ভোগবিলাসে ব্যস্ত উপদেষ্টাদের পদত্যাগ করা দরকার: আসাদুজ্জামান রিপন
Published: 5th, February 2025 GMT
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘কিছু কিছু উপদেষ্টা কোটি কোটি টাকা দামের গাড়ি ব্যবহার করছেন, একাধিক গাড়ি ব্যবহার করছেন। এটা অন্তর্বর্তী সরকারের সদস্যদের কাছে প্রত্যাশিত নয়। অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা যদি এভাবে ভোগবিলাসে লিপ্ত হয়ে পড়েন, সংস্কারের যে এজেন্ডা, সংস্কারের যে লক্ষ্য, সেখান থেকে আমরা পিছিয়ে পড়ব। যেসব উপদেষ্টা এভাবে ভোগবিলাসে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন, ওই উপদেষ্টাদের অন্তর্বর্তী সরকার থেকে পদত্যাগ করা দরকার।’
আজ বুধবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাচগাঁও বাজারসংলগ্ন বালুর মাঠে শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন আসাদুজ্জামান রিপন।
আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘অন্তর্বর্তী যে সরকার বর্তমানে ক্ষমতায় আছে, সে সরকারকে আমরা সবাই সমর্থন দিয়েছিলাম। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, আমরা দেখতে পারছি যে স্বৈরশাসকেরা যেভাবে ভোগবিলাসে ব্যস্ত ছিল, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কিছু উপদেষ্টা সেই বিগত স্বৈরশাসকের মতো ভোগবিলাসে লিপ্ত হয়েছেন।’
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, দ্রুত সংস্কার শেষ করতে হবে। সংস্কার শেষে এই সরকারকে একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিতে হবে। দেশের মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। একটি নির্বাচিত সরকারের কাছে দেশের ক্ষমতা তুলে দিতে হবে। তা না হলে দেশ গভীর সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জহিরুল ইসলাম ব্যাপারীর সঞ্চালনায় এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলী আজগর রিপন মল্লিক, সহসভাপতি আক্তার হোসেন, উপদেষ্টা আলী আহমদ শেখ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়ার হোসেন মোল্লা প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র র উপদ ষ ট ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার: গোলাম পরওয়ার
স্বাধীনতার পর যারাই দেশ চালিয়েছে, তারা সবাই হিন্দুদের ব্যবহার করে শুধু নিজেদের ভাগ্যোন্নয়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, হিন্দুদের ভাগ্যোন্নয়ন ও অবকাঠামো উন্নয়নে প্রয়োজন ইসলামি সরকার।
আজ শুক্রবার খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাধীনতা চত্বরে উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর হিন্দু কমিটির উদ্যোগে হিন্দু সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। তিনি বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাগ্যোন্নয়ন ও ডুমুরিয়া-ফুলতলাসহ দেশের সার্বিক অবকাঠামো উন্নয়নে এখন প্রয়োজন ইসলামি সরকার। যাঁরা দাঁড়িপাল্লার জোয়ার দেখে ভয়-হুমকি দিচ্ছে, তাদের হুমকিতে হিন্দুরা আর ভয় পাবে না। হিন্দুদের বাধা দিলে জনগণ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ৫৪ বছর যারা দেশ চালিয়েছে তারা সন্ত্রাস, দখলদারি ও চাঁদাবাজির মাধ্যমে হিন্দুদের শোষণ করেছে। জামায়াত রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে দেশ থেকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও দখলদারদের নির্মূল করা হবে। তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ পরিবর্তন চায়, আমরা সেই পরিবর্তন আনতে চাই। লাঙলের শাসন দেখেছি, ধানের শীষের শাসন দেখেছি, নৌকার শাসনও দেখেছি। একটি দলই বাকি—জামায়াতে ইসলামী, তার প্রতীক দাঁড়িপাল্লা।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়ের বিষয়টি তুলে ধরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিবর্তনের বার্তা দিয়েছে, আগামীতেও সেই বার্তা জনগণ দেবে।’
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে দেড় হাজার শহীদ ও ৪০ হাজার আহতের কথা উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট দিয়েই ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
উপজেলা হিন্দু কমিটির সভাপতি বাবু কৃষ্ণ নন্দীর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি দেব প্রসাদ মন্ডলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সহসভাপতি আবুল খায়ের, শোভনা ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি মো. মোসলেম উদ্দিন, শরাফপুর সর্বজনীন পূজা মন্দিরের গোঁসাই সাধু প্রমথ গাইন, ডুমুরিয়া উপজেলা হিন্দু কমিটির সহসভাপতি হরিদাস মন্ডল, কানাই লাল কর্মকার ও প্রশান্ত কুমার মন্ডল, কোষাধ্যক্ষ গৌতম কুমার মন্ডল, পল্লীশ্রী মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সুভাষ সরদার, মাগুরখালী ইউনিয়ন সহসভাপতি সুজিৎ কুমার সরকার, ধামালিয়া ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুন্ডু, রুদাঘয়া ইউনিয়ন সভাপতি বিপ্লব সরকার, রঘুনাথপুর ইউনিয়ন সভাপতি কার্তিক চন্দ্র সরকার, খর্ণিয়া ইউনিয়ন সভাপতি নারায়ণ রাহা, মাগুরঘোনা ইউনিয়ন সভাপতি বিশ্বনাথ দাস, সাহস ইউনিয়ন সভাপতি তন্ময় মন্ডল, ভান্ডারপাড়া ইউনিয়ন সভাপতি নিরঞ্জন রায়, রংপুর ইউনিয়ন সভাপতি তরুন কুমার মন্ডল, শোভনা ইউনিয়ন হিন্দু কমিটির মহিলা সম্পাদক প্রিয়ংকা মন্ডল, মাগুরখালী ইউনিয়ন সভাপতি প্রদীপ কুমার সরকার, আটলিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অনিমেষ মন্ডল, গুটুদিয়া ইউনিয়ন সভাপতি মনোরঞ্জন মন্ডল, শরাফপুর ইউনিয়ন সভাপতি গোবিন্দ কুমার বিশ্বাস, শোভনা ইউনিয়ন সভাপতি স্বদেশ হালদার, ডুমুরিয়া ইউনিয়ন সভাপতি অরুন কুমার আচার্য প্রমুখ।
হিন্দু সম্মেলন ঘিরে ডুমুরিয়ার ১৪টি ইউনিয়ন থেকে বর্ণিল মিছিল এসে জমায়েত হয়। সমাবেশ শেষে একটি গণমিছিল ডুমুরিয়া সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
হিন্দু সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে কৃষ্ণ নন্দী বলেন, নতুন প্রজন্মের প্রথম ভোট দাঁড়িপাল্লার পক্ষে হোক। আগামী নির্বাচনে দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ারকে সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত করতে সবার প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
মতুয়া সংঘের সভাপতি সুদীপ্ত কুমার সুন্দর মন্ডল বলেন, ‘আমরা আর সংখ্যালঘু বলে পরিচয় শুনতে চাই না। আমরা সবাই বাংলাদেশি। স্বাধীনতার পর কোনো সরকার হিন্দুদের দাবিতে কাজ করেনি। এবার প্রমাণ হবে, হিন্দু মানেই একটি নির্দিষ্ট দল নয়।’