আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি: নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসীর বিচার শুরু
Published: 4th, February 2025 GMT
শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি করা বরখাস্তকৃত সেই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে মানহানির অভিযোগে করা মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ দেন।
এদিন তাপসী তাবাসসুম জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন। তার পক্ষে আইনজীবী পিএম মাহাদী হাসান অব্যাহতির বিষয়ে শুনানি করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবী খাদেমুল ইসলাম অভিযোগ গঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তার অব্যাহতির আবেদন নামঞ্জুর করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
এ সময় তাপসী তাবাসসুম উর্মি নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন।
গত ৮ অক্টোবর শহীদ আবু সাঈদসহ অন্য শহীদদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্যের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলার আবেদন করেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ। আদালত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড এবং পর্যালোচনা শেষে ২৮ নভেম্বর তাকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেন। ওইদিন আত্মসমর্পণ করে জামিন পান তাপসী তাবাসসুম।
মামলার আবেদনে বলা হয়, তাপসী তাবাসুম উর্মি গত ৫ অক্টোবর ফেইসবুকে একটি পোস্ট করেন, যেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শহীদ আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দেওয়া হয়।
ওই পোস্টের মাধ্যমে শহীদ আবু সাঈদসহ আন্দোলনের অন্যান্য শহীদদের ‘অপমান’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বাদী।
বাদী মনে করেন, সরকারের দায়িত্বশীল পদে থেকে তাপসী তাবাসসুম উর্মি আন্দোলনের একজন শহীদের বিরুদ্ধে ‘বিদ্বেষমূলক বক্তব্য’ দিয়ে তার ‘অবমাননা’ করেছেন; আর তাতে আন্দোলনের একজন কর্মী হিসেবে বাদী ‘ব্যথিত ও অপমানিত’ হয়েছেন।
তাপসী তাবাসুম উর্মি সরকারের দায়িত্বশীল পদে থাকার পরও ছাত্র-গণআন্দোলনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার ও সরকার প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধেও ‘অবমাননাকর বক্তব্য’ ফেইসবুকে লিখেছেন বলে আবেদনে অভিযোগ করা হয়।
সেখানে বলা হয়, সরকারপ্রধান সম্পর্কে ‘বিষোদ্গার’ এবং ‘সরকার উৎখাতের হুমকি’ দিয়ে জনমনে ‘ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে’ ওই ফেইসবুক পোস্টে।
লালমনিরহাটের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম উর্মি গত ৫ অক্টোবর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের এক বক্তব্যের প্রসঙ্গ ধরে ফেইসবুক পোস্টে বলেন, “কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গেছে আপনার, মহাশয়।”
তার ওই পোস্ট ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়লে পরদিন তাকে প্রত্যাহার করে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়।
এরপর ৭ অক্টোবর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানায়, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
ঢাকা/মামুন/ইভা
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে ৪ আসন বহালের দাবিতে হাইকোর্টে রিট
বাগেরহাটে চারটি সংসদীয় আসন বহাল রাখতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং একটি আসন কমিয়ে তিনটি আসন করার নির্বাচন কমিশনের গেজেট কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি বিশ্বজিৎ দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের আগামী ১০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মানিকগঞ্জে কৃষিজমির মাটি কাটার বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
ডাকসু নির্বাচন স্থগিত চেয়ে করা ছাত্রলীগ নেতার রিট বাতিল
বাগেরহাট প্রেস ক্লাব ও অন্যান্যদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন রিট পিটিশন দাখিল করেন। এছাড়া চিতলমারী উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও বাগেরহাট ১ আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্থী মুজিবর রহমান শামীমের পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ আক্তার রসুল একই বিষয়ে পৃথক রিট পিটিশন করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাগেরহাট জেলা বিএনপির নেতা ব্যারিস্টার শেখ মুহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, “আমরা রিট পিটিশন করেছি। আদালত আমাদের কথা শুনেছেন এবং ১০ দিনের রুল জারি করেছেন। আশা করি, আদালতে ন্যায়বিচার পাব এবং বাগেরহাটের চারটি আসন বহাল থাকবে।”
গত ৩০ জুলাই নির্বাচন কমিশন বাগেরহাটের চারটি আসনের মধ্যে একটি আসন কমিয়ে তিনটি করার প্রস্তাব দেয়। এরপর থেকে বাগেরহাটের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন আন্দোলন শুরু করে। চারটি আসন বহালের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতেও অংশ নেয় তারা।
তবে ৪ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশন শুধু সীমানা পরিবর্তন করে তিনটি আসন রেখে চূড়ান্ত গেজেট প্রকাশ করে।
চূড়ান্ত গেজেট অনুযায়ী বাগেরহাট-১ (সদর-চিতলমারী-মোল্লাহাট), বাগেরহাট-২ (ফকিরহাট-রামপাল-মোংলা) ও বাগেরহাট-৩ (কচুয়া-মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) নির্ধারণ করা হয়। অথচ দীর্ঘদিন ধরে বাগেরহাট-১ (চিতলমারী-মোল্লাহাট-ফকিরহাট), বাগেরহাট-২ (সদর-কচুয়া), বাগেরহাট-৩ (রামপাল-মোংলা) এবং বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
ঢাকা/শহিদুল/বকুল