ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে পুলিশে দিয়েছে ছাত্রজনতা। চট্টগ্রাম নগরীর টাইগার পাস এলাকার একটি কনভেনশন হল থেকে তিনি ছাত্র-জনতার হাতে আটক হন। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

আটক আওয়ামী লীগ নেতার নাম ফখরুল আনোয়ার। তিনি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের নেতা এবং ফটিকছড়ির সাবেক সাংসদ রফিকুল আনোয়ার প্রকাশ সোনা রফিকের ছোট ভাই।

শনিবার (২ জানুয়ারি) রাত ১১টার দিকে তাকে আটক করা হয়। 

জানা যায়, নেভী কনভেনশন সেন্টারে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারের ছেলের সাথে সাবেক বিএনপি নেতা এবং চট্টগ্রামের সাবেক মেয়র মনজুর আলমের নাতনির বিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছিল। এ সময় বিয়ের অনুষ্ঠানে ফটিকছড়ির সাবেক এমপি নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি ও খাদিজাতুল আনোয়ার সনি উপস্থিত আছেন বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এই খবরের ভিত্তি বিক্ষুব্ধ ছাত্রজনতা কনভেনশন সেন্টার ঘিরে বিক্ষোভ করে। এক পর্যায়ে তারা কনভেনশন সেন্টারের ভেতরে প্রবেশ করে সাবেক দুই এমপিকে না পেয়ে বরের বাবা আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারকে আটক করে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। 

খুলশি থানার ওসি মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, “নগরের একটি কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারকে আটক করে থানায় আনা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। আমরা পরবর্তীতে আইননুসারে ব্যবস্থা নেব।”

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কনভ নশন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ