রূপগঞ্জে ধাওয়া খেয়ে ৫টি মোটরসাইকেল ও অস্ত্র ফেলে পালালো ডাকাতদল
Published: 5th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও ৫টি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে গেছে ডাকাতদল। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) গভীর রাতে উপজেলার গোলাকান্দাইল পূর্বপাড়া এলাকায়।
গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ওমর হোসেন জানান, কয়েক মাস ধরে রূপগঞ্জের গোলাকান্দাইল এলাকায় মাদক কেনাবেচা থেকে শুরু করে ডাকাতি ও ছিনতাই ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পায়। সন্ধ্যা হলেই এলাকায় মাদক কারবারী ও আসক্তদের আনাগোনা বেড়ে যায়। রাত গভীর হলেই এলাকায় ডাকাত আতংক দেখা দেয়। প্রায় রাতেই সড়কে ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিয়েও অপরাধ প্রবণতা রোধ করতে পারছে না।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে একদল ডাকাত ৫টি মোটরসাইকেল যোগে এসে গোলাকান্দাইল পূর্বপাড়া এলাকায় অবস্থান নেয়। এ সময় ডাকাত সদস্যরা দেশীয় অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাসাবাড়িতে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল।
এলাকাবাসী টের পেয়ে স্থাণীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ঘেরাও করে ফেললে ডাকাত সদস্যরা ছোরা, রামদা, লোহার রড, তালা কাটার ও ৫টি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) মিজানুর রহমান জানান, বেশ কিছু দিন ধরে একটি চক্র এলাকায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। একাধিকবার হানা দিয়ে পুলিশ ওই চক্রটিকে ধরতে পারছে না।
খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে ডাকাতদের ফেলে যাওয়া দেশীয় কিছু অস্ত্র ও ৫টি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।
নারায়ণগঞ্জ টাইমস সর্বশেষ জনপ্রিয় ১আরো পড়ুন
সিদ্ধিরগঞ্জে স্বামীর গোপনাঙ্গ কর্তন করল স্ত্রী
সিদ্ধিরগঞ্জে সোনারগাঁয়ের আওয়ামীলীগ নেতা ইব্রাহিম গ্রেপ্তার
অবৈধ অর্থ-বিত্ত রক্ষায় বিএনপিতে ঢুকার মিশনে সেই মোটা কবির
মামুন মাহমুদ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হওয়ায় ২নং ওয়ার্ডে আনন্দ মিছিল
সোনারগাঁয়ে মেঘনায় কারা চাঁদাবাজি করে আমরা জানি : ইমতিয়াজ বকুল
রূপগঞ্জে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসের উদ্যোগে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ
মামুন মাহমুদকে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ঘোষণায় ১নং ওয়ার্ডে আনন্দ মিছিল
খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও ৩১ দফা বাস্তবায়নে সভা
২৩১/১ বঙ্গবন্ধু সড়ক (৬ষ্ঠ তলা, লিফটের ৫)
নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ভবন, নারায়ণগঞ্জ
নির্বাহী সম্পাদক: মোশতাক আহমেদ (শাওন)
ফোন:+৮৮০১৯৩৩-৩৭৭৭২৪
ইমেইল : [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া অন্য কোথাও প্রকাশ বা ব্যবহার করা সম্পূর্ণ বেআইনি।
© ২০২৫ | সকল স্বত্ব নারায়ণগঞ্জ টাইমস কর্তৃক সংরক্ষিত | উন্নয়নে ইমিথমেকারস.
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: আনন দ ম ছ ল স দ ধ রগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র পগঞ জ এল ক য় বদল র
এছাড়াও পড়ুন:
কারখানার বর্জ্যে মরছে নদ
ডাইং কারখানার বর্জ্যে মরছে ব্রহ্মপুত্র নদ। প্রকাশ্যে এ দূষণ ঘটলেও দেখার কেউ নেই। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ ভুক্তভোগীদের। পরিবেশ কর্মকর্তা চাইছেন সুনির্দিষ্ট প্রমাণসহ অভিযোগ।
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার ও নরসিংদী সদর উপজেলায় অন্তত ৬০টি ডাইং কারখানা ব্রহ্মপুত্র দূষণের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। নদের তীরে অবস্থিত এসব কারখানায় এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (ইটিপি) থাকলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই প্রতিদিন নদে ফেলছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এ নদের সঙ্গে সম্পর্কিত মানুষজন।
অভিযোগ রয়েছে, নদের তীরে অবস্থিত কারখানাগুলো ইটিপি রাখলেও তারা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ফেলছে। অনেক কারখানায় ইটিপি থাকলেও খরচ কমাতে বেশির ভাগ সময় তা বন্ধ রাখা হয়। এ ছাড়া বেশকিছু কারখানার ইটিপি প্রয়োজনের তুলনায় ছোট হওয়ায় সঠিকভাবে বর্জ্য পরিশোধন করা সম্ভব হয় না।
পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, নরসিংদী সদর উপজেলায় রয়েছে ছোট-বড় ৫০টি ডাইং কারখানা। আড়াইহাজারে স্পিনিং মিলসহ ডাইং কারখানা রয়েছে অন্তত ১০টি। নরসিংদীর ডাইং কারখানাগুলোর মধ্যে পাঁচদোনা এলাকার আবদুল্লাহ ডাইং ইন্ডাস্ট্রিজ, বাঘহাটা এলাকার ফাইভ অ্যান্ড ফাইভ ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং, সাজেদা ডাইং, আনোয়ার ডাইং, শতরূপা ডাইং, রুকু ডাইং, মেসার্স একতা ডাইং, কুড়েরপাড় এলাকার ব্রাদার্স টেক্সটাইল, ইভা ডাইং, ভগীরথপুর এলাকার এম এমকে ডাইং, নীলা ডাইং, এইচ এম ডাইং, মা সখিনা টেক্সটাইল, মুক্তাদিন ডাইং, পাঁচদোনা এলাকার তানিয়া ডাইং, সান ফ্লাওয়ার টেক্সটাইল প্রভৃতি।
আড়াইহাজারের কয়েকটি কারখানা হলো– ভাই ভাই স্পিনিং মিলস, ছাবেদ আলী স্পিনিং মিল, রফিকুল ডাইং, দিপু ডাইং ও হাজী হাবিবুর ডাইং।
আড়াইহাজার পৌরসভার চামুরকান্দি এলাকার বাসিন্দা মিয়াজউদ্দিন মিয়া বলেন, দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে নদটি। দেশীয় জাতের মাছের অভয়াশ্রম এ নদ থেকে মাছ হারিয়ে গেছে।
আড়াইহাজারের বালিয়াপাড়া এলাকার ইসমাইল হোসেন জানান, রফিকুল ডাইংয়ের বর্জ্য সরাসরি নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পানির রং কালচে হয়ে গেছে। একই অবস্থা অন্য কারখানাগুলোর। বর্জ্য নদে ফেলার বিষয়ে স্থানীয়রা কথা বলতে গিয়ে উল্টো কারখানা কর্তৃপক্ষের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ব্যাপারে প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রফিকুল ডাইংয়ের মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, তাদের ইটিপি নেই। ডাইংয়ের পানি তারা নির্দিষ্ট পানির ট্যাংকে রাখেন, সরাসরি নদে ফেলেন না। ট্যাংকে জমানো পানি কোথায় ফেলেন জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী সদর উপজেলার শিলমান্দী ইউনিয়নের গনেরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মাহবুব হাসান শুভর ভাষ্য, কুড়েরপাড় এলাকার ডাইং কারখানাগুলোর রং মেশানো বর্জ্য পরিশোধন না করে ব্রহ্মপুত্রে ফেলায় নদটি এখন মৃতপ্রায়। দূষণের কারণে দুর্গন্ধে এর পারে দাঁড়ানো যায় না। স্থানীয়রা অনেকবার প্রতিবাদ করেও প্রতিকার পাননি বলে জানান তিনি।
গত ১৫ এপ্রিল শিলমান্দী ইউনিয়নের কুড়েরপাড় এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ইভা ডাইং অ্যান্ড প্রিন্টিং লিমিটেড নামে একটি কারখানা থেকে বর্জ্য এসে পড়ছে নদের পানিতে। ভিডিও করতে দেখে কারখানা কর্তৃপক্ষ বর্জ্য ফেলা বন্ধ করে দেয়।
ইভা ডাইংয়ের ইটিপি ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, বিভিন্ন মহলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে তারা প্রতিষ্ঠানটি চালাচ্ছেন। অনেক কারখানা সরাসরি নদে বর্জ্য ফেললেও তারা নদ দূষণ করেন না।
একই এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ফাতেমা ডাইংসহ ব্রহ্মপুত্রের তীরে গড়ে ওঠা কারখানাগুলো থেকেও নদে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে এসব কারখানার কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
নরসিংদী পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসহকারী পরিচালক কামরুজ্জামান জানান, নদে বর্জ্য ফেলার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক তারেক বাবু জানান, ব্রহ্মপুত্রে নদে সরাসরি বর্জ্য ফেলছে ডাইংসহ যেসব কারখানা সেসবের অধিকাংশই নরসিংদী জেলার অন্তর্গত। তাই নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদী প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে নদ দূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
আড়াইহাজারের ইউএনও সাজ্জাত হোসেন বলেন, কখনও কখনও কিছু কারখানা বর্জ্য পরিশোধন না করেই নদে ছেড়ে দেয়। কোন কারখানা নদ দূষণ করছে, স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশবাদী সংগঠন তা জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।