গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলায় স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় রুবেল সরদার (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ীর পুরুষাঙ্গ কেটে দিলেন স্ত্রী। গত সোমবার গভীর রাতে উপজেলার কুশলা ইউনিয়নের বিরামেরকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

আহত রুবেল সরদার বিরামেরকান্দি গ্রামের মনজেল সরদারের ছেলে ও ঘাঘর বাজারের থাই অ্যালুমিনিয়াম ব্যবসায়ী।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, রুবেল সরদার ১২ বছর আগে বিরামেরকান্দি গ্রামের আমির আলী ফরাজীর মেয়ে রেশমা বেগমকে প্রেম করে বিয়ে করে। বিয়ের পর অন্য নারীর সঙ্গে রুবেল সরদারের পরকীয়ার সম্পর্ক থাকার অভিযোগ ওঠে। এতে রেশমা বেগমের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো।

তারা জানান, গত ৩ মাস আগে অন্য ধর্মের এক নারীকে বিবাহ করেন রুবেল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রেশমা বেগম সোমবার গভীর রাতে তার স্বামী ঘুমে থাকা অবস্থায় ব্লেড দিয়ে পুরুষাঙ্গ কেটে দেন। পরে রুবেল সরদারের চিৎকারে বাড়ির লোকজন এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা রুবেল সরদারকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে পাঠান। 

রুবেল সরদারের মা সাফিয়া বেগম জানান, আমার ছেলে রুবেল রাতে বাড়িতে আসার পরে খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। গভীর রাতে রুবেলের চিৎকার শুনে আমিসহ বাড়ির লোকজন আসলে রুবেলের স্ত্রী দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে রুবেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করি।

এ ব্যাপারে রুবেলের স্ত্রী রেশমা বেগমের সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে তার বোন ফতেমা বেগম বলেন, আমার বোনের ২টি সন্তান থাকা সত্ত্বেও গত ৩ মাস আগে রুবেল অন্য ধর্মের এক নারীকে বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে রেশমা এ ঘটনা ঘটাতে পারে। এ ঘটনার সঙ্গে আমরা কেউ জড়িত না।

কোটালীপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ প লগঞ জ র ব ল সরদ র ল সরদ র র এ ঘটন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ না হলে অবরোধের হুঁশিয়ারি আপ বাংলাদেশের

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির দাবিতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ইউনাইটেড পিপলস (আপ) বাংলাদেশ। আজ শুক্রবার রাজধানীর শাহবাগে গণজমায়েত থেকে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। দাবি পূরণ না হলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি।

‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও সনদের দাবি’ শীর্ষক গণজমায়েতে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আপ বাংলাদেশের নেতা–কর্মীরা। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পার হলেও জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি না হওয়াকে অন্তর্বর্তী সরকারের ব্যর্থতা হিসেবে দেখছেন তাঁরা।

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদ বলেন, ‘আমরা একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু আহতদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি। আমরা দেখেছি, যারা জুলাইয়ের নেতৃত্বে ছিল, জুলাইয়ের পরে তাদের পকেট ভারী হয়েছে। আমি বলতে চাই, আপনাদের এই পকেটের হিসাব দিতে হবে।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে আলী আহসান বলেন, ‘আপনারা জুলাই ঘোষণাপত্র দিতে পারবেন কি পারবেন না, তা জানান; না পারলে আমরা আছি। যারা জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলাম, বাংলাদেশের (সেই) ২০ কোটি জনগণ জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করবে।’

আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক বলেন, ‘৩৬ জুলাইয়ের মধ্যে যদি জুলাই ঘোষণাপত্র না হয়, তাহলে ৬ আগস্ট থেকে দেশজুড়ে অবরোধ শুরু হবে। এ সরকারের কোনো হুমকি আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।’

গণজমায়েতে অংশ নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বলেন, আপ বাংলাদেশের নেতারা এখনো কোনো প্রটোকল ছাড়া রাস্তাঘাটে হাঁটেন। কিন্তু তাঁরা যেদিন প্রটোকল নিতে শুরু করবেন, সেদিন থেকে তাঁদের বিরুদ্ধেও তিনি কথা বলা শুরু করবেন।

জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারির আহ্বান জানিয়ে শরীফ ওসমান বলেন, এখন পর্যন্ত বিদ্যমান আইনি কাঠামোয় জুলাই শহীদেরা রাষ্ট্রদ্রোহী। তাঁদেরকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। আজকের মধ্যে সরকার দিনক্ষণ না জানালে আগামী ৩ তারিখ (আগস্ট) ইনকিলাব মঞ্চের উদ্যোগে কফিন মিছিল নিয়ে সচিবালয় অবরোধ করা হবে।

বিগত এক বছর থেকে একটি দুর্বল সরকার দেশ চালাচ্ছে উল্লেখ করে আপ বাংলাদেশের সদস্যসচিব আরেফিন মোহাম্মদ বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তিতে ঘোষণাপত্রের জন্য আমাদের আবারও গণজমায়েত করতে হচ্ছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কী হতে পারে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এ বি জুবায়ের বলেন, ‘আমরা যে মৌলিক সংস্কার চেয়েছিলাম, এখনো তার কিছুই হয়নি। এখনো শহীদ পরিবারের পুনর্বাসন ও আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত হয়নি। আমি উপদেষ্টাদের উদ্দেশে বলতে চাই, অবিলম্বে জুলাই সনদ ঘোষণা করুন। আপনাদের কাছে আমাদের চাওয়া–পাওয়া খুব বেশি নেই।’

গণজমায়েতে র‌্যাপ গান পরিবেশন করেন আপ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সদস্য আহনাফ তাহমিদ। স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ ওসমান পাটোয়ারীর বাবা আবদুর রহমান। গণজমায়েতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন আপ বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়কারী রাফে সালমান রিফাত, প্রধান সংগঠক নাঈম আহমেদ, মুখপাত্র শাহরিন সুলতানা প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ