ব্যবসায় প্রশাসনে পড়া ছেলেটির গোলে রিয়াল সেমিফাইনালে
Published: 6th, February 2025 GMT
লুকা মদরিচ ও এনদ্রিকের গোলে ২৫ মিনিটের মধ্যে ২-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল রিয়াল মাদ্রিদ। লেগানেস ম্যাচে ফিরেছে বিরতির পর। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হুয়ান ক্রুজ ৩৯ মিনিটে প্রথম গোলের পর ৫৯ মিনিটে তাঁর কাছ থেকেই দ্বিতীয় গোল পেয়েছে লেগানেস।
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে যোগ করা সময়ের শুরুতে স্কোরলাইন ২-২ ছিল। রিয়ালও হন্যে হয়ে গোল খুঁজছিল। ঠিক তখনই—যোগ করা সময়ের ৩ মিনিটে—মাদ্রিদের ভিলানুয়েভা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসায় প্রশাসন ও ব্যবসায় বিশ্লেষণের ওপর ডিগ্রির খোঁজে থাকা ছেলেটি রিয়ালকে সেটাই এনে দেন যেটা তারা খুঁজছিল। গোল!
আরও পড়ুনচোটের ছোবলে ‘জরুরি অবস্থা’ রিয়ালে২২ ঘণ্টা আগেব্রাহিম দিয়াজের ক্রস থেকে হেডে গোল করে লেগানেসের মাঠে ২০ বছর বয়সী গঞ্জালো গার্সিয়ার উদ্যাপন দেখে কে! স্বপ্নপূরণের আনন্দে একবার রিয়ালের ব্যাজেও চুমু খেলেন। ২০১৪ সালে রিয়ালের বয়সভিত্তিক দলে যোগ দেওয়া গার্সিয়া মাঝে মায়োর্কার বয়সভিত্তিক প্রকল্পে চার বছর ছিলেন। ২০১৯ সালে আবারও রিয়ালের ‘লা ফাব্রিকা’য় ফিরে এ মৌসুমে স্প্যানিশ ফুটবলের তৃতীয় স্তরে সর্বোচ্চ গোল করেছেন (১৯)।
গত সপ্তাহে এক ম্যাচে ৪ গোল করা গার্সিয়া রিয়ালের হয়ে এর আগে দুই ম্যাচ খেললেও তাঁর সেরাটা বের করে নেওয়ার এটাই যে মোক্ষম সময় সেটা বুঝেছিলেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি। লেগানেসের বিপক্ষে তাই গার্সিয়ার মাঠে নামা এবং শেষ পর্যন্ত ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি এল তাঁর কাছ থেকেই। কাল রাতে গার্সিয়ার গোলেই ৩-২ ব্যবধানের জয়ে কোপা দেল রের সেমিফাইনালে উঠেছে রিয়াল।
ম্যাচ শেষে গার্সিয়া বলেছেন, ‘অভিষেকের চেয়েও এই দিনটি বিশেষ কিছু। ছোটবেলা থেকে এই স্বপ্ন দেখে আসছি, (রিয়ালের হয়ে) গোল করব, আর সেটাও এত গুরুত্বপূর্ণ। নিজেকে সুখীর চেয়ে বেশি কিছু মনে হচ্ছে।’
গত বছরের ২২ অক্টোবর থেকে স্প্যানিশ ফুটবলে নির্দিষ্ট এক ক্লাবে একটি ধারা শুরু হয়েছিল। সেদিন বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে লুকাস ভাসকেজের গোলে ধারাটির শুরু—স্পেনের নাগরিক না, এমন খেলোয়াড়েরা রিয়ালের হয়ে টানা গোল করছিলেন। সেটি এত দিনে টানা ৬৩ গোলে উন্নীত হওয়ার পর থামল মাদ্রিদে জন্ম নেওয়া গার্সিয়ার গোলে।
আরও পড়ুনগার্দিওলার বিচ্ছেদই সিটির বাজে অবস্থার বড় কারণ, মনে করেন অঁরি১৯ ঘণ্টা আগেনিয়মিত খেলোয়াড়েরা চোট পাওয়ায় তরুণদের ওপর ভরসা রাখতে হয়েছিল আনচেলত্তিকে। কিলিয়ান এমবাপ্পে ও জুড বেলিংহাম খেলতে পারেননি। ডেভিড আলাবা, অ্যান্টনি রুডিগার এবং এদের মিলিতাওকেও চোটের কারণে পাননি আনচেলত্তি। রাউল আসেনসিও, জ্যাকোবো র্যামন, আরদা গুলের, এনদ্রিকদের মতো তরুণদের তাই মাঠে নামান রিয়ালের এ কোচ।
জয়ের পর সংবাদ সম্মেলনে আনচেলত্তি বলেছেন, ‘গঞ্জালো বয়সভিত্তিক দলে ফর্মে আছে। এই তরুণেরা যা করেছে, সেটা নিয়ে আমাদের সুখী থাকতে হবে। তারা ভুল করতে পারে। কিন্তু দলকে সাহায্য করেছে। তাদের আমাদের দরকার।’
ম্যাচ ২-২ গোলে সমতায় থাকতে রিয়ালের সমর্থকেরা একটি অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্যও দেখেছেন। রক্ষণ সামলাতে ভিনিসিয়ুস নিচে না নামায় তাঁকে বকে দেন মিডফিল্ডার লুকা মদরিচ। তখন মদরিচের সঙ্গে বাদানুবাদও হয় ভিনির।
ফেদেরিকো ভালভের্দে এগিয়ে এসে মদরিচের পক্ষ নিয়ে ভিনিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। এ নিয়ে মদরিচ ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘ভিনির ওপর আমি রাগ করব কীভাবে? এটা ফুটবল.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভূমিকা তদন্তে কমিটি গঠন করার নির্দেশ
বিতর্কিত তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনে জড়িত নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও সচিবালয়ের সচিবদের ভূমিকা তদন্তে অবিলম্বে কমিটি গঠনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এক বৈঠকে এ-সংক্রান্ত আলোচনা শেষে এমন নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ।
এই বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান, সফররাজ হোসেন ও মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বৈঠকে নির্বাচন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সব রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে যে অতীতের তিনটি বিতর্কিত নির্বাচন আয়োজনে কর্মকর্তাদের ভূমিকা তদন্ত করা এবং তাঁদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন।
জুলাইয়ের মধ্যে জুলাই সনদবৈঠকে কমিশন সদস্যরা জুলাই সনদ তৈরির কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করেন। কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। শিগগিরই সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সনদ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘সবাই জুলাই সনদের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামী জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এটি জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পারব।’
‘প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে’বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা তাঁর লন্ডন সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশি কমিউনিটির যাঁদের সঙ্গেই দেখা হয়েছে, তাঁরা সংস্কার নিয়ে জানতে চেয়েছেন। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা খুব আগ্রহী। তাঁরা বিস্তারিতভাবে ঐকমত্য কমিশনের কাজ নিয়ে তাঁর (প্রধান উপদেষ্টা) সঙ্গে আলোচনা করেছেন, মতামত দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘যেখানেই গিয়েছি, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশিরা আমাকে জিজ্ঞেস করছেন, “আমরা আগামী নির্বাচনে ভোট দিতে পারব তো?” আমাদের প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করতে হবে। পোস্টাল ব্যালট এবং আর কী কী অপশন আছে, সেগুলো নিয়ে ভাবতে হবে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে হবে।’