলা ভাষায় কথা বলা সবার মন জয় করবে। আমার প্রত্যাশা, আয়ের দিক থেকে এটি শতকোটির ক্লাবে প্রবেশ করবে।’
‘বরবাদ’ সিনেমাতে শাকিব খানের বিপরীতে আছেন ভারতীয় নায়িকা ঈধিকা পাল। একটি আইটেম গানে দেখা যাবে আরেক ভারতীয় নায়িকা নুসরাত জাহানকে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন মেহেদী হাসান হৃদয়।
এদিকে ঢাকায় ফিরেই শাকিব খান আজ ছুটে যাচ্ছেন মিরপুরের ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। খুলনা টাইগারসের সঙ্গে বিপিএলে নিজের দল ঢাকা ক্যাপিটালের শেষ ম্যাচটা মাঠে বসেই উপভোগ করবেন তিনি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শুধু ঘোষণা নয়, বাস্তবে প্রতিফলিত হোক
রাজধানী শহরসহ দেশের বড় শহরগুলোয় শব্দদূষণের অসহনীয় মাত্রার বিষয়টি কারও অজানা নয়। এটি এখন শুধু শব্দদূষণ নয়, শব্দসন্ত্রাস বলেও অভিহিত হচ্ছে। অতীতে ও বর্তমানে সরকারগুলো বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও কার্যকর হচ্ছে না। অতীতের ধারাবাহিকতায় রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান, বনানী, বারিধারা ও নিকেতনকে ‘নীরব এলাকা’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সিদ্ধান্তটি নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। এখন এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করাই হচ্ছে বড় চ্যালেঞ্জ।
শহরের শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে নীরব এলাকা ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি অবশ্যই সরকারের সদিচ্ছার প্রকাশ। কিন্তু প্রশ্ন হলো, এই ঘোষণা বাস্তবে কার্যকর হবে, নাকি এটিও অতীতের মতো কেবল কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকবে? এর আগে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং এর আশপাশের এলাকাকে নীরব এলাকা ঘোষণা করা হয়েছিল, কিন্তু তার ফল তেমন একটা ভালো পাওয়া
যায়নি। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘোষণার পর কিছু এলাকায় শব্দ কিছুটা কমলেও সার্বিকভাবে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। এই অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায়, শুধু ঘোষণা যথেষ্ট নয়, বরং এর কঠোর বাস্তবায়ন অপরিহার্য।
শব্দদূষণের ক্ষেত্রে আগের তুলনায় সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলতেই হয়। যার কারণে সাউন্ডবক্স বা মাইক বাজানোর বিষয়গুলো তুলনামূলকভাবে কমে এসেছে। তবে গাড়ির হর্ন এতটা বিভীষিকাময় পরিস্থিতি তৈরি করছে, যা অকল্পনীয়। এটিই এখন রাজধানীসহ বড় শহরগুলোর শব্দদূষণের সবচেয়ে বড় আতঙ্ক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, অতিরিক্ত শব্দ হৃদ্রোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে। চিকিৎসকেরা বলছেন, এটিতে শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়, মেজাজ খিটখিটে হয়, মানুষ অনিদ্রায় ভোগে এবং শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটায়। তাই শুধু অভিজাত এলাকা নয়, পুরো শহরে ধাপে ধাপে কীভাবে নীরব এলাকা ঘোষণা করা যায়, সেই লক্ষ্যে পরিকল্পিতভাবে এগোতে হবে।
তবে এ উদ্যোগ সফল করতে হলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে কঠোর হতে হবে। হর্ন বাজানোর বিরুদ্ধে আইন আছে। তা যদি আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে প্রয়োগ না করা হয়, এ ঘোষণা কখনোই সফল হবে না। কেবল প্রশাসনের ওপর নির্ভর না করে নীরব এলাকা–ঘোষিত এলাকাগুলোর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যেমন মসজিদ, মন্দির এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকেও এখানে গণসচেতনতার কাজে যুক্ত করতে হবে।
গাড়ির হর্ন বাজানো সীমিত করতে পরিবহনের বিভিন্ন ধরনের সমিতি–সংগঠনগুলোর যুক্ততাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির চালকদের অভ্যাসগত পরিবর্তনের জন্য শব্দদূষণের ক্ষতিকর দিকটি নিয়মিতভাবে তাঁদের কাছে উপস্থাপন করতে হবে। হাইড্রোলিক হর্নসহ উচ্চমাত্রার যেকোনো হর্ন উৎপাদন, আমদানি ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রয়োগ করতে হবে। এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।